মায়া, আসলেই এক দুর্ভেদ্য জাল। মানুষ একটু একটু করে মায়ার ফাঁদে আটকে যায়— কোনো কথার মায়ায়, কারও চোখের গভীরে, কারও কণ্ঠের সুরে। যার কথায় মায়া লাগবে, তার প্রতিটি শব্দ যেন কবিতার মতো মনে হবে; যার কণ্ঠের মায়ায় পড়বেন, তার কথাগুলো গানে পরিণত হবে। আর যার চোখের মায়ায় হারাবেন, তার এক দৃষ্টিতে আপনি অচেনা সাগরে ডুবে যাবেন।
মায়ায় হুট করে পড়া যায় না, মায়া ধীরে ধীরে গড়ে ওঠে। ধীরে তৈরি হওয়া যে কোনো কিছুই মজবুত হয়— যেমন, সিমেন্ট জমে পাথর হয় কিংবা নদী ধীরে ধীরে সাগরে মিলে যায়। মায়াও ঠিক তেমনি ধীরে ধীরে শক্ত হয়, শেকড় গাঁড়ায়। আর যখন সেটা একবার শক্ত হয়ে যায়, তখন সেটা উপড়ে ফেলা সহজ হয় না। মানুষ চাইলে নিজের অনেক কিছু ত্যাগ করতে পারে, কিন্তু মায়া? সেটা ছাড়তে পারেনা।
প্রেম থেকে বের হয়ে আসা হয়তো সহজ, কিন্তু মায়া থেকে মুক্তি পেতে মানুষ অনেক কষ্ট করে। সেটা তো এমন এক জিনিস, যা থেকে বেরোতে চাইলেও আপনার হৃদয় আটকে থাকে।
এজন্যই, আমরা চলে যাবার পথ খোলা রেখেও যেতে পারি না, ছেড়ে আসার সুযোগ পেয়েও চলে আসতে পারি না। মায়ার এই দুর্ভেদ্য বন্ধন আমাদের আটকে রাখে, যন্ত্রণায় দগ্ধ করেও। কারণ, মায়াটা যায় না।
— আহমেদ আলম