চলে গেলো আর একটি অবুঝ বিকেল,
স্মৃতির বুকে রেখেই রাখল রঙহীন রেল।
লিখতে পারিনি সর্বনামে কার কথা,
ভেঙে গেছে কলম, জমেছে শুধুই ব্যথা।
মুছতে পারিনি চোখের অশ্রুবিন্দু,
প্রশ্ন থেকে যায়—এই কান্না কি চিরদিন দূরবিন্দু?
হৃদয়ের বৃষ্টি ঝরে রাতজাগা আকাশে,
তবুও ব্যথা ভেসে না কোনো চেনা ভাষায় প্রকাশে।
পাঁচমুড়া পাহাড়ের কোলে আজও কি টানা হয় দই?
না-কি সেখানেও থমকে আছে ছিন্ন আশা কই?
অমলেরা আজও কি বন্দী কোনো ঘরে?
অদৃশ্য দেয়াল লিখে দেয় নিষেধের ডোরে?
হ্যামিলন শহরে কি আসে না আর সেই বাঁশিওয়ালা?
যে একদিন নিঃশব্দে নিয়ে গিয়েছিল ভরা শিশুদের পালা?
জানতে পারিনি—জানি না আজও,
শুধু বুঝেছি: শোক বাড়ে, যত দূর চলে যাও রাজপথ বাজে।
ছোট্ট পৃথিবীটা হঠাৎ এত ভারী কেন?
ভালোবাসার বদলে আসে রক্তাক্ত বিষময় হেনো।
মারণাস্ত্র মুখোমুখি, পেছনে শুধু ছায়া,
তুমি খেলছো যুদ্ধ, তাতে মরছে শুধুই মায়া।
কী এমন অপরাধ, কী এমন অভিশাপ?
মানুষ কি ভুলেই গেছে করুণা, ক্ষমা, আপনাপ?
তুমি কি ভাবো এইসবের বিচার হবে না?
শুধু শূন্যতা—চিরকালের মতো কাঁদবে বর্ণহীন স্বপ্নপথনা?
আমরা কি চিরকালই থাকবো এই দিকচিহ্নহীন,
যেখানে সকাল মানেই শোক, রাত মানেই বিনীন?
প্রতিবার রক্ত ঝরে নিরবতার বুকে,
আর কেউ কিছু বলে না—থামে কেবল ধুকে ধুকে।
কিন্তু মনে রেখো—সময় চুপচাপ থাকে না,
সে একদিন উত্তরে রূপ নেয়, আগুন ছড়ায় ঘনায়।
যেদিন প্রতিশ্রুত ক্ষণ এসে দাঁড়াবে দ্বারে,
সেদিন জ্বলে উঠবে বুকে, অন্তরে, প্রহরে প্রহরে।
তার আগ পর্যন্ত—একটিও বৃথা শব্দ নয়,
না কোনো চিৎকার, না বিষাদপ্রয়,
কারণ কিছু যুদ্ধ হয় নিঃশব্দ উচ্চারণে,
সেইখানেই জন্ম নেয় সত্য ইতিহাসের বর্ণে।