Posts

চিন্তা

ভুতের গল্প

August 3, 2025

Abdullah Moin

51
View

নাটোর জেলার বাগাতিপাড়ার লোকেরা আজও একটি নাম শুনলে চুপসে যায়—মরণতালতলা। শুনলে হাসি পেতে পারে, কিন্তু এই নামের পেছনে লুকিয়ে আছে এক ভয়ানক ইতিহাস। গ্রামের প্রাচীন পশ্চিম দিকের মাঠের এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে একটি বিরাট তালগাছ—বয়স আনুমানিক ১০০ বছর ছাড়িয়ে গেছে। তার নিচে এখনো কেও সন্ধ্যার পর যেতে সাহস করে না।গ্রামের গল্প বলে, বছর দশেক আগে ওই গাছটার নিচে এক মহিলা আত্মহত্যা করেছিলো। নাম ছিল হালিমা। স্বামী পরিত্যক্তা, সমাজ থেকে একঘরে হওয়া এক অসহায় নারী—যাকে মানুষ কুসংস্কার আর ঘৃণার দৃষ্টিতে দেখে শেষে গলা কেটে আত্মহত্যা করে। তখন থেকেই শুরু হয় এই ভয়ংকর কাহিনী।

🌒 রাতের শুরু

গল্পের মূল চরিত্র রুহুল — গ্রামের সাহসী ছেলে, শহরে পড়াশোনা করে, তবে মাঝেমধ্যে গ্রামে ফিরে আসে। এক সন্ধ্যায় তার বন্ধু কাসেম এসে বলে, “রুহুল ভাই, চলেন আজ রাতে বড় পুকুরে মাছ ধরতে যাই। নাকি সাহস নাই?”

কাশেম বলল ভয়টা একটু লাগবে ভাই কিন্তু আপনি থাকলে  একটু ভরসা পাই।”” সেদিন রাত ১২ টা তারা দুজন টর্চ আর একটা বড় জাল নিয়ে রওনা দিল 

🌫️ তালগাছের নিচে

রুহুল হেসে বলে, “তালতলার পাশ দিয়ে যেতে হবে, ভয় পাওয়ার কিছু নাই তো?”

।”গাছের নিচে এসে কাসেম হঠাৎ থেমে গেল। “ভাই, আপনি শুনলেন? কেউ যেন কান্নার মত শব্দ করলো।”রুহুল বলল, “কুয়াশা আর বাতাসের শব্দ, ভয় পাবি না।”

হঠাৎ একটা ঠাণ্ডা বাতাস এসে তাদের গায়ে লাগল। তারা দেখলো, সামনে গাছের পাশে দাঁড়িয়ে আছে একটা ছায়ামূর্তি। সাদা কাপড় পরে, চুল একদম এলোমেলো, মুখটা ঝুলে আছে নিচের দিকে। তার পা দেখা যাচ্ছে না

!ছায়ামূর্তিটা ধীরে ধীরে তাদের দিকে এগোতে থাকলো কেউ একটা শব্দ করল না—শুধু চোখ, আর শরীর জেমে গেল।

🏃 পালানো

 তারপর হঠাৎ কাসেম এক চিৎকার দিয়ে দৌড় দিল। রুহুলও তার পেছনে। তারা সোজা গিয়ে পড়ে গ্রাম্য হুজুরের দরজায়।হুজুর বললেন, “আমি আগেই বলেছিলাম ওদিক দিয়ে যাবি না। ওই গাছের নিচে কিছু আছে। একসময় এক মেয়ে এই গাছেই আত্মহত্যা করেছিল। তার আত্মা নাকি এখনো ঘোরে…”_____

📅 পরদিন

পরদিন সকালে রুহুল আর কাসেম আবার সাহস করে গিয়ে দেখে, গাছের নিচে একটা পুরনো বাঁশের ঝুড়ি। তার পাশে শুকনো লাল কিছু দাগ… যেন রক্ত। কাসেম কিছু বলার আগেই পড়ে যায়।তিনদিন জ্বরের ঘোরে ছিল। মাঝরাতে বলে উঠে, “ও বলছে আমি না গেলে আমাকে নিয়ে যাবে… নিয়ে যাবে…”তার কন্ঠটা কেমন যেন অন্য কারও মতো হয়ে যায়।

🧿 ঝাড়ফুঁক ও রহস্য

গ্রামের হুজুর ঝাড়ফুঁক করেন। এরপর কাসেম ধীরে ধীরে সুস্থ হয়। কিন্তু একটা জিনিস সে আজও বলে না—সেই রাতে সে আসলে কী দেখেছিল? রুহুল এখন শহরে থাকলেও, সে আর কখনো রাতে গ্রামে থাকে না। আর কাসেম? সে আজও সূর্য ডোবার আগেই ঘরে ঢুকে যায়।

❗শেষ কথা

ভুত বলে কিছু নেই", — এই কথাটা অনেকে বলতেই পারে। কিন্তু যারা একবার মরণতালতলার সেই গাছটার সামনে দাঁড়িয়েছে, তারা এটা বিশ্বাস করে না। 

তুমি কি সাহসী? তাহলে একবার তালগাছের নিচে সন্ধ্যায় দাঁড়িয়ে দেখো। হয়তো কারও কান্না শুনতে পাবে… হয়তো কেউ ডাকবে… কিন্তু ফিরতে পারবে তো?"

Comments

    Please login to post comment. Login