নীড়ে ফেরার গল্প
একটি হৃদয়স্পর্শী ইসলামিক গল্প
রাত গভীর। শহরের কোলাহল থেমে গেছে, বাতাসে অদ্ভুত এক প্রশান্তি। এমন এক রাতে, একটি অচেনা দরজায় ধাক্কা দিল এক তরুণ—নাম তার ফাহিম।
ফাহিম বড় হয়েছে ঢাকার এক ব্যস্ত পাড়ায়। তার ছোটবেলা কেটেছে মসজিদের আজানে ঘুম ভাঙা আর বাবার কণ্ঠে কুরআনের সুর শুনে। কিন্তু যখন বড় হলো, জীবন তাকে অন্য পথে টেনে নিল।
নাইটক্লাব, মাদক, অবাধ স্বাধীনতা—সব কিছু ছিল তার চেনা জগৎ। আল্লাহ, নামাজ, রোযা এগুলো তার কাছে যেন পুরনো গল্পের অংশ ছিল। সে বলতো, “জীবন একটাই, উপভোগ না করলে কেন বাঁচবো?”
একদিন, বন্ধুর মোটরসাইকেলে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। সে অজ্ঞান হয়ে যায়, চোখ খুলে দেখে হাসপাতালের বিছানায় পড়ে আছে, বুকের ওপর নল আর যন্ত্রপাতি। তখন প্রথমবারের মতো সে মৃত্যুর গন্ধ পায়।
সেই রাতে সে স্বপ্নে দেখে…
এক অন্ধকার পথ, যার শেষে আলো জ্বলে। এক প্রবীণ লোক তাকে বলেন, “ফাহিম, তোর রব তো তোকে ডেকেছে বহুবার। এবার কি ফিরবি না?”
চোখ খুলতেই ফাহিম কাঁদতে থাকে। বহু বছর পর আল্লাহর নাম নিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদেছিল সে। হাসপাতাল থেকে বেরিয়েই প্রথম যে জায়গায় সে গিয়েছিল, সেটা ছিল—মসজিদ।
প্রথম সেজদায় পড়ে সে বলে,
“হে আল্লাহ, আমি ফিরে এসেছি। আমায় গ্রহণ করো।”
তখন সে বুঝেছিল, "নীড়ে ফেরা" মানে শুধু একটা পথ বদলানো নয়, এটা আত্মার মুক্তি।
তার জীবন বদলে গেলো। এখন সে যুব সমাজকে আলোর পথে ডাকে। মসজিদের খুতবা দেয়, দরিদ্রদের সাহায্য করে, কুরআন পড়ে, আর মা-বাবার খেদমত করে।
আজ সে বলে,
“যত দূরে গিয়েছো, ফেরার দরজা এখনো খোলা। কারণ, রহমানের রহমত কখনো বন্ধ হয় না।”
এই গল্প আমাদের শেখায়:
- ভুল করা মানেই শেষ নয়। ফিরে আসা মানে নতুন সূচনা।
- আল্লাহ আমাদের প্রতীক্ষায় থাকেন, শুধু একবার ফিরে আসার জন্য।
- জীবনের সত্যিকারের সুখ আল্লাহর নিকটেই।
তোমারও কি মনে হয়, এবার নীড়ে ফেরার সময় হয়েছে?
সুস্থ থাকুন, সুস্থ রাখুন
অসহয়কের সহায়ক হন
লেখক:
মো: ইমন আলী