কুষ্টিয়ার এক ছোট্ট গ্রামে বাস করত রায়হান। বাবা ছিলেন একজন কৃষক, মা একজন গৃহিণী। সংসার চলত খুব কষ্টে। কিন্তু রায়হান স্বপ্ন দেখত, সে একদিন একজন বড় ইঞ্জিনিয়ার হবে। বন্ধুদের মতো নতুন জামা, দামি মোবাইল তার ছিল না। তবুও, তার চোখে ছিল আগুন – পড়াশোনা করে নিজেকে প্রমাণ করার আগুন।
গ্রামের স্কুলে পড়ত সে। স্কুলে যাওয়ার আগে সকালে মাঠে বাবার সঙ্গে কাজ করত, বিকেলে আবার পড়ার টেবিলে বসত। তার পড়ার প্রতি ভালোবাসা ছিল অগাধ। গ্রামের সবাই তাকে "পাগল ছেলে" বলত, কারণ সে খেলাধুলা বাদ দিয়ে বইয়ের পেছনে সময় দিত।
একদিন স্কুলে একটি বিজ্ঞান মেলা হলো। রায়হান একটি পুরনো পাখার যন্ত্রাংশ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের একটি ছোট মডেল বানিয়েছিল। সবাই সেটা দেখে অবাক! জেলার সেরা পুরস্কারটি তার হাতে ওঠে। সেই খবর স্থানীয় পত্রিকায় ছাপা হয়। সেইদিন সে প্রথম বুঝেছিল—পরিশ্রম কখনো ব্যর্থ হয় না।
এই উৎসাহ তাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যায়। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকে প্রথম বিভাগে পাশ করে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে।
তিন বছর পর, একদিন সে সেই পুরনো গ্রামে ফিরে আসে – কিন্তু এবার সাধারণ ছেলে হিসেবে নয়, একটি আন্তর্জাতিক টেক কোম্পানির ইঞ্জিনিয়ার হয়ে।
যে রায়হানকে সবাই একসময় নিয়ে হাসাহাসি করত, আজ সেই রায়হান গ্রামের নতুন স্কুল ভবনের দানদাতা।