অন্তস্পর্শ
writer_choity_moni
আরিশী উপর থেকে জানালা দিয়েই দেখছে বিদায়ের এ মর্মান্তিক দৃশ্য। ফুল নিচে চলে এসেছে।তুষিকে গাড়িতে বসিয়ে গাড়ি ছেড়ে দিল গন্তব্য তুষির শ্বশুর বাড়ি....
একদিকে নতুন জীবন শুরু করার আনন্দ ও উত্তেজনা থাকে, অন্যদিকে, শ্বশুরবাড়ির পরিবেশ, নতুন নিয়ম-কানুন, এবং আত্মীয়-স্বজনের সাথে মানিয়ে নেওয়ার চাপও থাকে। কিছু মেয়ে বিয়ের পর শ্বশুরবাড়ির পরিবেশে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে, আবার কারো কারো জন্য এটি একটি কঠিন সময় হতে পারে।
তুষির নতুন জীবন, প্রিয়সঙ্গীর সাথে পথচলা শুরু করার আনন্দ। পুরাতন সম্পর্ক, নতুন পরিবারকে আপন করে নেওয়ার যুদ্ধ চলছে।
**
মিহি মাহি রিয়াদ তুর্য়, আরশ বসে বসে আড্ডা দিচ্ছে।
রিয়াদ- কিরে গ্রুপের মেসেজ পড়ছিস, সবাইকে টইলন পরীক্ষার সময় ল্যাবে থাকতে হবে ।
মাহি - টইলন পরীক্ষা তো আর তিন দিন পর।
মিহি- তাহলে আমাদের কালকে রওনা দিতে হবে।
তুর্য- আরশের মনে হয় তিনমাস ছুটি আছে,।
মাহি- আমার মনে হয় না আরশ আর যাবে। কিরে যাবি।
রিয়াদ- কিরে কিছু বল,তুই কি যাবি না আর।
আরশ- তোদের টিকিট কেটে রাখছি,কাল রাত ১২ টায় ফ্লাইট,।
তুর্য- তাইলে তো টইলন ক্লাসে উপস্থিত হতেই পারব।
**
বড় আব্বু তুষিকে দেখতে আমরা সব কাজিনরা যাব তিহান এটুকু বলে চুপসে গেল, যদি মানা করে দেই। তিহানের সব নিরবতা ভেঙ্গে তিনি রাজি হয়ে গেলেন,
যাও তবে বিকেলে যেও। আচ্ছা।
-ভাবি বড় আব্বু বলছে সব কাজিনরা যাওয়ার জন্য।তুমি সবাইকে বলে দিও।, বিকেলে রেডি হয়ে থাকতে।
-তিহান আমরা একটার দিকে বের হয় তাহলে বিকেলে পৌছে যাব,যেতে দু'ঘন্টা লাগবে।
-জোসনা পুর থেকে ধূসর গ্রামে যেতে দু'ঘন্টা র চেয়ে বেশি সময় লাগবে ভাবি।
-আমরাত নিজেদের গাড়ি নিয়ে যাচ্চি।
-ভাবি তুমি ভাইয়ারে বলো মিষ্ঠী কিনে এনে দিয়ে আরতে যেতে।
-আচ্ছা, তোমার ভাই আজকা আরতে যাবে না, ফুলকে দিয়ে আসবে।
-ফুল যাবেনা তুষির বাসাই।
-না,ওর এসএসসি পরীক্ষা কয়দিন পর।
আরিসীকে সিড়িদিয়ে নামতে দেখে।
তিহান- কই যাস আরিসী।
-কলেজ ড্রেস পড়ে মানুষ কই যায়।
-অনেকে তো ডেটেও যায়।
-যে যেমন তার চিন্তা ভাবনা এমনই।
-আজ কলেজে যাওয়া লাগবেনা আরিশী তুষিদের বাসায় যাব।
-না ভাবি যায় একটা ক্লাস করে চলে আসবনে, এমনিতে তিনদিন ধরে যায় না।
-- তো তুই দারা আমি রেডি হয়ে আসি।
-কেন আমি দাড়াবো, আমি একাই চলে যাব।
-ওহ যাও, পথে যখন আকবর চাচা পথ আটকাবে, ভালো লাগবে।
আরিশী মুখটা ইনোসেন্ট বানিয়ে....
-আমি দাড়াচ্চি তুই রেডি হয়ে আয়।
____________________________________
সবাই গাড়িতে উঠে পড়ছে তিহান আপন মনে গাড়ি ড্রাইভ করছে আর পিছনে ফিরে ফিরে আরিশীকে দেখছ।দেখবেই না কেন যাকে সহ্য করতে পারে না তার সাথে বসেছে ।আরিশীও তিহান কে ব্যাংঙ্গচাচ্ছে,যতবার তিহান তাকাচ্ছে।
ড্রাইভিং সিটের পাশে ফাহিমা বসছে। পিছনের সিটে পরী তোহা, শশী,তুলি। ওদের পিছনে মিহি মাহি তুর্য,রিয়াদ, ওদের পিছনে শোয়াদ,শরিফুল,আরশ আরিশী।
সবার শেষে আরিশী এসেছে তাই আরশের সাথে বসতে হলো, না চাইলেও বসতে হয়ছে।
গাড়ি চলছে আরশের দৃষ্টি আরিশীতে সীমাবদ্ধ,আরিশী এটা বোঝতে পেরে, আরশকে বোঝিয়েই...
-তিহান চোখ সরা।
-আমি চোখ সরালে কবরে যাবি কিন্তু।
- আরিশী কোনো সমস্যা হচ্ছে।
-না ভাবি।
দু'ঘন্টা পর তুষির বাসাই আসলো।তুষার ওদের জন্যই দাড়িয়ে ছিল। তুষির সাথে কোশল বিনিময় করলো, হালকা নাস্তা করলো। তুষি সবাইকে বাড়িটা ঘুড়িয়ে দেখালো।
-কালকে বড়রা আসবে তুষি,তোমাকে নিতে।
-তুমিও এসো ভাবি।
-আচ্ছা, তোমার ভাই যদি নিয়ে আসে । তা ননদীনি কেমন কাটলো বাসর।
তুষি মাথা নিচু করে মুচকি হাসল। বাকিরা সবাই না শোনার বান করল আরিশী ফিক করে হেসে দিলো। হাসি দেওয়া মাএই আরিশী খেয়াল করল কেউ ওর মুখটা হাত দিয়ে চেপে ধরছে,।আরিশীর পাশেই আরশ বসেছিলো তাই হাসি দেওয়ার সাথে সাথে মুখ চেপে ধরে আরিশীর কানের কাছে মুখ নিয়ে...
-সব জায়গায় হাসতে নেই আমরা বড়রা আছি না এখানে।
আরিশী আরশের হাতটা সরিয়ে
- ত ভাবি এখানে এটা বলল কেন।
-তুই ভাবির মুখের দিকে তাকা মুখ ফসকে বের হয়ে গেছে দেখেই বোঝা যাচ্ছে।
- তাই বলে তুমি আমার মুখ চেপে দরবে।
-আমি চাইলে আরো অনেক কিছু চেপে ধরতে পারি।
-কি বলচিস তোরা ফিস ফিস করে।
-কই ভাবি কিছু না।
______
তিহান। হুম বল আরিশী। যাওয়ার সময় আমি তোর সাথে বসে যাব। কিভাবে যাবি বল, আমি ড্রাইভ করব আর পাশের সিটে ফাহিমা বসে আসছে তোকে বসতে দিবে না।
আমি এত কিছু জানি না। আরশ এতখন দাড়িয়ে ওদের কথা গুলো শুনে নিল।
তুষির থেকে বিদায় নিয়ে নিল। আরশ ড্রাইভিংসিটে গিয়ে বসল। আরিশীর অন্তরে কষ্ট হচ্ছে,কেন হচ্ছে তা জানে না । আরশ গাড়ি স্টার্ট দিল।
রিয়াদ-তুর্য আমারা চলে গেলে কি ওরা আমদের মিস করবে।
তুর্য-মনে হয় নারে রিয়াদ।
মিহি-দ্বারা আমি জিগায়।
মাহি - জিঙ্গেস করার কি আছে, ওদের সাথে আমাদের এমন কোনো স্মৃতি নেই যে ওরা আমাদের মিস করবে। রিয়াদ মাহির কথায় কান না দিয়ে,
রিয়াদ-হ্যালো গাইস আমরা কাল রাতের ফ্লাইটে চলে যাব তোমরা কি আমাদের মিস করবে।
সবাই একএে হুম, অনেকমিস করব।
শশী- বিশেষ করে মাহি আপুর রিয়াদ ভাইয়াকে শাসন করাটা,অনেক মিস করব।
তিহান-মুখে ইকটু হাসি দিয়ে......
- ঠিকই বলছো শশী আপু।
মাহি ইকটু মুচকি হাসল।
তোহা - মিহি তোমাদের সাথে আরশের পরিচয় কিভাবে।
মিহি- মাহি তুই বল।
রিয়াদ- চুপ কর তোরা আমি বলছি -
~অতীত~
সময়টা২০২০ হবে তখন গ্রীসের মেরুচফোক ল্যাবের পাশে একটা নতুন ক্যাফ হলো, আশে পাশে কোনো ক্যাফ নেই। দুই তিন কিলোমিটার দূরে অনেক ক্যাফ রয়েছে কিন্ত ল্যাব থেকে অনেক দূর। আমি তুর্য,মিহি ইস্কুল লাইফ থেকেই ফেন্ড। মেরুচফোক ক্যাফের একটা নিয়ম ছিল টেবিল ফুল না হওয়া পর্যন্ত খাবার সার্ভ করে না, আর প্রতিটি টেবিলে, টুকিচেয়ার পাঁচটা। এতে আমাদের অসুবিধা হতো না, শুধু ক্যাফে গেলে এক দু ঘন্টা লেট হতো পাঁচজন মিলতে, আমরা তিনজন ছিলাম আর বাকি দুজন লাগতো, আমদের তো মাএ এক/দু ঘন্টা অপেহ্মা করতে হতো, এমনও মানুষ আছে যারা সারাদিন বসে থাকত।
------
একদিন আমাদের তিনজনেরই খুব খুদা লাগছে, ল্যাবে পরীক্ষা থাকায়। সকালে হোস্টেলের খাবার না খেয়েই চলে আসছি,তাড়াহুড়া করে ক্যাফে গেলাম , গিয়ে বসলাম। বসলে কি হবে আরও দুজন লাগবে। অনেকেই ক্যাফে আসছে কিন্তু আমাদের টেবিলে বসছে না সবারই পরিচত লোক আছে ঐখানে গিয়ে বসছে। প্রায় আধা ঘন্টার মতো বসে আছি, কেউ এসে বসলো না।
মিহি- দেখ রিয়াদ ঐযে ছেলেটা।
রিয়াদ-কোনটা।
মিহি-ঐযে সাদা শার্ট পিংক ব্লেজার কানে ব্লুটুথ।
তুর্য -হুম কি হয়ছে।
মিহি-ওরে আমি আমাদের ল্যাবে দেখছি, ওকে ডেকে নে।
আমি গেলাম।
- এই যে কতখন দরে বসে আছ।
-এক ঘন্টা।
-নামকি তোমার,কোন ব্যাচ,।
-আরশ, নিউ ব্যাচ।
- ওহ সেম ব্যাচ আরশ চলো আমাদের টেবিলে। আরশ আসতে চায়নি আমি জোর করে নিয়ে আসছি, আরো একজন লাগবে। অনেক সময় বসে থাকার পর এক বৃদ্ধ এলো পরে আমরা খাবার খেলাম। ঐখান থেকে আরশের সাথে পরিচয়।
কিন্তু আমরা চারজন খাবার খাওয়ার জন্য আরেকটা ফেন্ড লাগতো। অনেক খুজলাম পেলাম না।
_______
কিছুদিন পর আমাদের ল্যাবে প্রতিযোগিতা হয় নিউব্যাচের।আর প্রতিযোগিতা থেকে বাচাই করার জন্য তুর্য় আর আমাকে বলা হয় কারন নিউ ব্যাচে আমি আর ওই বেশি পারতাম। প্রথম দিকে আরশ জানি কেমন ছিল কারো সাথে কথা বলতো না, খেত না, ও ক্যাফে যেতোনা আমরা জোর করে নিয়ে যেতাম ও গেলে ইকটু তাড়াতাড়ি খাবার পাই,এজন্য।
পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণার সময় আমরা প্রথমে আকাশকে ডাকি যে প্রথম হয়েছে দ্বিতীয় আরশ কিছু লিখছে খাতায়, তাও দ্বিতীয় দিছি বন্ধুতো,।
দ্বিতীয়ত আর এমনি এমনি দেইনি, ওঠিক মতো পড়াশোনা করে না তাই দ্বিতীয় দিলাম যাতে দ্বিতীয় হয়েছে ভেবে পড়াশোনা করে।
তৃতীয় মিহি ঘোষণা করার পর অন্য একটা মেয় আসল আমরা তে অবাক। স্যার বলল তুমরা ওর খাতাই হাতে নিয়ছ।আমরা কি জানতাম মিহি দুইটা। অনুষ্ঠান শেষে মিহি গিয়ে তৃতীয় হওয়া মিহির সাথে ঝগড়া লাগলো। ঝগড়া মিটানোর জন্য ক্যাফেতে যাই, দ্যান ওকে অফার করা হয় আমাদের গ্রুপে এড হওয়ার জন্য,মিহি ও রাজি হয়ে যায়। ঐখান থেকে মিহির সাথে পরিচয়, পরে এক গ্রুপে দুটো মিহি তাই মিহিকে আমরা মাহি ডাকি।
~বর্তমান
ঐখান থেকেই আমাদের বন্ধুতের সূচনা।তোমরা জানো আগে ক্যাফের মালিক কে অনেক বকা দিতাম। এখন আর বকা দেই না উনার জন্যই আমরা আরশ এর মতো ফেন্ড পাইছি। আমাদের ল্যাবে গ্রুপ ফেন্ডসএ আমরা প্রথম।
--------
কেউ জড়িয়ে ধরে আছে এমনটা টের পেয়ে ঘুম থেকে উঠে পড়ল আরিশী, রুমে কেউ নেই, কিন্তু ঘ্রানটা সুপিরিচিত এটা তো আরশ ভাইয়ার পারফিউম ঘ্রান, কিন্তু এলোক এরাতে এখানে আসতে যাবে কেন। যত সব আজাইড়া চিন্তা ভাবনা আমার। আবারও ঘুমিয়ে পড়ল আরিসী।
~ দেখতে দেখতে অন্তস্পর্শ থেকে একটা দিন কেটে গেল। ঘনিয়ে এলো তুর্যদের যাওয়ার সময়।আজকে হয়ত ইতি ঘটবে ওদের বন্ধুত্বের। হয়ত কোনো এক বেলা আবার সূচনায় রঙ্গিন হবে বন্ধুত্ব।
-আরিশী তর জন্য একটা নিউজ আছে।
-কি নিউজ বল।
-আগে টাকা দে।
-সাত সকালে কি শুরু করলি তিহান, সর।
-তুই কি এই নিউজটা শুনতে ইচ্ছুক না।
-না, জাবি এখান থেকে, আমাকে ঘুমাতে দে ভাই।
-কেন সারা রাত কি করছিস, আরশ ভাইয়া আসছিল নাকি।
-হোয়াট দ্যা হেল এসব কোন ধরনের কথা তিহান।
আরিশী শুয়া থেকে উঠে তিহানকে ইচ্ছে মতো কয়টা কিল বসিয়ে
- আরেকদিন বললে মুখ ভেঙ্গে দিব।
- আমি শুনেছিলাম সত্যি কথা বললে মানুষের রাগ উঠে, তার মানে আমি যা বলছি তা সত্যি।
________
মিহি মাহি তুর্য রিয়াদ লাগেজ গুছচ্ছে। ফাহিমা এসে
-তুর্য ভাইয়া আপনার সাথে একটা কথা ছিল।
- হ্যা বল ফাহিমা।
-ভাইয়া ইকটু সাইটে আসেন।
তুর্য আর ফাহিমা বেলকনিতে গিয়ে সামনা সামনি দাড়াল..
তুর্য নিচের দিকে তাকিয়ে...
-হ্যা বলো ফাহিমা, কি বলবে।
ফাহিমা তুর্যর দিকে
-আই লাভ ইউ ভাইয়া।
তুর্য একটা হাসি দিয়ে
-সরি, আমি তো মিহি কে পছন্দ করি।
মিহি মাহি তুর্য এতখন বেলকনির দরজার সামনে দাড়িয়ে ওদের কথা শুনছিল, এখন বেলকনিতে ঢুকল তিনজন……
মাহি - কি বললি, আবার বল।
মিহি - তুই আমাই পছন্দ করিস, কই কখন বললি নাতো।
তুর্য- আরে এসব কিছু না, ও আমাই প্রপোজ করছে এমনি তো আর মানা করে দেওয়া যায় না,রিজেন লাগবে, তাই আর কি।
রিয়াদ- জাযাকাল্লাহ খাইরান ফাহিমা।
ফাহিমা - ইটস ওকে ভাইয়া, আমি যাই।
তুর্য- কিরে তুই ওরে জাযাকাল্লাহ খাইরান জানালি কেনো।
মাহি - প্লেন ছিল এটা। তুইতো আর নিজে নিজে কোনো দিন বলবি না আমি মিহিকে পছন্দ করি।
মিহি- তুই কি ভাবছিস তোরে ফাহিমার মতো মেয়েরা ভালোবাসবো।
তুর্য মিহির দিকে এক দূষ্টিতে তাকিয়ে
-ফাহিমার মতো মেয়েদের ভালোবাসা লাগব না তুই বাসলেই হবে।
মিহি- কিরে আরশের বাচ্চা কই।
রিয়াদ- কোল্ড জুস আনতে গেছে।
মাহি- ভালোই করছে, অনেকদিন হয়েছে কোল্ড জুস খেতে খেতে আড্ডা দেওয়া হয় না।
তুর্য- মনে হয় না আরশ আর ফিরে জাবে।
মিহি- এটা ঠিকই বলছিস তুই,ওরে অনেক মিস করব।
_________________________________________
কিরে কাদছিস কেন আরিশী কথাটা কানে বাজতেই আরিশী মুখ গোজে রাখা থেকে তুলে সামনের দিকে থাকায়। অসময়ে অনাকাঙ্ক্ষিত মানুষটাকে দেখে আরিশীর ইচ্ছে করল দৌড় গিয়ে জড়িয়ে ধরে চুমু খেতে। কিন্তু ~অন্তস্পর্শ মানুষটা যখন অন্তপুরাই তখন শুধু মন কে মানিয়ে নিতে হয়।
আরিশী উঠে দাড়িয়ে তুমি এখানে, তুমি না চলে গেছ।
-তাই বুঝি কাঁদছিলি।
আরিশী ভাবছিলি আজকে আরশ ও চল যাবে। তাই সকাল থেকেই মনটা খারাপ। আরশ ওর ফেন্ডদের নিয়ে গাড়ি করে চলে যাচ্ছে বেলকনিতে দাড়িয়ে দেখল।
আরশ চলে যাচ্ছে এটা দেখে চোখ থেকে অজ্রসে পানি পড়ছে। বেলকনির দরজার মেঝেতে বসে মুখ গোজে কান্না করছে।
- দেখলে আম্মু ও আবারও ভেঙ্গে গুড়িয়ে দিয়েছে আমাই,।
অদৃশ্য এক ছায়া যা আরিশীর চোখে দৃশ্যমান..
-আমি আছিত সবসময়, কাঁদে না মা আমার, তোমার কান্না আমি সহ্য করতে পারিনা।
- তুমি তো এখনই চলে যাবে,আজ থাকো মা তুমি আমার কাছে।
আরিশীর মা অদৃশ্য ছায়া যা বাতাসে মিলিয়ে গেল।
আরশ বন্ধুের এয়ারপোর্টে ড্রপ করে বিমান ছাড়া পর্যন্ত ওয়েট করল। গত চার বছর ধরে যে বন্ধু গুলোর সাথে ছিল আজ তারা চলে যাচ্ছে ভাবতেই কেমন লাগছে, আর এটা সত্যি।
বিমান উড়ার পর পর আরশ বাসাই উদ্দেস্য ফিরে আসে,রুমে যাওয়ার সময় আরিশীর রুম থেকে ফুপিয়ে কান্নার আওয়াজ পেয়ে ওর রুমে যায়।
_______________________________________________
আজকে সকালে ফুফিরা চলে গেল, বিকেলে তুষি আপুরা চলে যাবে। তুলি ইস্কুলে চলে গেছে। আরিশী রেডি হয়ে দাড়িয়ে আছে তিহান আসলে কলেজের উদ্দেশ্য রওনা দিবে, একা একা গেল আকবর চাচা পথ আটকায় কিসব বলে, বলে আমাই বিয়ে করবি, এমহল্লার রানি হতে পারবি।
তিহান জানে শুদু পথ আটকায় মজা করে এসব কথা ও শুনেনি,তাই তিহান কিছুই বলেনি আকবর চাচাকে।
তিহানের দেরি হচ্ছে দেখে ও একাই বের হয়ে পড়ল। আকবর চাচার এরিয়ায় আসতে কলিজা কাপছে আজও নিশ্চয়ই লোকটা রিকশা আটাকাবে আর এসব বলবে। অমনি রিকশা আটকিয়ে দাড়াল আকবর চাচা কিন্তু মাথা নিচু করে..
-মা আমাই মাফ করে দাও, আমি যা করছি ভুল করছি।
আরিশী এখনো কাপছে উনি কি বলছে যা বলছে তা কি সত্যি, নাকি আমি ভুল শুনছি।
- মা আমাই মাফ করে দাও।
-আপনার মুখে মা ডাকটা মানাই না, মাফ করে দিয়েছি, রাস্তা থেকে সরে দারান।
-এভাবে বলছ কেন মা।
-কি আর বলব এলাকার প্রতিটি মেয়েকে আপনি ডিস্টার্ব করেন, লজ্জা করে না আপনার। রিক্সা ওয়ালার উদ্দেশ্য...
-মামা আপনি যান।
_____
কলেজে প্রবেশ করতেই নিহা দৌড়ে এসে জড়িয়ে দরল আরিশীকে।
- কিরে কি হয়ছে তোর,বিয়ে ফাইনাল নাকি।
-না, রুপার থেকে শুনলাম আরশ ভাইয়া আসছে।
আরিশী দীর্ঘ শ্বাস ফেলে..
- হুম।
- তোকে নিশ্চয় সরি বলেছে, তুই নিশ্চয় প্যাচাপ করে নিয়েছিস।
জানিস এতদিন এটাই ভেবেই অপেক্ষা করছিলাম যে উনি এসে সরি বলব,কিন্তু কিছুই হলো না, বাদ দে।
তিহান গেইড দিয়ে প্রবেশ করার সময়, কথা গুলো শুনলো, ওর খুব খারাপ লাগল।
আরিশী। ডাক শুনে পিছনে ফিরতেই বিরিক্তি কর মুখটা চোখে পড়ল, বিরক্ত নিয়েই..
-হুম সোওয়াদ।
- আপু বলছে কাউকে পছন্দ কিনা আমি তুমার নাম বলেছি।
-সরি সোওয়াদ, আর কত বার মানা করুম তোকে। আমরা একই কলেজে পড়ি আমরা ফেন্ড।
- তুইতো প্রেম করিস না আর তুইতো কইছো বাসায় প্রস্তাব পাঠাইতে।
-আমি তো এটা তুই বিরক্ত করছ তাই বলছি, যাতে তুই আর বিরক্ত না করছ।
বিরক্ত কথাটা সোওয়াদের অন্তস্পর্শ করছে, আমি নাকি ওরে বিরক্ত করি,একেতো ইচ্ছে করছে মেরে ফেলতে কিন্তু ওকেতো আমি বউ বানাবো।
তিহান আরিশীকে টেনে নিয়ে বনুতলায় বসাল এখানে কলেজের সবাই বশে আড্ডা দেই।
-এখানে আনলি কেন তিহান,চল ক্লাসে যায়।
- আজকে ক্লাস করব না,তোর আর আরশ ভাইয়ার কাহিনি বল শুরু থেকে বলবি।
আরিশী মুখটা মন মরা করে শুনবি বলে ইকটু মুচকি হাসল।পিছন থেকে নিহা আর রুপা কাদে হাত রেখে
-বলনা,শুনি।
-তো শুন...
~অতীত~
সময়টা ২০১৮ আমি অষ্টম শ্রেণিতে পড়ি। আরশ ভাইয়া তখন কলেজে পড়ে। ভাইয়া তিতুমীর কলেজে পড়তো বিধায় আমাদের বাসায় থাকতো ভাইয়া আমাকে গনিত পড়াতো। প্রতিদিন ভাইয়া কলেজ যাওয়ার সময় আমাই নিয়ে যেত আাসার সময় নিয়ে আসতো,বিকেলে.....
চলবে...