বই পড়া : আজ এবং গতকাল
কিছু পাঠক আছেন, যারা কেবল কালজয়ী সৃষ্টি পড়তে পছন্দ করেন। এই পাঠক বৃন্দের কাছে নতুন লেখক? আরে ধুর! এরা আবার লিখতে পারে নাকি? আবার অন্যদিকে, এমন কিছু পাঠক আছেন, যাদের কাছে ক্লাসিক মানেই : “ওবাবা গো কি ভাষা রে, এসব আদিম কালের লেখা আবার কেউ পড়ে ? মাথায় তালগোল পাকিয়ে গেলো সব! “ এই পাঠক নদীর দুইপ্রান্তে থাকা দুই ভাগের ভেতর সব সময় কেমন একটা যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা চলছে তো চলছেই, তবে তাতে কারো কি আদৌ লাভ হচ্ছে কিছু?
আবার আর একটি ভাগ আছে পাঠকের, যারা একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর বই ছাড়া কিচ্ছু পড়তে চান না। আমি মনে করি , প্রত্যেকটি বইমানেই এক একটি জ্ঞান ভান্ডার। সেই জ্ঞান ভান্ডারের যত টুকু পাঠক হিসেবে কুড়িয়ে নেয়া যায়, সেই পুরোটাই আসলে প্রাপ্তি। যেমন, আমি জানি আরিফ আজাদ এ সময়ের খুব ভালো একজন লেখক। ওনার সহজ সাবলীল ভাষায় লেখা বইগুলো অনেক পাঠককেইইসলাম ধর্মের প্রতি আকৃষ্ট করবে। আমি নিজে যেমন ওনার লেখা বেলা ফুরাবার আগে কয়েকবার পড়েছি।”জীবন যেখানে যেমন” বইটির প্রথম গল্পটা পরে কেঁদেছি। এই দুটো বই ই আমার খুব ভালো লেগেছে। এবার চেষ্টায় আছি ওনার “নবী জীবনের গল্প “বা “গল্পগুলো অন্য রকম “সংগ্রহের চেষ্টায়।
কিন্তু তাই বলে এই না যে আমি হুমায়ুন আহমেদ, জাফর ইকবাল, মোহিত কামাল এনাদের লেখাপছন্দ করিনা। কিছু পাঠক আছেন, ওনাদের কে সামনে পেছনে নাস্তিক বলে গালি দিতে ছাড়েন না। পাঠক হয়ে এমন ধারা আচরণ কিমানায়? আবার যে হুমায়ুন আজাদ বা তসলিমা নাসরিন কে আমি একটু এড়িয়ে যাই, ওনাদের ভাষা প্রয়োগ ভালোবাসতে পারিনাবলে, এনারাও কিন্তু আমায় কিছু হলেও শেখাতে পারেন। এমনকি এনারা কারো কারো কাছে অতি প্রিয়। আবার ক্লাসিক পথেরপাঁচালি, দুর্গেশ নন্দিনী, বা বিরাজ বৌ তে ভাষা যেহেতু চলিত বাংলা নয়, তাই ওই কঠিন ভাষা বোঝার ভয়ে পাঠক পালিয়ে বেড়ায় ওইবই গুলো থেকে। তবে ওই সব বইতে করে পূর্বসূরিদের সময়ে চলে যাওয়া যায় , খুঁজে পাওয়া যায় ইতিহাসের এক ঝলক , সেই ঝলকটুকুই কি পাঠক হিসেবে খুব কম পাওয়া? আসলে বই নিয়ে আলোচনা হলে, বই আরো সহজ ভাবে পাওয়া গেলে (ভাই বই মানে বই, পি ডী এফ বা অডিও বুক নয়) হয়তো এরকম সব ধরণের বই পাঠকের হাতে পৌঁছে দেয়া যেত।