চাঁদের আলোয় রাজকন্যা
এক দেশে ছিল এক অদ্ভুত সুন্দর রাজ্য—"চন্দ্রপুর"। রাজ্যের চারদিকে ছিল নীল পাহাড়, সবুজ বন আর রূপালি নদী। সেই রাজ্যের রাজকন্যা “সুরমা” ছিল অতুলনীয় সুন্দরী, কিন্তু তার মনে ছিল এক অদ্ভুত দুঃখ—সে জন্ম থেকেই মানুষের ভাষা বলতে পারত না।
রাজা-রানী অনেক চিকিৎসক, জাদুকর, সাধু-বাবার কাছে গিয়েছিলেন, কিন্তু কেউই রাজকন্যাকে কথা বলাতে পারেনি। তবে সুরমা গান গাইতে পারত, আর সেই গান শুনলে বনজন্তু, পাখি, এমনকি ফুলও হাসি ফুটিয়ে দিত।
একদিন চন্দ্রপুরের আকাশে এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটল। পূর্ণিমার রাতে চাঁদের আলো নেমে এল সোজা রাজপ্রাসাদের বাগানে। সেখানে দাঁড়িয়ে ছিল এক অচেনা যুবক—তার হাতে রূপালি বাঁশি। যুবকের নাম "অয়ন"। সে বলল,
— "রাজকন্যা, আমি তোমার ভাষা ফিরিয়ে দিতে পারি, যদি তুমি আমার সঙ্গে জাদুর বন পার হয়ে ‘আলো-ফুল’ খুঁজে আনতে রাজি হও।”
সুরমা মাথা নাড়ল সম্মতিতে, আর দু’জনে রওনা দিল। পথে তারা পেরোল—কথা বলা নদী, হাসিখুশি বাতাস, আর দুষ্টু ছায়ার ফাঁদ। সুরমা গানের সুরে প্রতিটা বাধা দূর করল, আর অয়ন বাঁশির সুরে অন্ধকারকে পরাজিত করল।
অবশেষে তারা পৌঁছাল আলো-ফুলের কাছে। ফুলটা ছুঁতেই সুরমার গলায় যেন নতুন প্রাণ এলো। প্রথমবার সে বলল—
— "ধন্যবাদ, অয়ন।"
রাজপ্রাসাদে ফিরে এসে সুরমা আর অয়নের বিয়ে হলো, আর চন্দ্রপুরে শুরু হলো আনন্দ-উৎসব। সেই থেকে রাজ্যে যখনই পূর্ণিমার রাত আসে, চাঁদের আলোয় শোনা যায় সুরমা আর অয়নের গান—যা আজও মানুষের হৃদয়ে রূপকথা হয়ে বেঁচে আছে।