১৯৯৯ সালের কুয়াশা ভরা এক ভোরবেলা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উইস্কনসিন অঙ্গরাজ্যের একটি গ্রাম।
এক বাবা ও তার ছোট মেয়ে প্রতিদিনের মতো কুকুর নিয়ে হাঁটছিল।
হঠাৎ কুকুর থেমে গিয়ে মাটি খুঁড়তে লাগল — তারা কাছে গিয়ে যা দেখল, তা আজও গ্রামের মানুষ ভুলতে পারেনি।
এক তরুণীর দেহ, মাটি আর শুকনো পাতার মধ্যে অর্ধেক ঢাকা।
চোখ ফাঁকা, ঠোঁট শুকনো, শরীরে অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন।পুলিশ এল, কিন্তু কেউ জানল না সে কে।
নাম দিল "Jane Doe" — অজানা মৃত নারী।বিশ বছর কেটে গেল।
গ্রামের মানুষ মাঝে মাঝে কথা বলত —
"ও মেয়েটা কে ছিল? কেন এমন করল কেউ?"
২০১৯ সালে নতুন প্রযুক্তি এল — DNA পরীক্ষা।
পুলিশ আবার মামলাটা খোলে, পুরনো দেহ থেকে নমুনা নেয়।
এবার মেলে মিল।
তার নাম Peggy Lynn Johnson।
পেগি ছিল একা। মা মারা গিয়েছিল, বাবা ছিল না।
সে মেধাশক্তিতে দুর্বল ছিল, কাজ করত ছোটখাটো।
একদিন হাসপাতালে গেল ওষুধ নিতে — সেখানেই পরিচয় হল নার্স লিন্ডা লারোশে-র সঙ্গে।
নার্স বলল — “আমার বাসায় থাকো, আমি তোমার দেখাশোনা করব।”কিন্তু সে জানত না, এই বাসাই হবে তার শেষ ঠিকানা।
বাসায় গিয়ে পেগি বুঝল, এ আশ্রয় নয়, এটা কারাগার।
লারোশে প্রতিদিন তাকে গালি দিত, মারত, খাওয়াত না।
বাচ্চাদের সামনে তাকে অপমান করত, কাজ করিয়ে নিত।
কখনও তাকে গরম বস্তু দিয়ে পোড়াত, কখনও আঘাত করত লোহার রড দিয়ে।
পেগি নিঃশব্দে সব সহ্য করত, কোথাও যাওয়ার জায়গা ছিল না।
এক রাতে লারোশে রেগে গিয়ে পেগিকে প্রচণ্ডভাবে মারল।
পেগি আর উঠতে পারল না।
লারোশে বলল — “সে ওভারডোজ করেছে।”
কিন্তু সবাই জানত, আসল কারণ মারধর।
মৃতদেহ লুকাতে লারোশে গাড়ি নিয়ে দূরের কর্নফিল্ডে গিয়ে ফেলে দিল।
সেখানেই পাওয়া গিয়েছিল সেই ভোরে, ১৯৯৯ সালে।
পেগির পরিচয় জানার পর পুলিশ লারোশেকে গ্রেপ্তার করল।
২০২২ সালে আদালত তাকে প্রথম ডিগ্রির খুন ও দেহ লুকানোর অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করল।
লারোশে এখন কারাগারে আজীবন কাটাচ্ছে।
পেগির দেহ পুনরায় তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়,
এবার তাকে নিজের নামে সমাহিত করা হল —
আর “Jane Doe” নামে নয়।