আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট্ট একটা নদী—নাম কালিন্দী। সন্ধ্যায় নদীর ধারে প্রায়ই হাটতে যেতাম আমি। ওখানেই প্রথম দেখি মিতাকে—হাতের মাটির কলস নিয়ে পানি তুলছিল। চোখে বড় কাঁচের চশমা, আর ঠোঁটের কোণে লাজুক হাসি।
প্রথমে শুধু চোখাচোখি, পরে ধীরে ধীরে কথা বলা শুরু হলো। কখনো গোপনে চিঠি বিনিময়, কখনো হাটে যাওয়ার পথে দুই মিনিটের দেখা—এইভাবেই দিন কেটে যাচ্ছিল।
একদিন বর্ষার বিকেলে নদী ফুলে উঠেছে, আকাশে মেঘ জমে অন্ধকার। আমি মিতাকে নদীর ধারে দেখতে পেলাম—কলস হাতে, কিন্তু ভয়ে থমকে আছে। পানি খুব তীব্র স্রোতে বইছে। আমি দৌড়ে গিয়ে বললাম, “আমি তুলে দিই।”
সেদিন প্রথমবার ও আমার দিকে তাকিয়ে বলল,
— "তুমি না থাকলে, আমি বোধহয় সাহসই পেতাম না।"
সেই দিন থেকে আমরা দু’জন জানতাম—নদীর ধারে যেমন জল থেমে থাকে না, তেমনি এই সম্পর্কও আর থেমে থাকার নয়।