নওশীন বৃষ্টিকে ভালোবাসে—ছোটবেলা থেকে। কিন্তু চাকরির ব্যস্ততায় সেই ভালোবাসা হারিয়ে গেছে প্রায়। সেদিন অফিস থেকে ফেরার পথে আকাশ হঠাৎ কালো হয়ে এল, আর মুহূর্তের মধ্যেই মুষলধারে বৃষ্টি নেমে গেল।
ছাতা ছিল না। রাস্তার ধারের একটা ছোট দোকানের ছাউনির নিচে দাঁড়িয়ে ভিজে যাচ্ছিল নওশীন। বৃষ্টির ফোঁটা গাল বেয়ে গড়িয়ে পড়ছিল, চুল এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল।
ঠিক তখনই পাশের দিকে দাঁড়িয়ে থাকা এক অচেনা ছেলে হেসে বলল—
— “আপনি চাইলে আমার ছাতাটা ভাগ করে নিতে পারেন।”
নওশীন অবাক হয়ে তাকাল,
— “আপনার ছাতা তো ছোট, দু’জন কিভাবে—”
ছেলেটি কথা কেটে বলল,
— “আমরা যদি কাছাকাছি থাকি, তাহলে ঠিক হয়ে যাবে।”
বৃষ্টির ফোঁটা ছাতার বাইরে পড়ছিল, আর ছাতার ভেতরে তারা ক্রমে কাছে আসছিল। হালকা ঠাণ্ডায় দুজনের নিঃশ্বাস মিশে যাচ্ছিল। প্রথমে কথা হচ্ছিল বৃষ্টি নিয়ে, তারপর গান, সিনেমা, আর অবশেষে জীবনের ছোট ছোট স্বপ্ন নিয়ে।
রাস্তার জলকাদায় ছপছপ শব্দ হতে হতে তারা বুঝতে পারল, বৃষ্টি থেমে গেছে। কিন্তু ছাতার নিচের সেই নীরবতা যেন এখনো চলছে।
শেষে ছেলেটি থেমে বলল—
— “আমরা কি আবার দেখা করব? হয়তো আরেকটা বৃষ্টির দিনে…”
নওশীন মুচকি হেসে বলল,
— “হয়তো। তবে পরেরবার ছাতা আমি আনব।”
তারপর থেকে, শহরে যখনই বৃষ্টি নামে, মানুষ শুধু ভিজে না—কেউ কেউ প্রেমে ভিজে যায়।