মায়া অনেকদিন পর নিজের গ্রামে ফিরল। শহরের কোলাহল, ট্রাফিক, ডেডলাইন—সব মিলিয়ে মনটা ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিল। ট্রেন থেকে নামতেই মনে হলো, বাতাস যেন তাকে জড়িয়ে ধরল, বলল—“ফিরে এসেছো।”
বিকেলের দিকে সে হাঁটতে হাঁটতে গেল গ্রামের নদীর ধারে। শিউলি ফুলের গন্ধ ভেসে আসছিল, পাখির ডাক ভরিয়ে তুলছিল আকাশ। নদীর জল ধীরে ধীরে বইছে, যেন কারও পুরনো গল্প শোনাচ্ছে।
পাড়ের কাছে বসে মায়া পা ডুবিয়ে দিল পানিতে। শীতল স্রোত পায়ের আঙুলে আলতো করে ছুঁয়ে গেল। মনে হলো, সমস্ত ক্লান্তি পানির সাথে ভেসে যাচ্ছে। দূরে কয়েকটা শিশু হাসতে হাসতে নৌকা ঠেলছে, আর এক বৃদ্ধ মাছ ধরছে নীরবে।
মায়া চোখ বন্ধ করল। সময় যেন থেমে গেছে—না কোনো তাড়া, না কোনো চাপ, শুধু বাতাস, জল, আর শান্তির এক গভীর আলিঙ্গন।
সন্ধ্যার আকাশ যখন কমলা হয়ে উঠল, মায়া ধীরে ধীরে উঠল। মনে হলো, আজ তার মন সত্যিই হালকা হয়ে গেছে—যেন নদী তার সব দুঃখ টেনে নিয়ে গেছে, রেখে গেছে কেবল প্রশান্তি।