আরিফ শহরের চাকরি ছেড়ে হঠাৎ গ্রামে চলে এলো কয়েক দিনের জন্য। তার মনে হচ্ছিল, অনেকদিন ধরে সে কেবল কাজ করছে—জীবনকে বাঁচছে না।
সেই রাতে বিদ্যুৎ ছিল না। চারপাশ নিস্তব্ধ, কেবল ঝিঁঝি পোকার ডাক। বাড়ির উঠোনে মাটির চাটাই বিছিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ছিল আরিফ। শহরে এত তারা দেখা যায় না—এখানে যেন আকাশ ভরা গল্প।
ঠিক তখন পাশের বাড়ি থেকে এলো শিউলি, ছোট্ট গ্রাম্য মেয়ে, হাতে গরম দুধের গ্লাস।
— “আপনি তো আজ সারাদিন একাই ছিলেন, মনে হলো হয়তো কিছু খাবেন।”
আরিফ হাসল,
— “ধন্যবাদ, কিন্তু তারার চেয়ে সুন্দর কিছু কি আছে এখন?”
শিউলি হেসে বসে পড়ল চাটাইতে। তারা দু’জন কথা বলতে শুরু করল—শৈশবের স্মৃতি, নদীর গল্প, আকাশের রহস্য নিয়ে। সময় কেটে গেল, রাত গভীর হল, কিন্তু কেউ উঠল না।
শেষে শিউলি মৃদু স্বরে বলল—
— “আপনি জানেন, এই আকাশের নিচে বসে কারও সাথে গল্প করলে… সেটা কখনো ভোলা যায় না।”
আরিফ জানত, এই রাতও ভোলা যাবে না। হয়তো গ্রামে কাটানো এই ছোট্ট সময়টুকুই তার জীবনের সবচেয়ে বড় প্রশান্তি হয়ে থাকবে।