রায়হান শহরের ব্যস্ত জীবন থেকে কয়েক দিনের জন্য মুক্তি নিতে পাহাড়ের দিকে রওনা দিল। রাতভর বাসযাত্রার পর যখন ভোরের আলো ফুটল, তখন তার চোখে প্রথম ধরা পড়ল সবুজে ঢাকা পাহাড়ের শীর্ষ—যেন আকাশের সাথে হাত মেলাচ্ছে।
গন্তব্যে পৌঁছে রায়হান গেস্টহাউসে ব্যাগ রেখে বেরিয়ে পড়ল। সকালবেলার বাতাস ছিল হালকা ঠাণ্ডা, মাটির গন্ধে ভরা। পথের দুই পাশে চা-বাগান, ভেতরে শ্রমিকেরা নীরবে পাতা তুলছে। দূরে পাহাড়ের গায়ে ভেসে বেড়াচ্ছে মেঘের টুকরো—যেন স্বপ্নের তুলো।
পাহাড়ের আঁকাবাঁকা পথে হাঁটতে হাঁটতে রায়হান শুনতে পেল পাখিদের ডাক, দূরে কোনো ঝরনার গর্জন। কৌতূহল তাকে কাছে নিয়ে গেল। সেখানে পৌঁছে দেখল, পাহাড়ের বুকে সাদা ফেনা তুলতে তুলতে নিচে নেমে আসছে এক ঝরনা। রোদের আলো সেই পানির ফোঁটায় রংধনুর মতো ঝিকমিক করছে।
ঝরনার ধারে বসে রায়হান পা ডুবিয়ে দিল ঠাণ্ডা জলে। চারপাশে কেবল প্রকৃতির শব্দ—পাখির ডাক, পাতার মর্মর, পানির ধারা। শহরের ধুলো, শব্দ, ক্লান্তি যেন অনেক দূরে হারিয়ে গেল।
সন্ধ্যার আগে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে সে সূর্যাস্ত দেখল। কমলা আর বেগুনি রঙে আকাশ ভরে গেল, মেঘগুলো রঙ বদলাতে বদলাতে ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেল। রায়হান মনে মনে বলল—
"এমন দৃশ্য দেখলে বুঝি, পৃথিবী এখনও সুন্দর আছে।"