অনেক বছর পর ছোট বেলার সেই গ্রাম এর বাড়িতে আসলো সানিয়া । সে একজন সফটওয়ারে ইঞ্জিনিয়ার।গ্রামের বাড়িতে আসার পেছনেও একটা কারণ আছে ।অনেক বছর হয়ে গেছে কারোর আসা হয়নি গ্রামের বাড়িতে সবাই যার যার জীবন নিয়ে ব্যস্ত ,সানিয়া এসেছিল তার দাদুর কিছু পুরনো জিনিস খুজতে। আসলে দাদুর রেখে যাওয়া একটা বাক্স খুজতে এসেছে। বাড়িতে পুরো ঢিল জমে গেছে। সানিয়ার পরিকল্পনা ছিল সে বক্স টা নিয়েই চলে যাবে তাই তার সাথে কাওকে আনেনি ছোট একটা কাজ ভেবে সানিয়া কাওকে ছাড়া এসেছে। ছোট বলত প্রায় সানিয়ার দাদুর বাড়িতেই কেটেছে তাই দাদুর বাড়ির প্রতিটা জায়গা সানিয়ার বেশ ভালো মনে আছে । অনেকদিন আসা না হলেও ছোটবেলার সেই মিষ্টি স্মৃতি ভোলার মত নয়।
যেই ভাবা সেই কাজ ।সানিয়া তার গাড়িটাকে পাশে পার্ক করে রেখে নিজের ব্যাগ থেকে একটা বড় চাবি বের করে তার পর বাড়ির সেই বড় দরজা টা সেই চাবি দিয়ে খুলে। দোতলা বাড়ি । বাড়িটা সানিয়ার দাদুভাই এর বাবা তৈরি করেছিলেন তাই বাড়িটা বেশ পুরোনো বললেই চলে ।কেও থাকে না বলে এর মেরামত ও করা হয়নি । শেষ কবে মেরামত করা হয়েছে তা না জেনে বলা যাবেনা। পুরো বাড়িটার দেয়াল গুলো আগাছায় ভরে গেছে।
দরজা খুলতেই সানিয়ার শৈশবের দিনগুলো কথা মনে পড়ে যায়। সানিয়া দরজা খুলেই প্রথমে বাড়ির তালা মারা একটি রুম এর সামনে দাঁড়ায় আর দীর্ঘ একটা নিঃশ্বাস নেয় তারপর তার পাশে রুমটা তে যায় আলমারিটা খুলে কিছে একটা খুজতে থাকে একটা চাবি খুঁজে পাই শেষ চাবি নিয়া পাশে থাকা একটা ড্রয়ার খুলতেই একটা বক্স পাই আর সেটা সানিয়া দেখতে পাই ফ্যামিলি ফটো ।সেই ছবিতে তার দাদু ভাই আর দাদুকে কে যৌবন অবস্থায় দেখে।পাশে তার দাদু ভাই এর বাবা-মা অর্থাৎ তার গ্রেট দাদুভাই আর দাদু। আর ছবিটার অর্ধেক অংশ ছেড়া। সানিয়া অপর অংশটা বক্সে খুঁজে কিন্তু পায় না । বক্স এ সে আরো দেখতে পায় একটা কলম, কিছু কয়েন , কয়েকটা চিঠি , ক্যাসেট । তারপর সানিয়া ড্রয়ার থেকে কিছু দলিল পত্র নিয়ে নেয়
রুম থেকে বের হওয়ার সময় সানিয়া আবার সেই বদ্ধ দরজার দিকে তাকায় , হঠাৎ তার মনে কৌতুহল জাগলো কারণ কখনো সে সেই রুমটা দেখেনি । কেও সেখানে যেতে না ।আর কখনো বলেনি তাকে কেও কেন যেতে দেওয়া হয়না। তার মনে এত বছরের কৌতুহল জাগ্রত হলো। সে তার দাদির বক্স থেকে একটা চাবি বের করলো আর টা দিয়ে দরজাটা খিলের চেষ্টা করতেই খুলে গেলো ।
দরজা খুলতেই একটা তীব্র হওয়া চলে গেলো মনে হলো যেন এত বছর ধরে হওয়াটা বন্দী হয়ে ছিল আজ মুক্ত হলো। রুমটা আর বাকি রুম গুলোর চেয়ে একটু বড়ই ছিল ।রুমটা দেখে কোনো এর ১৫ -১৬ বছরের মেয়ের মনে হচ্ছে । একটা বেড তার পাশে জানালা যেখানে একটা পড়ার টেবিলে রাখা হয়েছে টেবিলে এ অনেকগুলো বই রাখা যেগুলো ধুলোবালিতে ভরে গেছে । সব কিছুই প্রায় অনেক পুরোনো মনে হয় যেনো ১০০ বছর পুরনো ।তার সন্দেহ তখন সত্যি হলো যখন সে দেখতে পেলো একটা খবরের কাগজ যেখানে সাল হলো ১৩ই জুন ১৯২৬। খবরের কাগজের একটা আর্টিকেল লাল দাগ দেয়া , যেখানে লেখা আছে একটি ১৬ বছরের মেয়ের নিখোজ খবর।
সে খবরের কাগজ টা রেখে টেবিল টার কাছে এগিয়ে যায়। টেবিল এর ডেস্ক টা তালা বদ্ধ। টেবিলে এর একপাশে কিছু বিজ্ঞান বিষয়ক বই রাখা । সানিয়া বই গুল খুলে দেখতেই নিছে এক্তা ছবি পরে যায়। সানিয়া তা খেয়াল করে না । তখনই তার চোখ জাই ডেস্ক এ রাখা একটা ডাইরির উপর। খুব সুন্দর করে সাজানো মনে হয় যেন খুব যত্নে রাখা হয়েছে। ডাইরির উপরে লেখা সেলিনা জামান বাহার।
নাম দেখে সানিয়া নিশ্চিত হয় যে এইটা কোনো মেয়ের ডাইরি। দারিতা খুলতেইয় এক্তা পাতাই লেখা
- “ আজকে ঘরে জেঠি আর জেঠা এসেছিল তারা বাবাকে বলছিল যেন আমআর বিয়ে দিয়ে দেই অথচ জুলেখা আপুর ১৬ বছর হয়ে গেলেও তাকে বিয়ে দিচ্ছে না বরং আমার বিয়ে নিয়া তানা তানি করছে কিন্তু আমার বয়স ত সবে মাত্র ১৪। হইত তারা তাদের পরিকল্পনা যেন কেও না জানে তাই আমার বিয়ে দিতে চাইছে। তারা আজকে আমাকে কত ভয় দেখিয়ে ও গিয়েছে। জানিনা আমার বিরুদ্ধে তারা আর কি কি করবে।“
পরের পেইজ উলটালে সেখানে লেখা
- “মা আজ আমাকে বলল আমার বিয়ে নাকি ঠিক হয়ে গেছে মাকে আমি জুলেখা আওউর কথা বললে মা বলে, তাকে নাকি জে্ঠা এখন বিয়ে দেবেন না। তবে আমাকে কেন ব্ল্লে মা আমাকে চুপ করে থাকতে বলে। আমি ভাইয়া কে বলেছি সে যেন অন্তত আমার বিয়েটা তে বাধা দেয়। ভাই বলল সে নাকি বলে দেখেছে কিন্তু কোনো লাভ হলো
না।
তারপর সানিয়া দেখতে পায় অনেক গুলো পেইজ ছিরে ফেলা হয়েছে। আর সেশ পেইজ এ লেখা
-“ আমি সানিয়া পালিয়ে যাচ্ছিলাম কিন্তু জেথি আমাকে দেখতে পায়। তারা হইত এখন আমাকে খতম করার পরিকল্পনা করছে , কারন আমি তাদের গপন পরিকল্পনা জেনে গেছি। হয়ত আজকে আমার শেষ দিন কিন্তু আমি বাচতে চাই । আমি এখনও আশা রাখি । “
পৃষ্ঠার শেষ এ লেখা “ ভাল কিছুর অপেক্ষায়…”
যাইহোক সানিয়ার মনে প্রশ্ন জাগে কে এই সেলিনা জামান বাহার। হথাৎ নিচে পড়ে যাওয়া ছবির বাকি অংশটা তার চোখে পড়ে , ছবিটা তুললে সে দেখতে পারে একটা ১৪-১৫ বছর মেয়ের ছবি। অপরুপ সুন্দরি সেই কিশোরী সাদা-ছবি হয়ের ভালো কিছুর অপেক্ষায়…..