সিজোফ্রেনিয়া (Schizophrenia) হলো মস্তিষ্কের একটি দীর্ঘমেয়াদি মানসিক রোগ, যেখানে মানুষের ভাবনা, অনুভূতি ও আচরণে বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। সহজভাবে বলতে গেলে—মস্তিষ্ক বাস্তবতা আর কল্পনার মধ্যে পার্থক্য করতে ভুল করে ফেলে।
সহজভাবে বোঝা:
- একজন সিজোফ্রেনিয়া রোগী এমন কিছু শুনতে, দেখতে বা বিশ্বাস করতে পারেন যা আসলে নেই।
- তিনি মনে করতে পারেন কেউ তাকে ক্ষতি করতে চাইছে, বা তার সম্পর্কে গোপনে কথা হচ্ছে।
- কথাবার্তা ও চিন্তাভাবনা এলোমেলো হয়ে যেতে পারে।
- দৈনন্দিন কাজ, পড়াশোনা বা সম্পর্ক বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
প্রধান লক্ষণ
- হ্যালুসিনেশন (Hallucination) – বাস্তবে না থাকা জিনিস দেখা, শোনা বা অনুভব করা (যেমন: অদৃশ্য মানুষের কণ্ঠ শোনা)।
- ডিলিউশন (Delusion) – বাস্তবতার বাইরে দৃঢ় বিশ্বাস রাখা (যেমন: কেউ গোপনে তাকে নজরদারি করছে)।
- অগোছালো চিন্তা ও কথা – কথার মধ্যে ধারাবাহিকতা না থাকা, বিষয় থেকে হঠাৎ অন্যদিকে চলে যাওয়া।
- নেগেটিভ লক্ষণ – আবেগ কমে যাওয়া, কথা কম বলা, কাজ করার আগ্রহ হারানো।
কারণ
- জেনেটিক (বংশগত) – পরিবারের কারও হলে ঝুঁকি বেশি।
- মস্তিষ্কের রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতা (ডোপামিন, গ্লুটামেট ইত্যাদি)।
- পরিবেশগত চাপ – গর্ভাবস্থায় পুষ্টির অভাব, ভাইরাস সংক্রমণ, শৈশবের মানসিক আঘাত ইত্যাদি।
চিকিৎসা
- অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ – মস্তিষ্কের রাসায়নিক ভারসাম্য ঠিক করে।
- থেরাপি – কাউন্সেলিং, সাইকোথেরাপি।
- পরিবারের সহযোগিতা – রোগীর প্রতি ধৈর্য ও সমর্থন খুব জরুরি।
- দীর্ঘমেয়াদে নিয়মিত চিকিৎসা নিলে অনেকে স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে।