ইরাকের রাজধানী বাগদাদে ‘কুইন অব ক্রাইম’ নামে পরিচিত ইংরেজ লেখক আগাথা ক্রিস্টির ঐতিহাসিক বাড়িটি ধসে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানা গেছে। টাইগ্রিস নদীর তীরে অবস্থিত এই বাড়িতে তিনি বহু বছর ধরে বসবাস করেছিলেন।
বাগদাদের কারাদাত মরিয়ম জেলার ঐতিহাসিক এই বাড়িটির দেয়ালে ‘সাবধান! ধসের ঝুঁকি’ লেখা একটি সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। ধ্বংসের ঝুঁকিতে থাকা এই বাড়িতে আগাথা ক্রিস্টির বাগদাদে থাকার স্মৃতি রয়েছে, যা এই অঞ্চলের ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে।
ইরাকি ইতিহাসবিদ আদিল আরদাভি তুর্কি সংবাদ সংস্থা আনাদোলুকে বলেছেন, 'আগাথা ক্রিস্টির স্বামী, পুরাকীর্তি বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তার আবিষ্কৃত অনেক নিদর্শন এখন জাদুঘরে প্রদর্শিত হচ্ছে। ক্রিস্টি তার স্বামীর সঙ্গে প্রায় ১৩ বছর ধরে ইরাকে বসবাস করেছেন। তিনি ভ্রমণ পিপাসু ছিলেন। এজন্য ইরাক থেকে প্রতিবেশী দেশগুলোতেও ভ্রমণ করেছিলেন।
আরদাভি জানান, ক্রিস্টি যখন বাগদাদে বসবাসের সিদ্ধান্ত নেন, তখন তিনি টাইগ্রিস নদীর ধারে একটি বাড়ি বেছে নিয়েছিলেন। বাড়িটি বাগদাদের পুরনো স্থাপত্যের প্রতীক ছিল। প্রচলিত আছে যে এই বাড়িটি ইরাকের রাজা প্রথম ফয়সালের ভাই আলীর ছিল।
আরদাভি বলেন, আগাথা ক্রিস্টি বাগদাদ নিয়ে অনেক উপন্যাস লিখেছেন। এমনকি তার 'মার্ডার অন দ্য ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেস' উপন্যাসেও এই শহরটির উল্লেখ রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাগদাদে বসবাস করেছেন, তাই তিনি ইরাকি জনগণকে ভালোবাসতে শুরু করেন এবং ইরাকের বন্ধু হয়ে ওঠেন।
আরদাভি উল্লেখ করেন, আগাথা ক্রিস্টি যে বাড়িতে থাকতেন তা এখন জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ইরাকি কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় বাগদাদের ব্রিটিশ দূতাবাস এই বাড়িটিকে একটি জাদুঘরে পরিণত করতে পারে।
এদিকে বাগদাদের ‘বুক সেলার্স স্ট্রিট’ নামে পরিচিত মুতানাব্বি স্ট্রিটের একজন বই বিক্রেতা হামজা আবু সালিহ বলেন, আগাথা ক্রিস্টি ১৯৩০ এর দশকে ইরাকে ছিলেন। এখনও তার উপন্যাসের প্রতি ইরাকিদের প্রচন্ড আগ্রহ রয়েছে।
উল্লেখ্য, আগাথা ক্রিস্টি ১৮৯০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের ডেভনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৭৬ সালের ১২ জানুয়ারি ৮৫ বছর বয়সে মারা যান। বিখ্যাত এই লেখক ৬৬টি গোয়েন্দা উপন্যাস এবং ১৪টি ছোটগল্প সংকলনসহ মোট ৮০টি বই লিখেছেন। তিনি এরকুল পোয়ারো এবং মিস মার্পল সিরিজের জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। তার বইগুলো আজও সারা বিশ্বে ব্যাপকভাবে পঠিত হয়।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি