
হৃষিকেশ দাস ঢাকার একজন জমিদার ছিলেন। পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের রূপলাল দাসের সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল কিনা তা আমার জানা নেই। তবে টাকা পয়সা ছিল অনেক, তবু তাকে সে সময়কার গণ্যমাণ্য এলাকাবাসিরা পাত্তা দিত না।
- ঐতিহাসিকদের মতে, হৃষিকেশ দাস একদিন বলধা গার্ডেনে গিয়েছিলেন বলধার জলসা ঘরের জলসা দেখতে। তবে প্রচণ্ড অপমানিত হয়ে তাকে ফিরে আসতে হয়।
- শোনা কথা, রূপলাল বাবু যেমন আহসান মঞ্জিল দেখে রূপলাল হাউস বানিয়েছিলেন, তেমনি হৃষিকেশ বাবু বলধা গার্ডেনের জলসায় অপমানিত হয়ে বানালেন প্রাসাদসম রোজ গার্ডেন।
- অবশ্য শুরুতে এমন প্রাসাদসম ভবন নির্মাণ করেননি। প্রথমে তিনি কে এম দাস রোডে ২২ বিঘা জমি কেনেন। তারপর সেই জমিতে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে মাটি ও গোলাপ এনে একটি গোলাপ বাগান তৈরি করেন, সেটা ১৯৩০ সালের ঘটনা।
- ১৯৩১ সালে সেই গোলাপ রেখে পেছনে কোরিনথিয়ান পিলার বিশিষ্ট প্রাসাদসম যে ভবন নির্মাণ হয়, সেটিই কালে কালে রোজ গার্ডেন হিসেবে খ্যাতি লাভ করে।
- হৃষিকেশ দাস ভবন নির্মাণের অল্প কিছু দিন পর অর্থাভাবে পড়লে সেটি বিক্রি করে দেন ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদের কাছে। ভবনটির নাম রাখা হয় রশিদ মঞ্জিল ।
- এখনও ভবনটির গায়ে আব্দুর রশিদের নাম খোদাই করা দেখতে পাওয়া যায়। বিখ্যাত প্রভিন্সিয়াল লাইব্রেরি এখানেই প্রতিষ্ঠিত হয়, যার মালিক ছিলেন ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ।
- ঢাকার টিকাটুলি এলাকার কে এম দাস লেনে অবস্থিত রোজ গার্ডেন সরকার কিনে নেয়। এরপর দীর্ঘ সংস্কার শেষে এখন সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১১ টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত খোলা। রবিবার ছুটির দিন এবং সোমবার অর্ধবেলা বন্ধ থাকবে। প্রবেশ ফি ৩০ টাকা!