Posts

ইন্টারভিউ

শেয়ার বাজার কি এবং কিভাবে বিনিয়োগ করতে হয়?

August 16, 2025

Chameli Akter

111
View

শেয়ার বাজার বর্তমানে টেলিভিশন বা পত্রিকায় নিয়মিত ব্যবহৃত একটি শব্দ। এর খবর আমরা সবসময়ই দেখে থাকি। শেয়ার ব্যবসা জনপ্রিয় একটি ব্যবসা যা যেকোন পেশার মানুষ সহজেই ঘরে বসে করতে পারেন। 

শেয়ার বাজার কি? 

শেয়ার ক্রয়ের মাধ্যমে কোম্পানির বাইরের যে কেউ একটি কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার হতে পারেন। যেকোন কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠন আয় বাড়ানোর জন্যই মূলত শেয়ার বিক্রয় করে থাকে, আবার যে ব্যাক্তি শেয়ার ক্রয় করেন সেও মুনাফা অর্জনের উদ্দেশ্যেই ক্রয় করে থাকে। 

টাকা বা পুঁজি বিনিয়োগের একটি মাধ্যম হচ্ছে শেয়ার বাজার। একে পুঁজি বাজারও বলা হয়। শেয়ার হচ্ছে কোম্পানি মালিকানার অংশ। বাজার বলতে আমরা স্বাভাবিকভাবে যেমন কেনাবেচার স্থান বুঝি তেমনই। শেয়ার বাজার হচ্ছে কোম্পানির মালিকানা স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে কেনাবেচা করার স্থান।

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ

শেয়ার বাজারে দুইভাবে বিনিয়োগ করা যায়।

 আরেকটু নির্দিষ্ট করে বললে দুই ধরনের মার্কেটের মাধ্যমে বিনিয়োগ করা সম্ভব। নিচের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা আপনার জন্য যথেষ্ট হবে ইন শা আল্লাহ!

প্রাইমারি মার্কেট 

প্রাইমারি মার্কেটে প্রবেশ করতে হলে নূন্যতম ৫০০০ থেকে ৬০০০ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। এর দ্বারা সরাসরি কোম্পানির শেয়ার হোল্ডার হওয়া যায়। প্রত্যেকটি কোম্পানির শেয়ারের একটা ফেস ভ্যালু থাকে। 

একটা কোম্পানি যখন তার শেয়ার মার্কেটে ছাড়ে তখন ফেস ভ্যালুর সাথে প্রিমিয়াম যোগ করে দেয়। যেমন- কোনো কোম্পানির শেয়ারের ফেস ভ্যালু ২০ টাকা এবং তারা ১০ টাকা প্রিমিয়ামসহ শেয়ারের দাম নির্ধারণ করে ৩০ টাকা। 

সেকেন্ডারি মার্কেট

প্রাইমারি শেয়ার কেনার পর যদি কেউ তা তৃতীয় কোনো ব্যাক্তির কাছে বিক্রয় করে তখন সেটা সেকেন্ডারি শেয়ারে পরিণত হয়। এই মার্কেটে বিনিয়োগ কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হয় কেননা এটি সরাসরি কোম্পানির কাছ থেকে কেনা হয় না। 

সেকেন্ডারি মার্কেটে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমাণও বেশি হয়ে থাকে। এখানে শুরুতেই ২০০০০ বা ৩০০০০ টাকা বিনিয়োগ করতে হয়। তাই সেকেন্ডারি শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে চাইলে শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকতে হবে।

বিনিয়োগের জন্য দরকারী একাউন্ট 

শেয়ার বাজারে বিনিয়োগের জন্য প্রয়োজন প্রচুর বাজার গবেষণা আর ধৈর্য্য। কেননা শেয়ার বাজার বেশ জটিল আর ঝুঁকি পূর্ণ একটি স্থান। এবার আসা যাক শেয়ার বাজারে কিভাবে বিনিয়োগ করা যায় সেই আলোচনায়। চলুন দেখে নেই এর জন্য কি কি প্রয়োজন। 

▶️ বিও ( BO=Beneficiary Owner’s) একাউন্টঃ শেয়ার বাজারে ব্যবসা করতে চাইলে প্রথমেই একজন ব্যক্তি কে বিও একাউন্ট খুলতে হবে। এই একাউন্টটি খুলতে হবে ব্রোকার হাউজে। ব্রোকার হাউজ হলো লাইসেন্স প্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান যারা শেয়ার বাজারে সাধারন বিনিয়োগকারীদের জন্য কাজ করে থাকেন।

এই একাউন্ট সাধারণ ব্যাংক একাউন্টের মত অর্থ লেনদেনের জন্য ব্যবহার করা হয় কিন্তু তা শুধুমাত্র শেয়ার ব্যবসার জন্য। বিও একাউন্ট একক বা যৌথভাবে খোলা যায়।

▶️ ডিম্যাট একাউন্টঃ এই একাউন্টের মাধ্যমে শেয়ারের ইলেক্ট্রনিক কপি রাখা যায়। প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি উভয় মার্কেটে বিনিয়োগের জন্য ডিম্যাট একাউন্ট খুলতে হয়।

একাউন্ট খোলার জন্য যে সকল কাগজপত্র প্রয়োজন তা নিম্নরুপ -

▶️ বাংলাদেশের যেকোন ব্যাংকে একটি একাউন্ট। প্রবাসী বাংলাদেশীর একটি এফসি বা এনআরবি একাউন্ট। 

▶️ বিও একাউন্ট খোলার আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হবে সিকিউরিটিজ লিমিটেড এর ওয়েবসাইট থেকে। 

▶️ আবেদনপত্র পূরনের জন্য লাগবে- আবেদনকারী এবং নমিনির ছবি, উভয়ের জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি, ব্যাংক চেকের ছবি বা স্ক্যান কপি। যৌথ আবেদনকারী থাকলে তার ছবি এবং জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি।  

পরিশেষে

শেয়ার বাজারের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত টাকা। শেয়ার বাজার সম্পর্কে সঠিক জ্ঞানের অভাবে অনেকে পুঁজি বিনিয়োগ করে ফতুর হয়েছেন। আবার অনেকে সঠিক জ্ঞান ও কৌশল অবলম্বন অল্প পুঁজি নিয়ে এই ব্যবসায় অনেক মুনাফা অর্জন করেছেন। শেয়ার বাজার সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য, বিনিয়গকারীদের মতামত, আলোচনা এবং নিয়মতান্ত্রিক ভাবে চললে এই ব্যবসায় লাভ করা সম্ভব।

Comments

    Please login to post comment. Login