রাত ২টা।
রাফি জানালার ধারে বসে। বাইরের অন্ধকারটা যেন তার ভেতরের অন্ধকারকে আরও গভীর করে তুলছে। ঘরের আলো নিভে আছে, শুধু ফোনের আলো মাঝে মাঝে জ্বলে উঠে নিভে যাচ্ছে।
চোখে ঘুম নেই, মগজে শুধু চিন্তা —
*“আমি কি সঠিক পথে আছি?”*
*“এত পরিশ্রম করেও কেন কিছুই ঠিকঠাক হচ্ছে না?”*
*“বাকিরা কেমন করে এত সফল হয়?”*
এসব প্রশ্ন যেন মস্তিষ্কে দহন ধরিয়েছে। রাফির কোনো সমস্যা ছিল না — না অর্থের, না খাবারের, না আশ্রয়ের। কিন্তু ছিল এক ভয়াবহ রোগ, *চিন্তা করার অতিমাত্রা।*
---
*চিন্তার শুরুটা ছিল স্বপ্ন দিয়ে*
রাফি ছোটবেলা থেকেই স্বপ্নবাজ। ডাক্তার হবে, মা-বাবার স্বপ্ন পূরণ করবে। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে চাপ, সমাজের প্রত্যাশা, তুলনা আর “তুই পারবি না” শোনতে শোনতে সে নিজের উপরেই সন্দেহ করতে শুরু করে তার পাথেয় হয়ে ওঠে। প্রতিটি পদক্ষেপের আগে ১০ বার ভাবা, পিছিয়ে যাওয়া, আবার ভাবা — যেন জীবনটা থেমে যায় মগজের গোলকধাঁধায়।
---
*একটা ছোট্ট ঘটনা পাল্টে দিলো সব*
একদিন সকালে রাফির ছোট বোনের একটা কথা তার মনে গেঁথে যায় —
*"ভাইয়া, এত ভেবে কী লাভ? চেষ্টা না করলে জানবি কিভাবে পারবি কি পারবি না?"*
সেই কথাটা যেন মনের অন্ধকারে আলো হয়ে আসে। সেদিনই রাফি ঠিক করল —
*চিন্তা করবে, কিন্তু কাজ বন্ধ রাখবে না। ভাববে, কিন্তু ভয় পাবে না।*
---
*চিন্তা সবসময় খারাপ না... কিন্তু মাত্রা গুরুত্বপূর্ণ*
চিন্তা মানুষকে সচেতন করে, ভুল থেকে শেখায়। কিন্তু যদি সেটা কাজের বদলে স্থবিরতা তৈরি করে, তবে তা বিষের মতো। রাফি শিখে গেল —
*“চিন্তা করো, কিন্তু থেমে থেকো না।”*
---
*উপসংহারঃ*
আজ রাফি এগিয়ে যাচ্ছে। এখনো রাত জাগে, এখনো ভাবে — কিন্তু এখন চিন্তা তার শত্রু নয়, বন্ধু।
এই গল্প আমাদের সবার। আমরা সবাই কোনো না কোনো ভাবে চিন্তার জালে আটকে পড়ি। কিন্তু সেই জাল কাটার চাবি আছে আমাদের হাতেই —
*সাহস, ছোট ছোট পদক্ষেপ, আর বিশ্বাস।*
---
*📌 লেখক:*
মোহাম্মদ তাওসিফ
(ফিকশন ফ্যাক্টরি)
---