Posts

প্রবন্ধ

ফটোগ্রাফি ইনসাইড- লাইট, টাইম ও স্পেস।

May 31, 2024

সাইদ সুমন

215
View
আমরা পৃথিবীর সাথে যোগাযোগ করতে পারি কারন আলো আছে,  অন্ধকারে শুধু শব্দ শোনা যায়, দেখা যায়না, তার মানে দেখার জন্য চোখ মূল শর্ত নয়, আলোই মূল শর্ত,সূর্য যদি না থাকতো মানুষ কৃত্রিম আলোর উপর দিয়েই চলতে হতো, আলো যখন সেপ্স এ পরে,  আমাদের চোখ অসম্ভব দক্ষতায় কালারগ্রেড করে বা প্রত্যেকটা টোন কে আলাদা করে দেখে তার সেপ্সে, ক্যামেরা চেষ্টা করছে মানুষ যে দক্ষতায় কালার, টোন, depth, কে কন্ট্রোল করে, তার ধারে কাছে যাওয়ার জন্য।

ফটোগ্রাফি তিনটি বিষয় নিয়ন্ত্রন করে,লাইট,টাইম ও স্পেস। 

ক্যামেরা সব সময় আলোর উৎসে ফোকাস করে, এবং তার স্পেসের মুল উৎসের আলো থেকে রিডিং নিয়ে কম্পোজিশন করে, এবং আলো যখন স্পেসে পরে তখন কোথাও বেশি বা কোথাও কম এর মধ্যে দিয়ে হাইলাইট ও শেড তৈরি হয়, আবার এর মাঝামাঝি একটা টোন ও থাকে, আসলে একটা ছবিতে অনেক সূক্ষ্ম টোন থাকে যা তৈরি হয় লাইট এর বিতরনের মধ্যে দিয়ে। 

এবং  আলো যেমন গুরুত্বপূর্ণ তখন তার ছায়াও গুরুত্বপূর্ণ, একটা ছবিতে মাত্রা দেয় তার ছায়া, আর্টিফিশিয়াল লাইটে ছায়াকে বাদ দেওয়া যায়, কিন্তু নেচারাল লাইটে  ছায়াকে কন্ট্রোল করেই ফটোগ্রাফি করতে হয়,আলোকে নিয়ন্ত্রন করা হয় সাটার স্পিড, এপ্যেরেচার,আই-এসও, দিয়ে, শুধু এক্সপোজার একটু এদিক ওদিকে হলেই একটা ছবি দেখতে ভিন্ন লাগে, এবং ফটোগ্রাফার সবসময় একটা ভালো লাইটের সন্ধানে থাকে, ভালো ও মন্দ লাইট ও বিষয়টা নয়, বিষয়টা আমার কাছে different light, যেটা নাটকীয়।

 
একটা ভিন্ন লাইট তৈরি হয় পরিস্থিতি অনুযায়ী, কোথাও হয়ত বাধা পেয়ে বা মেঘ দিয়ে সূর্য ডিফিউজড হয়ে , কিংবা বৃষ্টি শেষে ঝকঝকে লাইট, নাটকীয় লাইটের কোন শেষ নাই, শুধু ফটোগ্রাফার এর ভিন্ন লাইট চেনার ক্ষমতা থাকতে হয়, একটা নাটকীয় লাইট ছবির পঞ্চাশ শতাংশ কাজ আগায়ে রাখে এর পরে ফটোগ্রাফার একটা কম্পোজিশন খুজতে থাকে, এবং রাইট মোমেন্ট ও রাইট ক্লিক একটা ভালো ছবি তৈরি হয়।

স্টুডিও লাইট সূর্যের আলোকে কপি করার চেষ্টা করে, ডিফিউজার ব্যবহার করে কখনও লাইট সামনে পিছনে করে আলো নিয়ন্ত্রন করে, আরও নানা টেকনিক দিয়ে আর্টিফিশিয়াল লাইট তৈরি করা হয়।


সময় এর আলাপে গেলে, সময় খুবই tricky বিষয় ফটোগ্রাফারের জন্য, প্রথমত পৃথিবী চলমান  কখনও থামেনা সেখানে স্টিল ফটো মোমেন্ট ফ্রিজ করে ও একেবারে থামিয়ে দেয়, এবং সময় কখনও অতীত ও ভবিষ্যতে থাকেনা, সে সব সময় বর্তমানে থাকে, ফটোগ্রাফি এই বর্তমান কে রেকর্ড করে যার সাথে অতীতের রেফারেন্স থাকে আর ভবিষ্যতে কি হতে পারে তার একটা সম্ভাব্য ধারনা থাকে। 

 
ফটোগ্রাফার সাটার স্পিড ও অনান্য টেকনিক দিয়ে ইমেজের মোশন নিয়ন্ত্রন করে, লং এক্সপজার ছাড়া আর বাদ বাকি সব ইমেজ ফ্রাক্সন অফ সেকেন্ড, এক সেকেন্ডের চারশো ভাগের এক ভাগ টাইম বা আরও বিচিত্র কম্বিনেশন, এবং একজন মাস্টার ফটোগ্রাফারের এর সমস্ত ক্লাসিক ছবির সাটার স্পিড যোগ করলে কয়েক মিনিট এর বেশী হবেনা, কিন্তু তার ফটোগ্রাফি জার্নি হয়ত পঞ্চাশ বছরের।

 ফটোগ্রাফার এর স্পেস এর আলোচনা করলে,ফটোগ্রাফার ভিউ ফাইনডারে চোখ দেওয়ার পরে, তার ফোকাল লেংথ দিয়ে কতটুকু

সেপ্স সে নিবে ঠিক করেন, বড় একটা অংশ থেকে এক খণ্ড নেওয়ার মতো, আবার একটা  ইমেজের মধ্যেও নেগেটিভ সেপ্স বা খালি স্পেস থাকে যা একটা ফটোগ্রাফির মাত্রা তৈরি করে। আবার ফটোগ্রাফার যখন একটা নির্দিষ্ট ফোকাল লেন্থে সব ছবি ক্যেপচার করে তাহলে একটা ভিজ্যুয়াল ধারাবাহিকতা তৈরি হয়। 

স্টিল ফটোগ্রাফি লাইট, টাইম ও সেপ্স এর কম্বিনেশন, এইখানে ফটোগ্রাফার ম্যানুয়ালি ইমেজ ক্রিয়েট করে একটা কাঙ্ক্ষিত ছবির জন্য, ক্যামেরা যে এক্সপজার এর সাজেশন দেয় তাকে অনেক সময় নির্বোধ এর মতো সাজেশন বলেই মনে হয়, কি ফোকাল লেন্থ হবে, সাটার স্পিড কি হবে এবং কতটুকু ফ্রেম হবে এগুলো একজন ফটোগ্রাফার যদি ম্যানুয়ালি ঠিক করে না দেয়, তাহলে ক্যামেরা বা মেশিন ছবি তুলে মানুষের ব্রেন ও মন উপেক্ষিত হয়।

এবং লাইফ এর প্রতিটি মুহূর্ত endless সিনেমা বা ঘটনা/ ইতিহাস যেখান থেকে স্ক্রিনসট নেওয়ার মতো বেঁছে নেন একটা ইমেজ ফটোগ্রাফার। এই যে চলমান ভিজ্যুয়াল তার মধ্যে যে অংশটি তার প্রয়োজন সেই অংশটুকু তিনি নেন, বাদ বাকি তিনি বিয়োগ করেন।





Comments

    Please login to post comment. Login