গ্রীষ্মের ছুটি শুরু হয়েছে, আর সমুদ্র সৈকতে বাতাসে লবণাক্ত হাওয়া বইছে। নেহা ছোট্ট ভ্রমণের জন্য সমুদ্রের ধারে ছোট্ট রিসোর্টে এসেছে, তার মনের ক্লান্তি আর ব্যস্ত শহরের জীবনের চাপ দূর করতে।
সৈকতের বালিতে হাঁটতে হাঁটতে সে লক্ষ্য করল একজন ছেলে—অনিক—সামনের দিকে বই পড়ছে, আর মাঝে মাঝে সমুদ্রের ঢেউয়ের দিকে চোখ রাখছে। নেহার মন কৌতূহল বশত হঠাৎ হঠাৎ কেঁপে উঠল।
প্রথম দেখার মুহূর্তে তাদের চোখ মেলল। নেহার হৃদয় অদ্ভুতভাবে দ্রুত ধড়ধড় করতে লাগল। অনিকও কিছুটা লাজুক হাসি দিল, আর চোখের মায়ায় যেন সমুদ্রের তরঙ্গের মতো উত্তেজনা ছড়ালো।
পরের দিন, নেহা ঠিক সেই সময়ে সমুদ্র সৈকতে আবার এল। অনিকও সেখানে ছিল। তারা প্রথমে শুধু “হ্যালো” বলল, তারপর ছোটখাটো আলাপ শুরু হলো—হাওয়া, সূর্য, সমুদ্র, বই। ধীরে ধীরে কথোপকথন থেকে বোঝা গেল, তারা একে অপরের সঙ্গে অনেক মিল আছে।
“তুমি কি সমুদ্র ভালোবাসো?” নেহা জিজ্ঞেস করল।
“হ্যাঁ,” অনিক উত্তর দিল। “এখানে বসে মনে হয়, সবকিছু ধীরে চলে। জীবনের সব জটিলতা যেন দূরে চলে যায়।”
নেহা হেসে বলল, “আমিও তাই অনুভব করি। আর তোমার সঙ্গে কথা বলে সময় আরও মধুর লাগে।”
দিনগুলো কেটে গেল। সকালে তারা সমুদ্রের ধারে হাঁটত, দুপুরে রিসোর্টের ক্যাফেতে বসে গল্প করত। সন্ধ্যায় সূর্য ডুবে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা বালিতে বসে চুপচাপ আকাশের রঙ দেখত। ছোট ছোট হাসি, অদ্ভুত খেয়াল, হাতের আলিঙ্গন—সব মিলিয়ে ধীরে ধীরে তাদের সম্পর্ক প্রেমে রূপ নিল।
একদিন অনিক সাহস করে বলল, “নেহা, আমি জানি আমরা কেবল ছুটিতে পরিচিত হয়েছি। কিন্তু এই কয়েকদিনের মধ্যেই আমি বুঝতে পেরেছি—আমি তোমাকে চাই। তোমার সঙ্গে সময় কাটাতে চাই, শুধু এই ছুটিতে নয়, বরং সারাজীবন।”
নেহা চোখে উজ্জ্বল জল ধরে হাসল। “আমি ও চাই, অনিক। তুমি আমার এই গ্রীষ্মের ছুটিকে বিশেষ করে দিয়েছ।”
সেই মুহূর্তে সমুদ্রের ঢেউ যেন তাদের প্রেমের সাক্ষী হয়ে উঠে। বাতাসে লবণ আর সূর্যের আলো মিশে তাদের হৃদয়ে মধুর উত্তেজনা জাগালো।
শেষ পর্যন্ত তারা বুঝল, কখনও কখনও প্রেম আসে ঠিক যেমন ঋতু—ধীরে ধীরে, কিন্তু হৃদয়কে পুরোপুরি ভরে দিয়ে। সমুদ্র, সূর্য, হাওয়া—সব মিলিয়ে জন্ম নিল এক অদ্ভুত সুন্দর ঋতুর প্রেম।