নিস্তব্ধ পার্কে একাকী বসে থাকে বেঞ্চ,
শীতের কুয়াশা লেপ্টে থাকে তার গায়ে,
ঝরা পাতার মতো কিছু স্মৃতি—
বাতাসে উড়ে আসে, হারিয়ে যায়।
এক বিকেলে বসেছিল দু'জন—
ছেলেটির চোখে জ্বলছিল নরম রোদ,
মেয়েটির হাতে ছিল লাল ফুলের ডালা।
তারা ফিসফিস করে বলেছিল কিছু কথা,
যা শুধু বেঞ্চ শুনেছিল,
শুধু গাছপালা বুঝেছিল।
তারপর একদিন মেয়েটি এল একা,
মেঘ ঢাকা আকাশের মতো বিষণ্ন মুখে।
বৃষ্টির ফোঁটা গড়িয়ে পড়ল তার হাত থেকে,
ঠিক বেঞ্চের ভেজা কাঠের ওপর।
সে কিছু বলল না—
শুধু দীর্ঘশ্বাস ফেলল,
আর বেঞ্চ জানল,
প্রেমের গল্পে কখনো কখনো দুঃখও থাকে।
বছর পেরিয়ে যায়, সময় গলে পড়ে—
কেউ আর বসে না সেই বেঞ্চে,
শুধু হলুদ পাতা এসে জড়ো হয়,
শুধু চাঁদের আলো এসে প্রশ্ন করে,
“তারা কি আর আসবে না?”
একদিন এক বৃদ্ধ কবি এল—
তার চোখে ছিল দিগন্তের ক্লান্তি,
তার কাগজে লেখা ছিল কিছু কবিতা।
সে বসে থাকল দীর্ঘক্ষণ,
হাত বুলিয়ে দিল পুরনো বেঞ্চের গায়ে,
মৃদু হাসল, তারপর ফিসফিস করে বলল—
"ভালোবাসার মতো প্রতীক্ষাও চিরকাল বেঁচে থাকে।"
তারপর—
ফের বসন্ত আসে, ফের কেউ বসে,
ফের কেউ অপেক্ষা করে, কেউ চলে যায়।
কিন্তু বেঞ্চ থেকে যায়,
সমস্ত গল্পের সাক্ষী হয়ে—
একটি প্রেম, একটি অপেক্ষা,
একটি জীবন, একটি সময়।