ছোট্ট এক শহরে থাকতো রাফি আর নিশা। ওরা দু’জন ছোটবেলা থেকেই একে অপরের বন্ধু। খেলাধুলা, পড়াশোনা সবকিছুতে দু’জন দু’জনকে সাহায্য করতো। সময়ের সাথে সাথে বন্ধুত্বটা এক অদ্ভুত টানে বাঁধা পড়লো—যেটা প্রেমের নামেই সবাই চেনে।
রাফি নিশার চোখের দিকে তাকিয়ে বলেছিল,
— "নিশা, আমি হয়তো খুব বড়লোক হতে পারবো না, কিন্তু প্রতিদিন তোমাকে হাসানোর প্রতিশ্রুতি আমি দিতে পারি।"
নিশা মুচকি হেসে উত্তর দিয়েছিল,
— "আমার আর কিছু চাই না রাফি, শুধু তুমি আমার পাশে থাকলেই চলবে।"
দিনগুলো সুন্দর কাটতে লাগলো। কিন্তু হঠাৎই রাফির জীবনে এলো কঠিন সময়। তার বাবা মারা গেলেন, সংসারের দায়-দায়িত্ব তার কাঁধে এসে পড়লো। টিউশনি আর খণ্ডকালীন কাজ করে পরিবারের খরচ চালাতে লাগলো সে।
নিশা সবসময় তাকে সাহস দিতো। একদিন নিশা চুপচাপ রাফির দিকে তাকিয়ে বলেছিল—
— "রাফি, যদি কোনোদিন আমার পরিবার আমাদের সম্পর্ক মানতে না চায়, তখনো তুমি কি আমার হাত ছাড়বে না?"
রাফি নিশার হাত শক্ত করে ধরে বলেছিল,
— "না নিশা, আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তোমার হাত ছাড়বো না।"
কিন্তু বাস্তব জীবন সবসময় প্রতিশ্রুতি মানে না। নিশার পরিবার ধনী ছিল, তারা মেয়েকে বিদেশে পড়তে পাঠালো। রাফি তাকে ছাড়তে চায়নি, কিন্তু পরিস্থিতি তাদের আলাদা করে দিলো।
বিদেশে যাওয়ার আগে নিশা কেঁদে বলেছিল—
— "রাফি, আমি ফিরে আসবো। তুমি শুধু আমার জন্য অপেক্ষা করো।"
রাফি আজও সেই প্রতিশ্রুতির অপেক্ষায় আছে। শহরের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে মাঝে মাঝে সে নিশার কণ্ঠস্বর শুনতে পায়, চোখ বন্ধ করলে মনে হয়—নিশা এখনো তার পাশেই আছে।
কিন্তু নিশা আর ফিরে আসে না। রাফির বুকের ভেতরে শুধু একটা অপুর্ণ প্রতিশ্রুতির গল্প বেঁচে থাকে...