চিরঞ্জীব
-আপনি বেহেশতে যেতে চান না তাহলে এই কারণ?
-হ্যা,বললাম তো।
-আরেকবার ক্লিয়ার করবেন?তবে আমি এই শর্তে শুধু কথা বলব আমি শুধু যুক্তির খাতিরে যুক্তি দেব।আমার কথাই যে কুরআনের কথা এমনটা নয়।
-বেহেশতে শুধু সুখ আর সুখ সেকেন্ড অপশন নেই।যেখানে দুঃখ নেই সেখানে সুখ উপলব্ধির বিষয় হবে না।
-বেহেশতবাসীরা হাশরের মাঠে জাহান্নামীদের পরিণতি দেখেই জান্নাতে যাবে।
-সেটা আর কতদিন মনে থাকবে?
-আপনি কি এটা জানেন জাহান্নামে দুঃখ ছাড়া কিছু নেই।শুধু শাস্তি এবং শাস্তি।
-হ্যা জানি।
-তো জাহান্নামে সুখ নেই বলে কি জাহান্নামিরা কষ্ট উপলব্ধি করবে না?
-তাদের আঘাত করা হবে তারা কষ্ট পাবে।তাদের পুঁড়ানো হবে তারা কষ্ট পাবে।কিন্তু বেহেশতের বিষয় ভিন্ন।
-আঘাতে যদি কষ্ট লাগে,সুখ অনুপস্থিত থাকাসত্ত্বেও অনুভুত হয় তাহলে দুঃখ অনুপস্থিত থাকাসত্ত্বেও যখন বিভিন্ন স্বাদের খাবার খাবে জিহবা দিয়ে স্বাদ নেবে তখন তখন সুখ অনুভুত হবেই।বরং ভালোভাবেই অনুভুত হবে।সে জিহবা সে শরীর দুনিয়ার তুলনায় আরও সুঘটিত,আরও ক্ষমতাসম্পন্ন হবে।
-আরে রাখো তোমার অনুভুতি।কোথায় বেহেশত,কোথায় জাহান্নাম এসব কি কখনো দেখেছো?
-মৃত্যু কি কখনো দেখেছি তাও আমি আপনি বিশ্বাস করি যে আমরা মরবই।
-শোনো,আর গতকালকের উত্তরটা আমি পাইনি।
-সৃষ্টিকর্তার বিষয়ে?
-হ্যা।
-কি যেন বলেছিলেন?
-সৃষ্টিকর্তা সব পারেন নিজেকে ধ্বংস করতে পারে না কেন?
-সৃষ্টিকর্তা হওয়ার একটা গুণ হলে তিনি নিজে ধ্বংস হবেন না।নিজেকে নিজে ধ্বংস করাটা গুণ নয় দোষ।সৃষ্টিকর্তার মধ্যে কোন দোষ নেই।
-তাহলে কি সৃষ্টিকর্তা নিজেকে ধ্বংস করতে অক্ষম?
-নিজেকে নিজে ধ্বংস করাটা অক্ষমতা না এটা স্বক্ষমতা।স্রষ্টা অক্ষম নন স্রষ্ট্রা স্বক্ষম।
-মানুষ নিজেকে সৃষ্টি করতে পারে স্রষ্টা পারেন না কেন?
-মানুষ নিজেকে সৃষ্টি করতে পারে মানে?
-মানুষ সন্তান জন্ম দিতে পারে স্রষ্টার সন্তান নেই কেন?
-মানুষ সন্তান জন্ম দেয় মানে নিজেকে সৃষ্টি করে না।মানুষ যদি সন্তান জন্ম দিতে পারত তাহলে নিঃসন্তান মানুষ থাকত না।যাদের সন্তান হয় তারা এটা তৈরি করে না।বরং তৈরি হয়।মানুষ সেই পদ্ধতির একটা অংশে নিজেরাই ব্যবহৃত হয়।একটা ভ্রুণকে জীবিত মানব শিশু হিসেবে আমরা বের করে আনতে পারি না।সেটা আমাদের আয়ত্তাধীন নয়।মায়েরা বলতে পারে,সে সন্তানসম্ভবা হয়েছে সে বলতে পারে না আমি অমুখ তারিখ সন্তান সম্ভবা হবো।আশা করছি উত্তর পেয়েছেন।
-আচ্ছা,স্রষ্টা সন্তান জন্ম দিতে পারেন না কেন?
-প্রশ্নটাটাতে পারেন না,না বলে দেন না কেন বলা উচিত।
-স্রষ্টা সন্তান জন্ম দেন না কেন?
-প্রথমত স্রষ্টা কারো থেকে জন্ম নেন নি।তাই বংশক্রমের কোন বিষয় স্রষ্টার ক্ষেত্রে ঘটার দরকার নেই।দ্বিতীয়ত,স্রষ্ট্রা সৃষ্টি করেন,জন্ম না দিয়ে সৃষ্টি করাটা স্রষ্ট্রার গুণ।তৃতীয়ত,জন্ম নিলে মৃত্যু অবধারিত।স্রষ্টা যার জন্মদাতা সে মৃত্যুবরণ করবে এটা স্রষ্ট্রার জন্য অপমানজনক হয়।
-স্রষ্টা সৃষ্টি করেন,স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করেছে?
-স্রষ্টাকে সৃষ্টি করা লাগে না।কারণ স্রষ্টাকে যে সৃষ্টি করবে সেই আসল সৃষ্টিকর্তা হবে।এবং এই যুক্তিতে স্রষ্টার সংখ্যা হবে অসীম।যা হাস্যকর।
-তাহলে স্রষ্টার শুরু কোথা থেকে?
-আমরা স্রষ্টার শুরু বলতে বুঝি সময়ের সাপেক্ষে স্রষ্টার আদি অবস্থান তাইতো?
-শতভাগ এটাই বলতে চেয়েছিলাম।স্রষ্টার শেষ নেই বুঝলাম শুরু কোথা থেকে?
-সময় স্রষ্টার সৃষ্টি।সময় শূণ্য সেকেন্ড থেকে শুরু।স্রষ্টা সময়ের আগেও ছিলেন।যেহেতু স্রষ্টা সময়েরও সৃষ্টিকর্তা তাই স্রষ্টার শুরু আপনি সময় জ্ঞান দিয়ে মাঁপতে পারবেন না।এজন্যই তিনি চিরঞ্জীব।আগেও ছিলেন পরেও থাকবেন।