হঠাৎ হাতের ফোনটা বেজে উঠলো।
তৃষা চমকে তাকালো।
স্ক্রিনে ভেসে উঠলো আরিয়ান এর নাম।
ফোনটা রিসিভ করতেই ওদিক থেকে আরিয়ানের কণ্ঠ—
“কেমন আছো?”
তৃষা শান্ত গলায় বললো,
“ভালো… তুমি কেমন আছো?”
আরিয়ান উত্তর দিলো,
“আমি? আমি তোমার অপেক্ষায় আছি। আজ তো যাচ্ছ, তাই না?”
তৃষা একটু দ্বিধা নিয়ে বললো,
“কোথায়?”
আরিয়ান সঙ্গে সঙ্গে বললো,
“উকিলের কাছে… ডিভোর্সের জন্য।”
তৃষার বুকটা হঠাৎ কেঁপে উঠলো।
মুহূর্তের জন্য চুপ করে গেলো।
তারপর আস্তে গলায় বললো,
“দাদি হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাই আজ যাওয়া ঠিক মনে হলো না… কাল যাবো।”
আরিয়ানের ভেতরে হালকা বিরক্তি জমলো।
কপালে ভাঁজ পড়লো।
কিছুক্ষণ চুপ করে থাকলো।
কিন্তু মুড নষ্ট না করতে গলাটা সামলে নিয়ে বললো,
“আচ্ছা… ঠিক আছে।”
এরপর কিছু একটা বলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল আরিয়ান।
কিন্তু তৃষা তাড়াতাড়ি কেটে দিলো কথা—
“আরিয়ান, পরে কথা বলি… দাদি ডাকছেন।”
এই বলে ফোনটা কেটে রাখলো।
স্ক্রিনটা নিভে গেলো।
ওপাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরিয়ান হালকা চিন্তায় পড়লো।
মনের ভেতরে প্রশ্নের পর প্রশ্ন জমে উঠলো।
কিন্তু কোনো উত্তর পেলো না।
শুধু দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফোনটা হাতে শক্ত করে ধরে রাখলো।
আরিয়ান হেনার কাছে গেলো।
দেখলো হেনা গার্ডেন এরিয়াতে একা চুপচাপ বসে আছে।
চারপাশে হালকা বাতাস বইছে, কিন্তু তার চোখে-মুখে একটা অদ্ভুত স্থিরতা।
আরিয়ান আস্তে আস্তে কাছে গিয়ে তার পাশেই বসল।
হেনা টের পেলো যে আরিয়ান এসেছে, কিন্তু কোনো বাড়তি প্রতিক্রিয়া দেখালো না।
শুধু আস্তে গলায় বললো—
“সাহেব, ভালো আছেন?”
আরিয়ান একটু হেসে উত্তর দিলো—
“হ্যাঁ… আমি ভালো আছি। তুই কেমন আছিস? কোনো সমস্যা হয় নি তো?”
হেনা মুখ নিচু করে শান্তভাবে বললো—
“না সাহেব, সব ঠিক আছে।”
কিছুক্ষণ নীরবতা নেমে এলো।
তারপর আরিয়ান গভীরভাবে হেনার দিকে তাকিয়ে আস্তে গলায় বললো—
“হেনা… তোর কি মনে হয়… তৃষা আমাকে ভালোবাসে… এখনো?”
প্রশ্নটা শুনে হেনা চমকে উঠলো।
কিন্তু মুখে কিছু বললো না, শুধু ভেতরে ভেতরে দ্বিধায় পড়লো—
কি উত্তর দিবে, কি বললে সাহেব খুশি হবে, নাকি কষ্ট পাবে।
আরিয়ান দূরের আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো, যেন নিজের মনের ভেতরের সব ঝড়টা আড়াল করার চেষ্টা করছে।
চলবে.......