জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় "আদর্শ হিন্দু হোটেল" উপন্যাসটিতে অনেকগুলো চমৎকার দিকের প্রতিফলন করেছেন। লেখক দেখিয়েছেন সৎ উদ্দেশ্য এবং স্বপ্নের প্রতি তীব্র অভিলাষী হলে সমগ্র পৃথিবী ধরা দেয় স্বপ্নের অনুকূলে।
উপন্যাসটি পড়তে গিয়ে প্রতিটা মুহূর্তে রোমাঞ্চিত অনুভূতি হবে। গল্পের প্রোটাগনিস্ট হাজারি ঠাকুর শত দুঃখ, অপমান, ঝাঁটা খেয়েও সেই মনিবের হোটলে পড়ে থাকে আর স্বপ্ন দেখে তার হোটেল হবে, সবার সাথে তার বিনয়ী আচরণে তার সুনাম দূরদূরান্ত ছড়িয়ে পড়বে। গ্রামের লোকেদের কুৎসা রটনার ভয়ের পরও কুসুমের সাথে তার মেয়েতুল্য আচরণের বিন্দুমাত্র পরিবর্তন ঘটে নি, বরং কুসুমের শ্রদ্ধা তাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যায়। যেই মনিব তাকে চোর অপবাদে বের করে দেয় সেই মনিবের বিপদের দিনে হাজারি ঠাকুর খাদ থেকে তুলে ধরে সাথে সেই পদ্মদিদিকেও, যারা তাকে প্রতি মুহূর্তে কষ্ট দিয়ে এসেছে। শত বিনয়ী আচরণেও মনিবের এবং পদ্মদিদির মন পায় নি।
হাজারি ঠাকুরের স্বপ্নের অনুকূলে থাকা অতসী, কুসুম, সুবাসিনীর শ্রদ্ধা এবং সাহায্য তার স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করে। চাকর থেকে হয়ে উঠে মনিব, তবুও তার আচরণের ছিটেফোঁটাও বদলায় না। লক্ষ্মীর বেশে সেই অতসীর দেয়া টাকায় হাজারি ঠকুরের সাহস দ্বিগুণ করে তোলে যে স্বয়ং লক্ষ্মীর দান করা টাকায় তার ব্যবসায় লোকসান গুনতে হবে না। হাজারি ঠাকুর শুধু নিজের স্বপ্নই নয় তার সাথে থাকা সব মানুষের স্বপ্ন সে সত্যি করে তোলে। গড়ে তোলে তার স্বপ্নের আদর্শ হিন্দু হোটেল।