পর্ব ১: রহস্যের শুরু
গ্রামের শেষ প্রান্তে একটা পুরোনো বটগাছ। তার নিচে বসে থাকে ছোট্ট রাহুল। প্রতিদিন নদীর দিকে তাকিয়ে সে ভাবতে থাকে—নদী যেন তার সঙ্গী। একদিন বিকেলে হঠাৎ নদীর ধারে একটা পুরোনো নৌকা ভেসে এল। নৌকায় কেউ নেই, শুধু এক মুঠো শাঁখের মালা আর শুকনো ফুল।
পরদিন সকালে নদীর ধারে কাগজের টুকরো পড়ে আছে, তাতে লেখা—
"আমি আছি, শুধু দেখা যায় না। নদীর ঢেউয়ে খুঁজে নিও।"
রাহুল বুঝল, তার হারানো বাবার স্মৃতি হয়তো এই নদীর বুকেই বেঁচে আছে।
---
পর্ব ২: ছায়ার দেখা
রাহুল প্রতিদিন নদীর ধারে আসে। একদিন ভোরে সে দেখতে পেল এক বৃদ্ধ মাঝি। নৌকায় দাঁড়িয়ে বৃদ্ধ বললেন—
—“খুঁজছিস কাকে, ছেলে?”
—“আমি আমার বাবাকে খুঁজছি,” রাহুল বলল।
বৃদ্ধ হেসে বললেন—“নদী কখনো কাউকে হারায় না, শুধু অন্য রূপে ফিরিয়ে দেয়।”
বৃদ্ধ অদৃশ্য হয়ে যাওয়ার পর নৌকার বৈঠা রাহুলের হাতে রয়ে গেল। সে ঠিক করল, একদিন সে নিজেই নদীর গোপন রহস্য খুঁজবে।
---
পর্ব ৩: বাক্স আর মানচিত্র
একদিন নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে রাহুল জালে জড়িয়ে উঠল একটি পুরোনো কাঠের বাক্স। বাক্সে খোদাই করা অদ্ভুত প্রতীক আর একটি তালা। রাতের বেলায় বৈঠা দিয়ে ছোঁতেই তালা খুলে গেল।
ভেতরে ছিল নৌ-মানচিত্র ও চিঠি, বাবার লেখা—
"যে সাহসী, সে-ই পারে নদীর গোপন পথ খুঁজে পেতে। স্রোতের নিচে আছে অন্য জগৎ, অন্য গ্রাম। খুঁজে নিও, সেখানে উত্তর লুকিয়ে আছে।"
রাহুল ঠিক করল—সে মানচিত্রের পথ ধরে যাবে, বাবা খুঁজবে।
---
পর্ব ৪: অভিযান শুরু
পূর্ণিমার রাতে রাহুল বৈঠা হাতে নৌকা ভাসাল। নদী দুই ভাগ হয়ে গেছে মনে হলো, কুয়াশার ভেতরে নৌকা এগোচ্ছে অচেনা পথে। হঠাৎ নদীর মাঝেই লুকানো এক গ্রাম।
ছোট ছোট কুঁড়েঘর, অচেনা মানুষ, চোখে শান্ত দীপ্তি। একজন এগিয়ে এসে বলল—
—“তুই অরুণের ছেলে রাহুল?”
রাহুল বিস্মিত। লোকটা বলল—“তোর বাবা আমাদের সঙ্গে ছিলেন। নদীর গোপন গ্রাম রক্ষার দায়িত্ব ছিল তার ওপর। কিন্তু সবসময় তোর জন্য পথ রেখে গেছেন।”
গ্রামের মন্দিরে গিয়ে রাহুল দেখল দেয়ালে খোদাই করা প্রতীক—ঢেউ আর বৈঠা। নিচে লেখা—
"যে ভালোবাসায় খুঁজে, সে-ই খুঁজে পায়।"
রাহুল চোখ বন্ধ করে বাবাকে অনুভব করল। নদী তাকে বেছে নিয়েছে। এখন সে সেই গল্পের নতুন নায়ক।
--alamin hasan
🌊 শেষ