রাফি সবসময় ব্যস্ত মানুষ। চাকরি, কাজ, দায়িত্ব—জীবনে আনন্দের জন্য সময়ই যেন নেই। কিন্তু মনের ভেতরে কোথাও এক শূন্যতা জমে আছে।
একদিন হঠাৎ অফিসের এক সহকর্মী নিশি বলল—
— “আপনি কি সিলেট গেছেন কখনো? প্রকৃতিকে না দেখলে জীবন আসলেই অসম্পূর্ণ।”
নিশির কণ্ঠে ছিল একরকম মায়া। রাফি অবাক হলো। কয়েকদিন পরেই সে সাহস করে প্রস্তাব দিল—
— “চলুন, আমরা সবাই মিলে একটা ভ্রমণে যাই। তবে আপনি থাকলে তবেই যাব।”
নিশি হেসে বলল—
— “ঠিক আছে, তবে প্রতিশ্রুতি দেন—শুধু ঘুরতে নয়, অনুভব করতেও শিখবেন।”
যাত্রা
ট্রেনে চড়েই শুরু হলো তাদের যাত্রা। জানালার বাইরে সবুজ গ্রাম, মাঠ আর নদী বয়ে যাচ্ছিল। নিশি পাশে বসে হালকা বাতাসে চুল উড়িয়ে দিচ্ছিল। রাফির মনে হচ্ছিল, সে যেন পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মুহূর্তে আছে।
জাফলংয়ের বিস্ময়
নদীর ধারে এসে নিশি পানিতে হাত ডুবিয়ে দিল।
— “দেখেছেন, কত স্বচ্ছ! জীবন যদি এমন স্বচ্ছ হতো!”
রাফি তার দিকে তাকিয়ে বলল—
— “আপনি থাকলে আমার জীবনও এমন স্বচ্ছ হয়ে যায়।”
নিশি মৃদু হেসে চোখ সরিয়ে নিল। তবে তার গালে লালচে আভা রাফির চোখ এড়াল না।
রাতারগুলের নীরবতা
নৌকা ভেসে চলছিল জলের ভেতর। চারপাশে শুধু গাছ আর পাখির ডাক। নিশি চুপচাপ ছিল। হঠাৎ সে বলল—
— “আপনি কি জানেন, প্রকৃতির কাছে এলে মানুষ তার সত্যিকারের অনুভূতি লুকোতে পারে না।”
রাফি ধীরে বলল—
— “তাহলে আমিও লুকাবো না… আমি আপনাকে ভালোবাসি।”
এক মুহূর্ত নীরবতা। তারপর নিশি হাসল।
— “আমি জানতাম, এই ভ্রমণ কেবল ভ্রমণ নয়, আরও কিছু হবে।”
ফিরে আসা
শহরে ফেরার পথে ট্রেন দুলছিল, আর রাফির হাত আলতো করে নিশির হাত ছুঁয়ে ছিল। তাদের দু’জনের চোখে চোখ পড়ছিল বারবার। সেদিন রাফি বুঝল—
ভ্রমণ শুধু পাহাড়, নদী বা সবুজ দেখার জন্য নয়। ভ্রমণ কখনো কখনো ভালোবাসার নতুন গল্প শুরু করারও মাধ্যম।