ঢাকার পুরোনো এক বাড়ি। রাত বারোটায় হঠাৎ পুলিশে ফোন এলো—
“হ্যালো… আমি… আমি খুনটা দেখেছি…!”
লাইন কেটে গেল।
পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখে, ধনী ব্যবসায়ী কামাল সাহেব তার নিজ ঘরে ছুরিকাঘাতে নিহত। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়—বাড়ির দরজা ভেতর থেকে বন্ধ, জানালাগুলোও লক করা। যেন ভেতরে কেউ ঢুকতেই পারেনি।
মামলার দায়িত্ব দেওয়া হলো ডিটেকটিভ আরিফ রহমানকে।
তিনি বাড়ি ঘুরে দেখলেন—
ঘরের টেবিলে এক কাপ আধা খাওয়া চা,
জানালার পাশে এক টুকরো ভাঙা কাঁচ,
আর কামাল সাহেবের হাতের মুঠোয় চাপা এক ছোট্ট কাগজ।
কাগজে মাত্র তিনটি অক্ষর লেখা— “R K L”।
---
তদন্তের মোড় ঘোরা
আরিফ সন্দেহ করলেন পরিবারের তিনজনকে—
1. রুবিনা, নিহতের স্ত্রী (R)
2. কারিম, শ্যালক (K)
3. লিমন, বিশ্বস্ত ড্রাইভার (L)
তিনজনেরই আলাদা আলাদা স্বার্থ আছে:
রুবিনা চেয়েছিল সম্পত্তি,
কারিম ব্যবসায় পার্টনার হতে ব্যর্থ হয়েছিল,
লিমনকে কিছুদিন আগে চাকরি থেকে তাড়ানোর হুমকি দেওয়া হয়েছিল।
---
চমকপ্রদ আবিষ্কার
আরিফ আবার খুনের ঘরে ঢুকে টেবিলের কাপটা খুঁটিয়ে দেখলেন।
কাপে ভেতরে এক অদ্ভুত গন্ধ—স্লিপিং পিলের গুঁড়া।
মানে কামাল সাহেব প্রথমে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন।
কিন্তু কাঁচের টুকরো কেন?
ভালো করে দেখতেই বোঝা গেল, সেটা জানালার বাইরের দিক থেকে এসেছে।
তাহলে ঘরে ঢুকতে হয়নি—জানালার ফাঁক দিয়েই ছুরি ঢুকিয়ে খুন করা হয়েছে।
---
আসল খুনি
আরিফ প্রমাণ করলেন খুনি হলো—লিমন ড্রাইভার।
সে জানত কামাল সাহেব প্রতিরাতে জানালার পাশে বসে চা খায়।
তাই ওষুধ মিশিয়ে চা দিয়েছে, তারপর জানালার ফাঁক দিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় ছুরিকাঘাত করেছে।
আর সেই “R K L” আসলে কামাল সাহেবের শেষ মুহূর্তের সূত্র।
তিনি জানতেন তিনজনের মধ্যেই খুনি আছে, তাই তিন অক্ষর লিখে গেছেন—
আরিফ সেই সূত্র দিয়েই বুঝলেন তিনজনকে ঘিরেই রহস্য, কিন্তু খুনির ফাঁকফোকর কেবল লিমনের ক্ষেত্রেই ধরা পড়ে।
---
সমাপ্তি
লিমনকে গ্রেফতার করা হলো।
পুলিশ নিয়ে যাচ্ছিল, তখন আরিফ হেসে বললেন—
“খুন করতে যত চালাকি করো না কেন, সত্য কখনও অদৃশ্য হয় না।”