চট্টগ্রামের পুরনো শহরের এক গলির ভেতরে ছিল একটা অদ্ভুত দোকান — ছায়ার দোকান। দোকানটা দিনে খোলা থাকত না, শুধু রাত ৯টার পর। কেউ জানত না কে চালায়, কেউ দেখেনি দোকানদারকে। শুধু জানত, এখানে বিক্রি হয় ছায়া — মানুষের, প্রাণীর, এমনকি স্মৃতিরও।
রাতে, রাইসা নামের এক তরুণী দোকানে ঢুকল। তার চোখে ছিল ক্লান্তি, আর মনে এক গভীর শূন্যতা। সে বলল, “আমার বাবার ছায়াটা চাই। তিনি চলে গেছেন, কিন্তু আমি তাঁর উপস্থিতি অনুভব করতে চাই।”দোকানদার — যার মুখ দেখা যায় না, শুধু এক ঝাপসা অবয়ব — বলল, “ছায়া কিনতে হলে স্মৃতি দিতে হয়। তুমি কী দিতে পারো?”
রাইসা ভাবল। তারপর নিজের পুরনো ডায়েরি এগিয়ে দিল — যেখানে ছিল বাবার সঙ্গে কাটানো প্রতিটি মুহূর্তের লেখা।
দোকানদার ডায়েরিটা নিল, আর একটা ছোট্ট কাঁচের বোতল দিল। “এটা খুললে, তুমি তাঁর ছায়া দেখতে পাবে। কিন্তু মনে রেখো, ছায়া কখনও কথা বলে না। শুধু উপস্থিত থাকে।”
রাইসা বোতলটা নিয়ে বাড়ি ফিরল। রাতে, বোতল খুলতেই ঘরের কোণে বাবার ছায়া ফুটে উঠল — চুপচাপ দাঁড়িয়ে, ঠিক যেমন তিনি দাঁড়াতেন বারান্দায়।
সে রাতে, রাইসা ঘুমাল শান্তিতে। ছায়া কিছু বলেনি, কিন্তু তার উপস্থিতি যেন বলেছিল, “আমি আছি।”
51
View