📖 উপন্যাস: পাঁচ টাকার নোটে লেখা “ভালো বন্ধু চাই”
অধ্যায় ১
শহরের ভিড়ভাট্টায় ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছিল তানভীর। একদিন ক্লাস শেষে বাসায় ফেরার পথে রাস্তার পাশে পড়ে থাকা একটা পাঁচ টাকার নোট তার চোখে পড়ে। নোটটা তুলে নিয়ে সে অবাক হয়ে দেখলো—
লেখা আছে:
“ভালো বন্ধু চাই – চাইলে কল দাও”
নিচে একটা মোবাইল নাম্বার।
তানভীর কিছুক্ষণ ভাবলো—
— “এমন অদ্ভুত কথা কেউ নোটে কেন লিখবে? ভালো বন্ধু চাই, মানে?”
কৌতূহল তাকে গ্রাস করলো। নাম্বারটা মোবাইলে ডায়াল করতেই ওপাশ থেকে মেয়েলি কণ্ঠ ভেসে এলো—
— “হ্যালো… কে বলছেন?”
— “আমি তানভীর। একটা পাঁচ টাকার নোটে তোমার নাম্বার পেলাম।”
— “ওহ… তাহলে তুমি পড়েছো? আমি লিখেছিলাম।”
এইভাবেই তাদের আলাপ শুরু হলো।
অধ্যায় ২
প্রথম দিন শুধু পরিচয় হলো। মেয়েটির নাম আয়েশা। তানভীর অবাক হয়ে জানতে পারলো—আয়েশা ইচ্ছে করেই নোটে ওই লাইন লিখেছিল।
— “কিন্তু তুমি নোটে লিখলে কেন?”
— “কারণ আমি অনেক একা। মনে হলো কেউ হয়তো সত্যি বন্ধু হতে চাইবে।”
তানভীর হেসে বললো—
— “তাহলে বুঝি আমি সেই ভাগ্যবান?”
— “হয়তো।”
এরপর থেকে প্রতিদিন তারা কথা বলতো। বন্ধুত্বের মতো খুনসুটি, গল্প, মনের চাপা দুঃখ ভাগাভাগি—সব মিলিয়ে তানভীর বুঝতে পারলো, এ এক অদ্ভুত সুন্দর সম্পর্ক।
অধ্যায় ৩
বন্ধুত্ব যত গভীর হচ্ছিল, ততই তানভীর আয়েশার ভেতরে লুকানো কষ্ট টের পাচ্ছিল।
একদিন সে সরাসরি জিজ্ঞেস করলো—
— “আয়েশা, তুমি আসলে এত একা কেন? পরিবার নেই?”
— “আছে, কিন্তু তারা আমার কথা বোঝে না। আমি চেয়েছিলাম শুধু একজন সত্যিকারের বন্ধু, যে আমাকে বিচার না করে শুনবে।”
তানভীর চুপ করে গেল। নীরবতা ভেঙে বললো—
— “তাহলে শোনো, আমি আছি। তোমার সত্যিকারের বন্ধু হয়ে।”
ওপাশে আয়েশা কিছুক্ষণ চুপ থেকে ধীরে বললো—
— “ধন্যবাদ তানভীর… তুমি জানো না, আমি কতদিন এই কথাটা শোনার অপেক্ষায় ছিলাম।”
পাঁচ টাকার সেই নোট, যা হয়তো কারও কাছে সাধারণ ছিল, দুজন অপরিচিত মানুষের জীবনে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করলো।
👉 এখানে শেষ হলো প্রথম তিনটি অধ্যায়।