Posts

গল্প

পুরুষ

August 31, 2025

Chameli Akter

175
View

পুরুষ নিজে বহুগামিতা করতে প্রস্তুত কিন্তু সে নারীকে অন্য কারও সাথে শেয়ার করতে প্রস্তুত না! আবার নারী নিজে বহুগামিতা করতে প্রস্তুত কিন্তু সে পুরুষকে কারও সাথে শেয়ার করতে প্রস্তুত না। এটি প্রকৃতির একটি সেলফ কন্ট্রাডিকশন।

বায়োলজিক্যালি প্রতিটি পুরুষ চায় হাজার হাজার নারীর সাথে সেক্স করে তার জেনেটিক ভ্যারিয়েশন বৃদ্ধি করতে, নারীও চায় হাজার হাজার পুরুষের সাথে সেক্স করে তার জেনেটিক ভ্যারিয়েশন বৃদ্ধি করতে। সেলফিশ জিন থিওরি অনুসারে, নারী ও পুরুষের মধ্যে কোনো প্রেম ভালোবাসা নয়, নারী ও পুরুষের মধ্যে যেটা কাজ করছে সেটা হলো জেনেটিক প্রতিযোগিতা ! কে কার থেকে বেশি জেনেটিক ভ্যারিয়েশন তৈরি করতে পারে!

পুরুষ নারীকে অন্য পুরুষের সাথে শেয়ার করতে চায় না! এটা নারীর প্রতি তার ভালোবাসা নয়, এটা হলো অন্যান্য পুরুষের প্রতি তার ঈর্ষা। সে অন্য পুরুষের কাছে পরাজিত বা ছোট হতে চায় না বলেই সে নারীকে অন্য পুরুষের সাথে ভাগ করতে পারে না! পুরুষ নামক এই প্রতারক অন্য পুরুষের সাথে তার জেনেটিক প্রতিযোগিতার নাম রেখেছে একগামী ও বিশ্বাসযোগ্য ভালোবাসা। নারী যখন দেখে পুরুষ তাকে প্রোটেক্ট করছে, মাঝেমাঝে সে সেফ ফিল করে কারণ তার অবচেতন মন বুঝতে পারে, পুরুষটি তার প্রতারণার ফাঁদে ঠিকঠাক পা রেখেছে! তাকে প্রতারিত করা এখন সহজ।

নারী পুরুষকে অন্য নারীর সাথে ভাগ করতে চায় না কারণ সে অন্য নারীর কাছে পরাজিত অথবা ছোট হয়ে যাবে। নারীর বুবস ও বাটস একে অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা করছে নিজেকে পুরুষের সামনে বড় করে তোলার জন্য।

আজকের যুগে অনেক নারী ফেসবুকে তার চেহারা নয় বিশাল বিশাল বুবস ও বাটসের  ছবি পোস্ট করে! সে তার চেহারা থেকেও বুবস আর বাটস  নিয়ে ওভার কনফিডেন্ট। নারী পুরুষকে অন্য নারীর সাথে শেয়ার করতে চায় না তার কারণ সে অন্যান্য নারীদের নিজের প্রতিযোগী মনে করে! সে পুরুষকে ভালোবাসে না, একগামী ভালোবাসার নামে অন্য নারীর সাথে প্রতিযোগিতা করে!

নারী ও পুরুষ নিজের জেনেটিক স্বার্থপরতাকে আড়াল করার জন্য ভালোবাসা নামক যে নাটক লিখেছিল তার নামই ছিল “একগামিতা”!

ভালোবাসা যে একটি সেলফিশ স্ট্র‍্যাটেজি তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ ক্যানিভাল মাকড়সা। ক্যানিভাল প্রজাতিতে পুরুষ মাকড়সা যখন সেক্স করে, নারী মাকড়সা এক কামড়ে তার মাথাটি খেয়ে ফেলে। তারপর ধীরে ধীরে সে সমস্ত শরীর খায়। নারী মাকড়সা যখন পুরুষের দেহের মাংস খায়, তখন তার সেক্সচুয়াল এক্সাইটেশন ও থ্রিল বেড়ে যায়!

আপনি প্রশ্ন করতে পারেন, এটা কেন হচ্ছে? আসলে সেক্সের পর সন্তান তৈরি করার জন্য স্ত্রীর দেহে পর্যাপ্ত পুষ্টি থাকে না, এজন্য সে পুরুষটিকে জীবন্ত খেয়ে ফেলে, যেন সফলতার সাথে শিশুটির দেহ গঠনের জন্য পুষ্টির যোগান দিতে পারে। পুরুষ তার মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও সেক্সচুয়াল ইন্টারকোর্সে অংশ নেয়! কারণ ভালোবাসার উদ্দেশ্য জিনের অনুলিপি তৈরি করা! আপনি সার্ভাইভ করতে পারছেন বা পারছেন না, তার সাথে ভালোবাসার সম্পর্ক নেই, আপনার জিন সার্ভাইভ করতে পারছে কি না, সেটাই ভালোবাসার একমাত্র উদ্দেশ্য!

আপনি যদি পুরুষকে মেরেও ফেলেন, তারপরও তার মধ্যে বহুগামিতার টেন্ডেন্সি কাজ করবে। কারণ এটা তার ইচ্ছা অথবা অনিচ্ছার বিষয় নয়, এটা তার জেনেটিক টেন্ডেন্সি। আবার আপনি একজন নারীকে যদি পুড়িয়েও ফেলেন, তার মধ্যেও বহুগামিতার টেন্ডেন্সি কাজ করবে। কারণ বহুগামিতা নারী ও পুরুষের মস্তিষ্কের লজিক না, এটি তাদের জেনেটিক লজিক।

প্রকৃতিতে এমন অনেক পাখি যে আছে যারা হার্ডকোর একগামী। তারা কখনোই বহুগামিতা করে না। বিজ্ঞানীরা পুরুষ পাখির পেনিস (টেস্টিস মূলত) কেটে ফেলে দেন, তারপর তারা দেখেন তার প্রেমিকার আচরণ কেমন হয়। তারা অবাক হয়ে দেখেন নারী পাখি প্র্যাগনেন্ট (ডিম দিচ্ছে)! মাঝেমাঝে মেয়েদের বহুগামিতা এতটাই সূক্ষ্ম হয় যে আপনি টেরই পাবেন না। আমেরিকার ৩০% নারী পরকিয়া প্রেমিক দ্বারা প্র্যাগন্যান্ট। রক্ষনশীল সমাজে মেয়েরা বহুগামিতায় লিপ্ত হয়েও সেটা কৌশলে লুকিয়ে রাখে। আর তাই পুরুষের বহুগামিতা দৃশ্যমান হলেও, নারীর বহুগামিতা অদৃশ্য। এরা ভয়ানক মিথ্যাবাদী। হেলেন ফিশার মেয়েদের মস্তিষ্কে লাই ডিটেক্টর মেশিন বসিয়ে প্রশ্ন করার পরও তারা তাদের বহুগামিতা নিয়ে মিথ্যা বলেছিল। এজন্য নারীর বিশ্বাসঘাতকতা পুরুষের বিশ্বাসঘাতকতা থেকে বিপজ্জনক ও সংবেদনশীল মনে করা হয়।

মিডো ভোল, জাপানিজ কোয়েল এবং হাউজ স্প্যারোর উপর গবেষণা করে দেখা গেছে, এরা প্রাকৃতিক ভাবে বহুগামী। যখন এ সকল প্রাণীকে একগামী হতে বাধ্য করা হয় তাদের স্প্যার্ম ও ডিমের কোয়ালিটি কমে যায় এবং প্রজননগত দিক থেকে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শুধু তাই নয়, অতিরিক্ত স্ট্রেস হর্মোনের প্রভাবে এ সকল প্রাণী অল্প বয়সে মারা যায়! সেলফিশ জিন এতটাই শক্তিশালী যে, সে তার হোস্টকে মেরে ফেলবে কিন্তু তারপরও তার সহজাত প্রবৃত্তি থেকে বের হয়ে আসতে দেবে না!

ভালোবাসা হলো জিন সংক্রমণের উদ্দেশ্যে একটি ষড়যন্ত্র। সেক্সের ডেফিনিশনে যে টার্মগুলো মেনশন করা হয়েছে, সেগুলো হলো, Reproduction, Genetic Diversity, Hormonal Regulation, Bonding and Attachment, Pleasure and Enjoyment, Stress Relief, Social Connection etc.

সেক্সের ডেফিনেশনে কোথাও একগামিতার কথা উল্লেখ নেই! সেক্স তার ডেফিনিশন অনুসারে বহুগামী!

Comments

    Please login to post comment. Login