বড় বড় যোদ্ধারা কখনো নিজেদের সক্ষমতা নিয়ে অহংকারে পতিত হন। ফলাফল হয় লজ্জার হার। ইতিহাসের পাতায় এর কতই না সাক্ষ্য আছে। শক্তির প্রদর্শন আর আগ্রাসী নীতি সবসময় ভালো যুদ্ধ কৌশল নয়।
শামের উপকূলীয় অঞ্চল জুড়ে সেই সময় ক্রুসেডাররা ছড়িয়ে আছে। ইউরোপ থেকে বিভিন্ন সময় বাহিনী আসছে। সুলতান সালাহুদ্দীন নিজ সেনাদের সব ঘাঁটিতে ছড়িয়ে দিয়ে সামান্য কিছু সেনাসহ একটি ঘাঁটিতে অবস্থান করছেন। হঠাত খবর পেলেন সমুদ্রপথ দিয়ে শত্রুদের বড় এক বাহিনী তার দিকে এগিয়ে আসছে। হয়ত যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে উঠবে আগামী দিনই। আশপাশ থেকে এত কম সময়ের মধ্যে সৈন্য সাহায্য পাওয়ার সম্ভাবনাও কম। এই অবস্থায় তিনি নিজের সেনাস্বল্পতা অনুভব করলেন। ইশার নামাজে সময় হলো। সুলতান ইশার নামাযে অংশ নিলেন। নামাজের পর আল্লাহর নিকট দুআ করা শুরু করলেন । তার দুআ দীর্ঘক্ষণ ধরে চলতে লাগল। তিনি আল্লাহর কাছে রোনাজারি করছিলেন, তার চোখ বেয়ে পানি পড়ছিল। অনেকেই যার যার অবস্থানে রাত কাটানোর জন্য ফিরে গেল। ফজরের পূর্বে সুলতানের বন্ধু আবার ফিরে এলে সুলতানকে সিজদাহরত অবস্থায় দেখতে পেলেন। তার দাড়িগুলো ছিল ভেজা, সিজদাহর জায়গাও পুরোটা ভিজে গেছে। ফজরের সময় হয়ে এল। সুলতান ফজরের নামাজের প্রস্তুতি নিলেন। বার্তাবাহক হঠাত খবর নিয়ে এলো। সবাই সংবাদ শুনতে উতকর্ণ হলো। বার্তাবাহক জানাল, “রাতে সমুদ্রের তুফানে শত্রুদের সব জাহায ডুবে গেছে, শত্রুবাহিনী সমূলে ধংস হয়ে গেছে।”
“যুদ্ধের সবচেয়ে সেরা কৌশল হল,
লড়াই করা ছাড়াই শত্রুকে পরাজিত করতে পারা”
(সান জু (লেখক, দি আর্ট অব ওয়ার))
সঠিক কৌশল না জেনে শুধু শুধু পরিশ্রমে অনেক সময় সফলতা আসেনা। যেমন শত্রুর বিশাল শক্তিমত্তা পরাজিত হয় নিখুঁত একটি কৌশলের কাছে। আল্লাহর সাহায্যপ্রাপ্তি প্রত্যেক ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় কৌশল।