Posts

গল্প

কথকতা

September 4, 2025

Mubarra Ayesha Chowdhury

Original Author Me

Translated by Me

115
View

#গল্প 
নাম:অস্তিত্ব 

পাহাড়ের ঢাল বেয়ে অবিরাম পানি ঝড়ছে,আর আমার দুচোখ গড়িয়ে জল,আজ আমার মন মেঘাছন্ন সন্ধ্যার ন্যায়, আমি মুষড়ে পড়ছি।

সহস্র বছর পর এলেও এ পথ চিনতে একটু ও ভুল করব না।তুমি সমুদ্র হলে আমি সমুদ্রপথে জাহাজের নাবিক,এ পথে পারি দেওয়া আমার কাজ।

আমি সাগরের অস্ত যাওয়া সূর্যের ন্যায় 
সুন্দর,ডুবে  গেলে  সাগরের নিস্তব্ধতা মানুষের মনকে শান্ত করে।সমুদ্র তখন ভয়ানক দেখায়,তবে ভয়ানক হলেও এ রাতের সৌন্দর্য আমার উত্তপ্ততা কমায়।

আমি বাকাঁ পথে চলি,উঁচু নিচু পথে বড় হয়েছি তাই;তুমি সমতলের, পাহাড় বা ঝড়ণা তোমার কাছে অনেক বিস্ময়কর!

আমি প্র্যাক্টিকেল তুমি ও প্র্যাক্টিকেল তবে ছলনাময়ী;প্রকৃতি স্রষ্টা প্রদত্ত রূপ দেখায়;তাই হয়তো এত শৃঙ্খলাবিহীন।

আমি  অতীত;তুমি আজ বিলীন  আমার কাছে।আমার অস্তিত্ব আজ প্রশ্নবিদ্ধ।

আমি করুণা চাই না,আদরের কাঙালি না,আমি প্রকৃতির আরেক রূপ।

তুমি আমার বর্ণনাহীন অতীত,লাল টিপও নেই আজ ললাটে,কালো টিপ, তাও কিছু আশ্চর্য 
জাদুকর এসে তোমার মত ছলনা দেখায় পটে যাই না।

আমি পচা লাশের বিভৎসতা  দেখেছি,তীব্র পচা গন্ধ পাই আজ ও ঔ লাশের, আমার মন সেই লাশ। তবুও আমি হাসি মাঝে মাঝে সেই হাসিতে আজ ঝিনুকের মত উজ্জ্বলতা নেই।

আমি মুক্তোর মালাও জড়াই না গলায়,নেকলেস দূরের কথা,তবে আমার অস্তিত্বলোক আজও বেঁচে আছে।

তোমাকে খুঁজতে গিয়েও খুঁজে পাই না,কিছু জবাব দিব,প্রশ্ন করব না আগের মতন।

তুমি মানুষটার সবটাই ভান ছিল,আমি খুঁজে পেয়েছি। 
তোমার পরিবারকে আমি চাই না!

তোমাকেও চাই না!

আমি এ নগরীর ছেড়ে এক বিবর্ণ নগরে জীবন কাটাচ্ছি। আমি আমার মনকে খুন করলেও আমার অস্তিত্বকে খুন করিনি।

ভাবতে ভাবতে অনেক বছর গেলো, আমার বয়স আজ ৪৫, তুমি বুড়ো হওনি আজও, তাই না?

প্রত্যাশায় আমি রওনা হলাম চিরচেনা বিস্তীর্ণ নগরে;
নগরীর ইট কাঠ আর বিল্ডিংগুলো খুব অচেনা।নগরীটি জনাকীর্ণ ছিল একসময়,তবে আজ এনগরী আমার অচেনা,মানুষ সময়ের কাছে হেরে যায়,বত্রিশ বছর পর আমার এ অহিংসক নগরীতে আসা।

চারপাশের দেয়ালগুলোও আমায় দেখে রহস্যময় আচরণ করছে।কুকুরগুলো আজশহরে নতুন লোক দেখে অবাক হয়ে আছে।অবশ্য দুটি কুকুর ঝগড়া করছিল তারা আমাকে দেখে ঝগড়াঝাটি থামিয়ে দিয়েছে।

তারা আমাকে চিনবে না এ কথা অস্বাভাবিক নয়।আমি হাটঁতে হাটঁতে  এক অচেনা দোকানের সামনে দাঁড়ালাম।
দোকানের সামনে ছোট্ট এক শিশু  চকলেট নিচ্ছে।কিন্ত শিশুটির চাহনি কেমন যেন!শিশুতোষ সারল্যতা তার নেই!

আমার হাতে সময় খুব কম তাই আমি 
তাড়াতাড়ি  চলে এলাম আমার এ  নগরীর   চেনা একমাত্র রহস্যহীন বাড়ির কাছে,চারপাশ  অচেনা হলেও এ বাড়ি আমার খুব মনোজগতে স্বর্গীয় তান্ডব এনে দিবে আমার এ কথাই জানা ছিল,কিন্তু বাড়ির কাছে আসতেই আমার পুরনো স্মৃতি জেগে উঠল,আমি নিরুপায় হয়ে কাচঁভাঙা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম সূর্যাস্ত হওয়ার টাইম,আমি কি চলে যাব? নাকি আমার চিরচেনা আবেগের পথে এগিয়ে যাব।

আমি আজ কোথায় যেন হারিয়েছি,আমি গন্তব্য খুঁজে পাচ্ছি না,চশমার কাঁচ গড়িয়ে পানি পড়ছে।

ঐ দিনে রুরু আমাকে বারবার ফোন দিচ্ছে 
,আমি ফোন ধরছি না, ধরতে ইচ্ছে করছে না।

রুরু আমার একমাত্র ৬ বছরের শিশু, রুরুর চোখের জল আমি সহ্য করতে পারি না।
রুরু আমাকে নিয়ে অনেক সময় দ্বিধায় থাকে,আমি রুরুর দিকে তাকিয়েই কি এ পৃথিবী নিয়ে স্বপ্ন দেখব?নাকি আমি ইচ্ছেলোকে পারি জমাব?

রুরু আমার নিজ সন্তান নয়,আমার পালিত কন্যা,ওকে ঘিরেই আমার জীবন।
আমি বিয়ে করি নি,করার ইচ্ছে ও নেই,আব্বু আম্মুর চোখের কোণে আজও জল।

Comments

    Please login to post comment. Login