অধ্যায় ১ : অদ্ভুত খুন
ঢাকার এক অন্ধকার রাত। বনশ্রী এলাকার এক পুরনো ভবনের ভেতর হঠাৎ ভেসে আসে চিৎকার। প্রতিবেশীরা দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে যা দেখল, তা রীতিমতো ভয়াবহ।
একজন তরুণ ব্যবসায়ী, গলা কাটা অবস্থায় পড়ে আছে মেঝেতে। তার পাশে পড়ে আছে এক টুকরো নীল কাগজ, তাতে মাত্র এক লাইন লেখা—
“ছায়ার ভেতরেই আসল রূপ লুকিয়ে থাকে।”
পুলিশ এসে হতভম্ব। কোনো আঙুলের ছাপ নেই, অস্ত্র নেই, শুধু সেই রহস্যময় কাগজ।
অধ্যায় ২ : গোয়েন্দা রুদ্রর আবির্ভাব
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের অপরাধ দমন শাখার পরামর্শক, গোয়েন্দা রুদ্র। বয়স মাত্র ২৮, কিন্তু মস্তিষ্ক যেন সুপারকম্পিউটার।
কোনো কেস তার হাতে এলে সাধারণত সমাধান হওয়াটা সময়ের ব্যাপার মাত্র।
রুদ্রকে ডাকা হলো বনশ্রী খুনের ঘটনায়।
সে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে কাগজটা হাতে নিল। গভীর চোখে কাগজের দিকে তাকিয়ে বিড়বিড় করে বলল—
“এই কবিতা কোনো সাধারণ বার্তা নয়, এটা ধাঁধা।”
অধ্যায় ৩ : দ্বিতীয় আঘাত
এক সপ্তাহের মধ্যেই দ্বিতীয় খুন। এবার ভিকটিম একজন সাংবাদিক। একই পদ্ধতি, গলা কাটা, আরেক টুকরো নীল কাগজ—
“সত্যের মুখোশ খুললে অন্ধকারই জ্বলে ওঠে।”
রুদ্র খেয়াল করল, প্রথম ভিকটিম ছিল ব্যবসায়ী, দ্বিতীয়জন সাংবাদিক। দুজনের মধ্যে সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই, তবে দুজনেই গত এক মাসে একটি সাধারণ তদন্তে জড়িত ছিল—
একটি অবৈধ ওষুধ কোম্পানি।
অধ্যায় ৪ : ছায়ার সংগঠন
রুদ্র খুঁজতে খুঁজতে পায় একটি রহস্যময় তথ্য। ঢাকা শহরে নাকি একটি গোপন সংগঠন কাজ করছে, নাম “ছায়া সংঘ”।
এদের কাজ— যাকে খুশি নির্মূল করা, কিন্তু সবসময় কবিতার মতো কোড ব্যবহার করে।
পুলিশ বারবার চেষ্টা করেও কোনো প্রমাণ পায়নি।
অধ্যায় ৫ : রুদ্রর অতীত
গল্প যত এগোতে থাকে, পাঠক জানতে পারে রুদ্ররও নিজের এক ভয়ংকর অতীত আছে। ছোটবেলায় তার বাবা ছিলেন একজন সরকারি কর্মকর্তা। দুর্নীতির বিরুদ্ধে দাঁড়ানোয় রহস্যজনক খুনের শিকার হন তিনি।
ঘটনার পর থেকে রুদ্রর মনে শপথ— যে অন্ধকার তার বাবাকে কেড়ে নিয়েছে, সেই অন্ধকারকে একদিন ধ্বংস করবে।
অধ্যায় ৬ : রহস্যের জাল
তৃতীয় খুন ঘটে। এবার একজন নামকরা আইনজীবী। নীল কাগজে লেখা—
“আইন ন্যায়ের নয়, ক্ষমতার খেল।”
এখন আর সন্দেহ নেই, প্রতিটি খুন একে অপরের সাথে যুক্ত। ভিকটিমরা সবাই একই তদন্তে ছিল— অবৈধ ওষুধের ব্যবসা ফাঁস করার চেষ্টা করছিল।
রুদ্র বুঝতে পারে, শুধু খুনি নয়, এর পেছনে আরও বড় শক্তি আছে।
অধ্যায় ৭ : রাত্রির ফাঁদ
রুদ্র নিজের টিম নিয়ে এক গোপন অভিযান চালায়। তথ্য আসে, পরের টার্গেট একজন এনজিও কর্মী।
রুদ্র আগে থেকেই ছায়ার মতো নজর রাখে। রাত গভীর হলে কালো পোশাকের এক ব্যক্তি সেই কর্মীর ফ্ল্যাটে ঢোকে।
ঠিক তখনই রুদ্র ঝাঁপিয়ে পড়ে।
কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার— মুখোশধারী আততায়ী ভীষণ শক্তিশালী ও দ্রুতগতির। প্রচণ্ড ধস্তাধস্তির পরও সে পালিয়ে যায়, তবে রুদ্র তার হাতে থেকে একটি বিশেষ নকশার আংটি ছিনিয়ে নেয়।
অধ্যায় ৮ : আংটির সূত্র
আংটিতে খোদাই করা আছে একটি প্রতীক— অর্ধচন্দ্র আর তার ভেতরে লেখা সংখ্যা ৭।
রুদ্রর ধারণা, এটি ছায়া সংঘের সদস্যদের পরিচয় চিহ্ন।
তদন্ত করতে গিয়ে রুদ্র বের করতে পারে যে ঢাকার এক গোপন ক্লাব—“নাইটস হাউস”—আসলে এই সংগঠনের আড্ডাখানা।
অধ্যায় ৯ : ছদ্মবেশী অভিযান
রুদ্র ছদ্মবেশে ঢুকে পড়ে সেই ক্লাবে। ভেতরে ঢুকেই বুঝতে পারে, এখানে শহরের নামীদামি লোকজন নিয়মিত আসে। রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, এমনকি পুলিশ বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাও!
রুদ্র উপলব্ধি করে, এই খুন শুধু কোনো সিরিয়াল কিলারের খেলা নয়, বরং পুরো এক ক্ষমতার নেটওয়ার্ক।
অধ্যায় ১০ : সত্যের কাছাকাছি
অভিযানের সময় রুদ্র শুনে ফেলে কয়েকজনের কথোপকথন—
“পরের টার্গেট হবে ড. সামাদ। সে যদি মুখ খোলে, সব শেষ।”
ড. সামাদ হচ্ছেন একজন বিজ্ঞানী, যিনি সেই অবৈধ ওষুধের প্রমাণ হাতে পেয়েছেন।
রুদ্র বুঝতে পারে, যদি তাকে বাঁচানো না যায়, তবে ষড়যন্ত্রের পেছনের মূল সত্য আর প্রকাশ পাবে না।
অধ্যায় ১১ : চূড়ান্ত মুখোমুখি
রুদ্র তৎক্ষণাৎ ড. সামাদের কাছে পৌঁছায়। ঠিক তখনই কয়েকজন কালো পোশাকধারী আক্রমণ চালায়।
দুর্ধর্ষ লড়াই শুরু হয়। রুদ্র তার মস্তিষ্ক ও কৌশল দিয়ে একে একে সবাইকে পরাস্ত করে।
কিন্তু শেষ মুহূর্তে এসে আবার সেই মুখোশধারী আততায়ী হাজির হয়—যার আংটি রুদ্রর হাতে ধরা পড়েছিল।
তীব্র লড়াইয়ের পর রুদ্র অবশেষে মুখোশ খুলতে সক্ষম হয়।
দেখে স্তম্ভিত—
আততায়ী আর কেউ নয়, তারই শৈশবের বন্ধু নাসির, যাকে সে মৃত ভেবেছিল বহু বছর আগে!
অধ্যায় ১২ : অমীমাংসিত রহস্য
নাসির পালিয়ে যায়, কিন্তু যাওয়ার আগে বলে যায়—
“রুদ্র, তুমি সত্যি জানো না, তোমার বাবার মৃত্যুর আসল রহস্য এই ছায়া সংঘের ভেতরে লুকিয়ে আছে। পরের ধাপ শুরু হয়েছে।”
রুদ্র দাঁড়িয়ে থাকে স্তব্ধ হয়ে।
খুনির আসল রহস্য উন্মোচিত হলেও এখন সে আরও বড় ষড়যন্ত্রের মুখোমুখি।
