Posts

গল্প

গোয়েন্দা পর্ব–২

September 4, 2025

Fijon Qurayish

Original Author ফিজন কোরাইশ

55
View

অধ্যায় ১ : রাতের ফিসফিস

রুদ্রর মাথায় বারবার বাজতে থাকে নাসিরের বলা কথা—
“তোমার বাবার মৃত্যুর আসল রহস্য এই ছায়া সংঘের ভেতরে।”
তার চোখে ভেসে ওঠে শৈশবের সেই রাত, যখন বাবার লাশ কফিনে শোয়ানো হয়েছিল। এখন বুঝতে পারছে, সত্যিটা সে যা ভেবেছে তার চেয়েও গভীর।

অধ্যায় ২ : গোপন নথি

ড. সামাদকে নিরাপদে রাখার পর রুদ্র তার কাছ থেকে গোপন ফাইলগুলো নেয়।
সেখানে প্রমাণ আছে—একটি বহুজাতিক কোম্পানি বাজারে নকল ওষুধ ছাড়ছে, যা ধীরে ধীরে হাজারো মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে।
এই কোম্পানির পেছনে রয়েছে “ছায়া সংঘ”।

অধ্যায় ৩ : বিশ্বাসঘাতকতা

রুদ্র পুলিশের উচ্চপদস্থ এক কর্মকর্তার কাছে ফাইল জমা দিতে যায়। কিন্তু ঠিক মুহূর্তে দেখে ফাইল উধাও!
পরিষ্কার বোঝা যায়, পুলিশ বিভাগের ভেতরেও কেউ ছায়া সংঘের হয়ে কাজ করছে।
রুদ্র জানে, আর কারও ওপর ভরসা করা যাবে না।

অধ্যায় ৪ : অচেনা বার্তা

রাত্রে তার ফোনে আসে একটি বার্তা—
“তুমি যদি বাবার হত্যাকারীর মুখ দেখতে চাও, তবে মধ্যরাতে রায়েরবাজারের পুরনো গুদামে এসো।”
রুদ্র বুঝতে পারে, এটা ফাঁদও হতে পারে। কিন্তু সত্য জানার জন্য তাকে যেতেই হবে।

অধ্যায় ৫ : গুদামের অন্ধকার

মধ্যরাতে রুদ্র ঢুকে পড়ে গুদামে। ভেতরে ঘন অন্ধকার, কেবল কড়কড় শব্দ। হঠাৎ করেই চারদিক থেকে বেরিয়ে আসে মুখোশধারী দল।
তাদের নেতৃত্বে দাঁড়িয়ে আছে নাসির।
নাসির চিৎকার করে বলে—
“রুদ্র, আজ থেকে তুই আমাদের দলে। নাহলে তোর বাবার মতো তোকেও কবর দিতে হবে।”

অধ্যায় ৬ : অতীতের পর্দা উন্মোচন

নাসির জানায়, রুদ্রর বাবা আসলে ছায়া সংঘের ভেতরের দুর্নীতির তথ্য ফাঁস করতে যাচ্ছিলেন। তাই তাকে হত্যা করা হয়।
আর হত্যার পরিকল্পনায় সহযোগিতা করেছিল সরকারের কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা।

রুদ্রর চোখে পানি চলে আসে। তার বাবার মৃত্যু কোনো দুর্ঘটনা নয়, এটা ছিল পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র।

অধ্যায় ৭ : দ্বন্দ্ব

নাসির তাকে দলে ভেড়ানোর চেষ্টা করে।
“তুই বুদ্ধিমান, তোর জায়গা অন্ধকারের ভেতরেই। আলোতে তুই টিকতে পারবি না।”
রুদ্র কঠিন কণ্ঠে জবাব দেয়—
“আলো যত ক্ষুদ্রই হোক, অন্ধকারকে একদিন ভেদ করবেই।”

এরপর শুরু হয় ভয়াবহ লড়াই।

অধ্যায় ৮ : আগুনের রাত

গুদামে বন্দুক, ছুরি, লাঠি—সব দিয়ে ভয়ংকর সংঘর্ষ। রুদ্র একাই একদল মুখোশধারীর সাথে লড়াই করে।
অবশেষে নাসিরের সাথে তার মুখোমুখি দ্বন্দ্ব হয়।
তীব্র হাতাহাতি শেষে নাসির গুলিবিদ্ধ হয়। কিন্তু শেষ নিশ্বাসে বলেই যায়—
“রুদ্র… ছায়া সংঘের আসল নেতা আমি নই… সে হচ্ছে অন্ধকারের রাজা।”

অধ্যায় ৯ : অন্ধকারের রাজা

রুদ্র অবাক হয়। তাহলে এর চেয়েও ভয়ংকর কেউ আছে?
ড. সামাদের দেওয়া তথ্য ঘেঁটে রুদ্র জানতে পারে, এই রাজা আসলে বহুজাতিক কোম্পানির মালিক কর্নেল আরমান, যিনি একসময় আর্মির বড় কর্মকর্তা ছিলেন।
তার প্রভাব এতটাই বেশি যে তাকে সরাসরি ধরার সাহস কেউ করে না।

অধ্যায় ১০ : পরিকল্পনা

রুদ্র এবার একাই সিদ্ধান্ত নেয়। যদি আইন ব্যর্থ হয়, তবে সত্যের জন্য তাকে গোপন যুদ্ধ লড়তে হবে।
সে কর্নেল আরমানের ব্যবসা ধ্বংস করার জন্য পরিকল্পনা করে। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাক, গোপন লেনদেন প্রকাশ, আর সব তথ্য মিডিয়াতে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা নেয়।

অধ্যায় ১১ : চূড়ান্ত অভিযান

রাত্রে কর্নেল আরমানের ভিলা ঘিরে ফেলে রুদ্র। ভেতরে শতাধিক প্রহরী, আধুনিক অস্ত্র, সবকিছু।
কিন্তু রুদ্রর মাথা ঠান্ডা। সে একে একে সিকিউরিটি সিস্টেম ভেঙে ভেতরে ঢোকে।
অবশেষে মুখোমুখি হয় কর্নেল আরমানের সাথে।

আরমান হেসে বলে—
“তুই যদি আমার দলে আসিস, পুরো দেশকে আমরা নিয়ন্ত্রণ করব। টাকা, ক্ষমতা, সব তোর হবে।”
রুদ্র নির্ভীক কণ্ঠে উত্তর দেয়—
“যে ছায়া আমার বাবাকে মেরেছে, সে ছায়ার সাথে আমি কখনো হাত মেলাতে পারব না।”

অধ্যায় ১২ : সমাপ্তি

চূড়ান্ত লড়াইয়ে রুদ্র কর্নেল আরমানকে পরাস্ত করে এবং সমস্ত প্রমাণ বিশ্বমিডিয়ায় ছড়িয়ে দেয়।
ছায়া সংঘের ভেতরের বহু বড় নাম প্রকাশ পায়।
কিন্তু শেষের দিকে একটি চিঠি আসে অচেনা সূত্র থেকে—
“অন্ধকারের রাজাকে হারিয়েছো, কিন্তু অন্ধকার এখনো বেঁচে আছে।”

রুদ্র জানে, যুদ্ধ শেষ হয়নি।
কিন্তু তার শপথ অটুট—
আলো অন্ধকারকে একদিন নিশ্চয় হারাবে।

Comments

    Please login to post comment. Login