বাহিরে ঝুম বৃষ্টি ~ ভিতরে উত্তাপ সাথে শুনতে পাওয়া যাচ্ছে ২টি বাচ্চার আর্তনাদ। একটু বাঁচার আকুতি-মিনুতি। কিন্তু মানুষ তো আর নেই মানুষ তা বদলে বণে গেছে পশু। কে শুনিবে কার আর্তনাদ। দিন যায় - রাত যায় আর শুনতে পাওয়া যায় বাচ্চাগুলোর আর্তনাদ। তাহলে এই বাচ্চা গুলো কে …? আর তারাই বা কোথা থেকে আসলো …? তাদের পরিচয় কি …? কেনো শুনা যায় তাদের আর্তনাদ …? হাজারো প্রশ্ন কিন্তু জানা নেই কারো কোনো উওর। হঠাৎ একদিন নিশ্চুপ হয়ে যায় পরিবেশ। কোথাও কোনো শব্দ নেই। চারিদিকে শুনশান নিরব পরিবেশ। আজ সবই নিশ্চুপ। তাহলে তারা কারা ছিলো …? কোথায় থেকে এসে ছিলো …? কত সব প্রশ্ন কিন্তু জানা নেই কোনো উওর। আমি আমার পরিচয় টা দিয়ে নেই। আমি বিজয়। বাড়ি ব্রাক্ষণবাড়িয়া। বাবা- মার বড় সন্তান। আমি পড়াশোনা করি। জীবন এ চলতে ফিরতে আমরা অনেক কিছু দেখে থাকি যা থেকে কিছু জানা হয় আর কিছু অজানা রহস্য হয়ে থাকে। জীবন এ মানুষ চায় খুব সুন্দর করে স্বাধীন জীবন নিয়ে বেঁচে থাকতে ~ কিন্তু সমাজে অনেক মানুষ রূপী পশু আছে যারা মানুষ কে মানুষ হিসাবে বাঁচতে দেয় না। অবহেলা, অসম্মান, আর অবঙ্গা নিয়ে জন্ম হয় এক শিশুর। ঘর আলোয় ভরে যে শিশুর আসার কথা কিন্তু হয়তো আর জন্ম নেওয়াটাই ছিলো ভুল ।
সালটা ২০০৬।
মেঘলা আকাশ, কাদামাটি ভরা গ্রাম।
ছোট্ট একটি ঘর, টিনের চাল, পাশে শুকনো একটি জামরুল গাছ—সেই গাছের পাশেই ছিলো তাদের বাড়ি । বাবা নেই, মা নেই~ সেই কবে, হয়তো এই শহরের তাদের জীবন টা _ শুরুতে এমন ছিলো
না ।
তাদের এক সময় বাবা ছিলো মা ছিলো _ ছিলো এক বিশাল পরিবার। ছেলেটি ছোট থেকে বাবার অত্যাচার আর মায়ের কষ্ট দেখতে দেখতে বড় হতে থাকে। ছেলেটি ছিলো খুব নরম মেজাজ আর খুব সহজ সরল। জীবন টা তখন যেমনই কাটুক না কেনো অনেক ভালোই ছিলো। কিছু দিন পর তাদের ঘর আলো করে আসে এক মেয়ে সন্তান।ছেলেটির একটি বোন হয়। বাচ্চা টা মাশাল্লাহ দেখতে অনেক সুন্দর ছিলো। এইভাবে চলতে থাকে তাদের জীবন। সমাজে যখন শুখের দিন আসে মানুষের মনে তখন বিষ জ্বলে উঠে। শুরু হয় তাদের জীবন এর কালো দিন। ছেড়ে দেয় তাদের বাবা তাদের মা কে । ছেলেটি তখন কাউকে কিছু বুঝাতে পারে না ~ শুধু চোখ দিয়ে ঝরছে পানি। এই যেনো পানি না মনে হচ্ছে ঝড়ছে রক্ত। বোন টা ছিলো ছোট বুঝে না কিছু।তাদের বাবার স্বার্থ হাসিল হয় কিন্তু হয়ে যায় ছেলে মেয়ে ২ জন এতিম। সমাজ তাদের একটা নাম দিয়ে দিয়েছে তাদের বাবা ~মা নেই তারা এতিম।
তাদের দেখাশোনার দায়ভাব পরে গুটা পরিবার এর উপর। ছেলেটার বয়স তখন ৮ আর মেয়ে টার বয়স ৪। সবাই সবার মতো তাদের কে বুঝায়। শুরু হয় নতুন এক জীবন। যেখানে থাকবে হাজারো বাধা হাজারো মানুষ আর তাদের অনুমতির অপেক্ষা। তবে জীবন টা তখন ও অনেক ভালোই কাটতেছিলো। তাদের বাবা আবার বিয়ে করে। জীবন এ এটাই ছিলো তাদের কষ্ট~ না তাদের বাবার জীবন এর ভুল৷ যার জন্য সারাজীবন দিতে হবে তার মাসুল। কিন্তু কি ছিলো তার ভুল.? কেনো তাদের দিতে হবে তার মাসুল…? কথায় আছে মানুষ চিনা বড়ই কঠিন। কথাটা একদম সত্য ~ তা হারে হারে টের পাওয়া গেছে। চলতে থাকে রসের দিন। কত সুন্দর দিন, কত সুন্দর সময়। চারিদিকে কত আনন্দ। কিন্তু শান্তি নেই ছেলে- মেয়ে ২জন এর চোখে, মনে। কি করে থাকিবে …? না থাকাটাই তো স্বাভাবিক। যদিও মেয়ে টা তখনও তেমন বুঝে না কিছু ছেলেটা তো কিছু বুঝতো।
সমাজে ছেলেটিরে সবাই পছন্দ করতো। ছেলেটি পড়াশোনায় যেমনই থাকোক না কেনো খেলাদোলায় অনেক ভালো ছিলো। স্বপ্ন ছিলো জীবন এ বড় কিছু করবে। মনে ছিলো আশা। ওইদিকে সিদ্ধান্ত হয় তাদের বাড়ি ছাড়ার। বাড়ি ছাড়ার মানে বাড়ি থেকে বের করে দেয় নি তাদের কে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের বাবা-মায়ের কাছে। দেখানো হয় স্বপ্ন তাদের ~ দেওয়া হয় আশা নতুন জীবনের । জীবন টা চলতে থাকে জীবন এর মতো। হঠাৎ শুরু হয় একটা নতুন গল্প। গল্পের নতুন দিক। জীবন টা কত সুন্দর ছিলো তাদের। বাবা আছে এখন মা ও আছে কত সুন্দর । কিন্তু একটা কথা হয়তো জানেন বড় কোনো ঝড় আসার আগে সব কিছু সুন্দর একদম নিশ্চুপ শুনশান হয়ে যায়। তাহলে এখন কি এমন হতে যাচ্ছে …? পরিবেশ টা এতো সুন্দর হয়ে যাচ্ছে। তাদের জীবন এ এতো আনন্দ -সুখ চলে আসলো হঠাৎ কই থেকে …? তার মানে কি তাদের জীবন টা সত্যি সত্যি বদলে গেছে …? তার মানে তারা খুব ভালো জীবন পেয়ে গেলো …? কত সুন্দর জীবন কাটতে ছিলো। তারা তো খুশি জীবন টা হঠাৎ কত সুন্দর হয়ে গেলো। সাপ্তাহে একদিন ঘুরতে যাওয়া। শহরের স্কুলে ভর্তি হওয়া। টিফিন টাইমে বাড়িতে এসে মায়ের হাতে খাওয়া। কত সুন্দর জীবন তাদের। আমার কথা হলো তাহলে তাদের জীবন তো পুরা বদলে গেছে তাই না…? তাদের জীবন টা কত সুন্দর হয়ে গেলো। যে বাবা জীবনে সুন্দর ব্যবহার করে নি সেই বাবা সাপ্তাহে একদিন ঘুরতে নিয়ে যায়। বিষয় টা অনেক শুখের~তাই না …? শুরু হয় ক্লাস । চলতে থাকে দিন। হঠাৎ একদিন তারা পড়তে বসে ~ সন্ধার সময়। ঠাস- ঠাস শব্দ আর রাবারের স্কেল এর ভেঙ্গে যাওয়ার টুকরা। পরিবেশ টা কেমন নিরব হয়ে যায়। সব কিছু থমকে যায়। চোখ গুলো সাদা হয়ে যায়। যেনো এমন কিছু দেখলো যা আগে তারা কখনো দেখেনি। ওইদিক থেকে কান্নার সুর আসিতেছে আর একজনের চোখে রক্ত দেখা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে দীর্ঘ দিন জমে থাকা খুব। হঠাৎ এরকম পরিবর্তন সকলকে অন্য রকম করে তুলে। এটাই হয়তো ছিলো নতুন গল্পের শুরুটা। শুরু হয় গল্প। শুরু হয় জীবন এর নতুন ইতিহাস। যে ইতিহাস কি হবে তা কারো জানা ছিলো না। দিন যায় রাত যায় সময় কাটে না। চারিদিকে যে যার মতো জীবন কাটাচ্ছে। শহর অঞ্চল ~পরিবেশ টা তাদের জন্য নতুন ছিলো। দিন গুলো পরিবর্তন হতে থাকে। বদলে যায় সকলের রূপ। বাচ্চা গুলোকে নিয়ে শুরু হয় নতুন খেলা। যে খেলার শেষ টা কি হবে তা করো ছিলো না জানা। শুরু হয় এক নতুন অধ্যায়। আপনার মনে এখন নিশ্চয়ই প্রশ্ন আসতেছে সব কিছু যদি ঠিকঠাক হয়ে যায় তাহলে শুরু হয় কি করে গল্পের নতুন মোর…? সবার চোখে ছিলো তাদের নিয়ে আশা। বাচ্চা গুলো শহরে গেছে নিশ্চয়ই অনেক ভালো আছে। আমরাও জানি বাচ্চা গুলো অনেক ভালো আছে । তাহলে গল্পের নতুন মোর কি…? গল্পের নতুন মোর ….......
আমরা একটা জিনিস খেয়াল করছি গল্পে সব আছে কিন্তু একটাও ভিলেন পাইলাম না…? নাকি আপনারা মনে করছেন বাচ্চা গুলোর বাবাই ভিলেন…? গল্পে এক মানুষ রূপী জানো*য়ার এর সন্ধান মিলে। তাহলে কে সেই মানুষ রূপী জানো*য়ার …?
গল্পে আসি … আমরা আবার ফিরে আসি আগের জায়গায়। বাচ্চা গুলো শহরের পরিবেশে নতুন। তাদের যে তারিখ বাড়ি ছেড়ে বাবা- মার সাথে শহরে এসেছিলো তারিখ টা ছিলো ৩১ ডিসেম্বর। মানে কোনো এক বছরের শেষ দিন অন্য এক বছরের আগমনের সময়। পুরাতন বছর বিদায় এর সাথে তাদের ও বাড়ি থেকে বিদায় আর নতুন বছরের আগমনের সাথে তাদের আগমন ঘটে শহরে। সারা রাস্তা আনন্দ, আর গল্প করতে করতে চলে আসে। যেতে যেতে রাত হয়ে যায়। নতুন শহরে পা রেখে নতুন অনুভূতি। পাশে ছিলো বাবা যিনি পৃথিবীতে সন্তানের সবচেয়ে বিশ্বস্ত মানুষ। যাকে সব সন্তান তাদের জীবন এর রিয়েল হিরো মনে করে। চলতে থাকে চাকা এগিয়ে যায় গাড়ি ~ অজানা এক গন্তব্যের পথে। তারা ছিলো শহরে নতুন৷ জানা ছিলো না তাদের গন্তব্য। কোথায় হবে তাদের সেই নতুন ঠিকানা। এইভাবে চলতে চলতে পথে হঠাৎ এক সময় থমকে যায় গাড়ি । মনে অনেক প্রশ্ন তাহলে কি গন্তব্যে চলে আসলাম। অনেক চিন্তা— ভাবনা। কিন্তু সে কখনো তার বাবার সাথে ভয়ে কথা বলতে পারতো না। গাড়ি থেকে হঠাৎ শব্দ আসে নেমে আসো সবাই। চলে এসেছি আমাদের গন্তব্যে। সকলে নেমে পড়ি।বাচ্চা গুলো যেহেতু বাড়ি থেকে এসেছে তাই সাথে ছিলো কাপরের ব্যাগ। মন _টা তখনো বাচ্চাগুলো অনেক সুন্দর আর ভালো ছিলো। কারন তারা আগে শহরে আসে নি তেমন। তাদের জন্য নতুন পরিবেশ আর চারিদিকে ৩১ নাইট এর আয়োজন। চারিদিকে ধুমধাম শব্দ শহুরে পরিবেশ। তারা রুমে যায়। তারা বাসায় ছিলো ৫জন । বাবা-মা, আর তারা ৩ ভাই বোন। জীবন টা কত সুন্দর হয়ে যায় তাদের। ছেলেটি তার বাবার সাথে বাহিরে যায় আর বাসায় মা আর মেয়ে টি আর ছোট একটা বাচ্চা আছে। আজ তো ৩১ নাইট তাই বাহিরে গেছে কেক আনার জন্য। সবকিছু সেলিব্রেশন করে ঘুম দেয় নতুন পরিবেশের নতুন সকাল দেখার আশায়।
বাচ্চা গুলো স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হয়। চলতে থাকে জীবন,সুন্দর সময়।হঠাৎ ঘটে এক অন্য রকম ঘটনা। যা দেখে সকলের মাঝে অন্য রকম অনুভূতি সৃষ্টি হয়। সব কিছু থমকে যায়। চোখ গুলো সাদা হয়ে যায়। যেনো এমন কিছু দেখলো যা আগে তারা কখনো দেখেনি। ওইদিক থেকে কান্নার সুর আসিতেছে আর একজনের চোখে রক্ত দেখা যাচ্ছে। দেখা যাচ্ছে দীর্ঘ দিন জমে থাকা খুব।
দিনের পর দিন যায় চলতে থাকে বাচ্চাদের উপর অত্যাচার। তাদের দিয়ে সারাদিন ঘরের সব কাজ করানো হয়। পাশাপাশি অত্যাচার মারধর তো আছেই । সারাদিন স্কুলে ক্লাস করে এসে বাসার কাজ করতে হয়। করানো হয় বাসার সকল কাজ।
দিন যায় রাত যায় বাচ্চা গুলো তখনোও সব কিছু হাসি মুখে করতে থাকে । তাদের মনে তখনো সুন্দর জীবন এর স্বপ্ন থাকে। তাদের খাবার দেওয়া হতো প্লেট ভরতি করে। খেতে না পারলে থাকে মেলা শাস্তির ব্যবস্থা।
তাদের মুখে তখনো সেই হাসিটা ছিলো যা তাদের মুখে শুরু তে ছিলো। নতুন জীবন নতুন সব কিছু তাই তারা এইগুলোকে ও নতুন জীবন এর সঙ্গী মনে করে নিলো। দিনের পর দিন নানান অত্যাচার। কখনো ঘর মুছানো, কখনো আবার ঘর ঝাড়ু দেওয়া, কাপড় ধোয়া, থালা -বাসন ধুয়া, এমন কি মাঝে মাঝে এই বাচ্চা গুলোকে দিয়ে রান্না করানো হতো। অন্প বয়স ছেলে- মেয়ে গুলোর। কখনো না পারতো তাদের এই অত্যাচার এর প্রতিবাদ করতো না পারতো কাজ গুলো না করে থাকতো। এই ভাবে কয়েক মাস চলে যায়। ছেলে -মেয়ে গুলো অনুভব করতে পারে জীবন থেকে তারা কি হারালো আর জীবন এ কি অর্জন করলো। দিন যত যায় তত অত্যাচার বাড়তে থাকে। এমনি কি সেটা রাতেও চলতে থাকে। রাতে তাদের ঠিকঠাক মতো ঘুৃমাতে দেওয়া হতো না। ছেলে- মেয়ে গুলোর চোখে একটা অন্য রকম ভয় প্রবেশ করে গেলো। যার জন্য তারা সব অত্যাচার সহ্য করে তাদের মুখে থাকতো হাসি। কারন এতো দিনের তাদের আশার আলো পুরোই নিবে গেছিলো। রাত হলে কল্পনা করতো কেউ কি নাই …? যারা আমাদের এই জানো*য়ার এর হাত থেকে রক্ষা করতে পারে। তারা আল্লাহর কাছে প্রায় সময় কেঁদে কেঁদে আত্ননাধ করতো ~ হে আল্লাহ তুমি তো সব কিছু দেখো তাহলে আমাদের দিকে একটু তাকাও। এই রকম হাজারো আকুতি- মিনুতি করতো। একটু বেঁচে থাকার জন্য । প্রতিদিন, প্রতিবেলা, প্রতিরাতে তাদের সময় করে করে অত্যাচার করা হতো। তাদের দিয়ে মিথ্যা কথা বলাতো তাদের ফ্যামিলিতে কল দিয়ে। আর পাশেই ছিলো বাবা। কত সুন্দর দৃশ্য ছেলে - মেয়ে মাইর খেয়ে ফ্লুড়ে পড়ে আছে আর ওনী নিরব দর্শ্বক। তাকিয়ে শুধু তিনি সার্কাস দেখতেছেন। বিষয় টা অনেক সুন্দর তাই না…? ছেলে- মেয়ের নাকে মুখে রক্ত বয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তাদের অত্যাচার করা শেষ হয় নি। অত্যাচার আর সাথে নানান অপবাদ। ছেলেটা তখন ক্লাস ৭ এ পড়ে। আর মেয়ে টা ক্লাস ৩। তাদের কখনো টিফিন এর জন্য টাকা দেওয়া হতো না। পরীক্ষার সময় অনেক আকুতি - মিনুতি করে নিতে হতো পরীক্ষার ফিস। তাও অনেক অত্যাচার সহ্য করে। শাস্তি হিসাবে খাওয়ানো হতো মরিচের গুরা, কাচা মরিচ। আর মগ ভরতি পানি। খেতে পারলে সুন্দর না হয় আবারো আছে শাস্তি। আর এইগুলো খাওয়াটা মনে হয় সহজ তাই না…? এতো অত্যাচার আর শাস্তির মাঝেও তাদের মুখে ছিলো হাসি। ছোট এই বয়সে যেনো তারা বাস্তবতা শিখে যাচ্ছে। কাঠ পুড়ে হয় কয়লা আর মানুষ পুড়ে হয় আসল মানুষ । তারা প্রতিনিয়ত পুড়তে থাকে কষ্টের, অত্যাচারের আগুনে। অচেনা এই শহরে যে যার কাজ নিয়ে ব্যস্ত। কেউ আসে না কারো খুজ নিতে। কেউ বেঁচে আছে কি না কারো কোনো জানা নেই। এটাই আপনাদের প্রিয় শহর। যেখানে কেউ মরে পড়ে থাকলেও কারো চোখে পড়ে না। তারা থাকতো একটা ৩ তলা বেল্ডিং এর নিচে। কিছুদিন যায় তারপর তাদের এই বাসা বদলে ফেলে। উঠে নতুন আরেক বাসায়। তবে ওই বাসার ৩তলায় উঠে। ওইখানে পরিবেশ আরো নিরব আর শুনশান। মনের ভিতর তখন মনে হয় যেনো মনের ভিতর অন্য রকম অনুভূতি। তাদের মনে এক অজানা ভয় বাড়তে থাকে। সারাদিন কাজ করে কাটে তাদের দিন। একটু বাচার জন্য কত প্রচেষ্টা। একটু ভালো থাকার জন্য। সারাটাদিন কাজ করে গাধার মতো। সন্ধা হয় আর ভয় বাড়তে থাকে। সারাদিন কাজের পর সন্ধায় পড়তে বসে। শরীলে ক্লান্ত আর মনে ভয়।
হঠাৎ তাদের চোখ টা লেগে আসে ক্লান্ত শরীলে। হঠাৎ আচমকা এসে তার শরীলে লাথি পরে। চোখ ফিরিয়ে দেখে সেই রক্ত লাল চোখ। যেনো মনে হচ্ছে এই কোনো এক রূপকথার গল্পের ডাইনী। লাথি খেয়ে ছিটকে পরে ওইদিকে। কিন্তু কন্ঠ চুপ। চোখে শুধু ভয় দেখা যাচ্ছে আর দেখা যাচ্ছে এই ভয়ংকর জীবন থেকে মুক্তির আক্ষেপ।
বাচ্চার জন্য একটু আকুতি- মিনুতি কিন্তু তাদের কে ছাড় দেওয়া হয় না। শুরু হয় নির্মম অত্যাচার। কাঠ দিয়ে পায়ের হাটুতে বাড়ি দেওয়া আর হয় দেওয়া হয় মাথায় বাড়ি। রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে ছেলেটা। পাশে তার ছোট বোন তার চোখে যেনো ভাইয়ের কষ্টে রক্ত ঝড়ছে। তাকেও ছাড় দেওয়া হয় না। কাচি দিয়ে তার মায়ে ছিদ্র করে ফেলা হয়। আর তার চিৎকার এ পুরো শহর কেপে উঠে। কিন্তু পাশে আসার মতো কেউ ছিলো না। আঘাত করা হয় হাতে। চুলের মুঠি দরে ঘুড়িয়ে ফালানো হয়। অচেতন হয়ে যায় বাচ্চা ২ টা। অচেতন রক্তাত্ব অবস্থায় পরে থাকে বাচ্চা দুটি।
পরের দিন সকালে উঠে গোসল করে বাচ্চা দুটো আবার সেই আগের মতো হয়ে যায়। যেনো কাল রাতে কিছুই হয় নি। শরীলে এতো আঘাতে চিহ্ন অথচ মুখে হাসি। আর শরীলে যেনো অফুরন্ত শক্তি কাজ করার জন্য। এই অসুস্থ আঘাতপ্রাপ্ত শরীল নিয়ে কাজ গুলো শেষ করে বাচ্চা গুলো স্কুলে চলে যায়। সারাদিন স্কুল করে বিকালে আতঙ্ক নিয়ে বাসায় আসে। সব্বোক্ষণ তাদের মনে এক অন্য রকম আতঙ্ক কাজ করে। এক সন্ধায় বৃষ্টির মাঝে তাদের কে বাড়ান্ধায় রাখা হয়। বাচ্চা গুলো বৃষ্টিতে বিজে শীতে কাপতে থাকে। কিন্তু কারো মনে কোনো মায়া কাজ করে না। সবাই তা তাকিয়ে দেখে কিন্তু কারো মুখে কোনো কথা নেই। যেনো তারা চোখ থেকেও অন্ধ। এরকম অনেক দিন তাদের প্রতিনিয়ম অত্যাচার করা হয় হতো। দেওয়া হতো হাজারো শাস্তি। এই যেনো জীবন নয় যেনো কোনো এক রিমান্ডের কারখানা। যেভাবে হাজারো মাইর হবে কিন্তু কোনো কথা হবে না। কত শত রাত তাদের ঘুম নেই চোখে ৷ বাচ্চা গুলোর চোখে কালি জমে গেছে। আর আর৷ সারা শরীল পানি জমে গেছে।
এই ভাবে চলতে থাকে দিন বাড়তে থাকতে অত্যাচার।
এক বৃষ্টি বেজা অন্ধকার রাত...
বাহিরে ঝুম বৃষ্টি ~ ভিতরে উত্তাপ সাথে শুনতে পাওয়া যাচ্ছে ২টি বাচ্চার আত্ননাথ। একটু বাঁচার আকুতি-মিনুতি। কিন্তু মানুষ তো আর নেই মানুষ তা বদলে বণে গেছে পশু। কে শুনিবে কার আত্ননাধ। ওইদিন বাচ্চা গুলোকে অনেক বেশি অত্যাচার করা হয়। আর শুনা যায় তাদের আত্ননাধ। বাচ্চার জন্য চেষ্টা। সারারাত অত্যাচার আর শান্তির পর সকাল হয়। এই সকাল টা একটু অন্য রকম মনে হয়েছিলো। আসলে কি এমন হলে চলেছে এই সকালে…? যার জন্য আজ সকাল টা একটু অন্য রকম লাগতেছ। এতো অত্যাচার আর মারধর এর পরেও কেনো বাচ্চা গুলোর মনে আজ অন্য রকম অনুভূতি দেখা যাচ্ছে …? এটা কিসের ইঙ্গিত দেয় তাহলে…? তাহলে তাদের সাথে আজ আরো অনেক খারাপ কিছু হতে চলেছে নাকি তাদের জীবনে ভালো কিছু আসতে চলেছে…? অনেক প্রশ্ন ~চলেন এখন শুনি সেই সকালে কি হলো তা।
কুয়াশা ভেজা হালকা মৃদ্যু -মৃদ্যু বাতাস। আর চারিদিকে কোকিলের ডাক। আজ সকাল টা একটু অন্য রকম অনুভূতি নিয়ে আসে তাদের মাঝে। কিন্তু রাতে তাদের উপর চরম অত্যাচার করা হয় যার জন্য তাদের সারা শরীলে আঘাত এর চিহ্ন। আর শুধু কাল রাত কেনো দীর্ঘ অনেক দিন যাবং তাদের অত্যাচার আর শাস্তি দেওয়া হয় যার জন্য শরীলে এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে তাদের আঘাতের চিহৃ নেই।
ছেলেটা ঘরের সব কাজ করতে থাকে একা একা। কারন তাদের আজ বাড়ি থেকে বের হওয়া নিষেধ ছিলো। বাহিরে গেলে তাদের এই আঘাতের চিহ্ন মানুষ দেখবে তাই তাদের বাসা থেকে বের হওয়া বন্ধ। তাদের মনে কোনো আশা ছিলো না বাঁচার। এখন তারা শুধু দিন গনছে কোনো এক রূপকথার গল্পের মতো কেউ এসে তাদের বাঁচাবে। কিন্তু এইগুলো তো আসলে গল্পেয় মানায় বাস্তবে তো এটা কখনো সম্ভব না।
কিন্তু আপনাদের মনে এখন প্রশ্ন আসবে বাচ্চা গুলোর তো মা ছিলো না তাহলে এই মা আসলো কই থেকে। আর এই কি গল্পের ভিলেন …? এই কি সেই রূপকথার ডাইনী…?
বাচ্চা গুলোর মধ্যে থেকে মেয়ে টা খুব সাহস করে একা একা ঘরে না জানিয়ে বের হয়ে যায় স্কুলে যাওয়ার জন্য। বাসায় ছিলো ছেলে আর সেই তাদের মা । ছেলেটা অনবড়ত কাজ করতে থাকে। বাচ্চার জন্য খাবার তৈরি, থালা- বাসন গুলো ধুয়া, গড় ঘুসানো, আর ঘড় ঝাড়ু দিয়ে তা মুছে ফেলা। তখন তার মা খেয়াল করে মেয়ে টা বাসায় নেই। তখন ছেলেটাকে জিজ্ঞেস করে তার বোনের কথা। মেয়ে টা তো ছেলেটাকেও কিছু বলে যায় নি তাই সে জানে না। এই জন্য সে উওর দেয় সে দেখে নি বা জানে না। এই জন্য তাকে প্রচন্ড জুড়ে থাপ্পর মারে। চোখ দিয়ে যেনো পানি না তার রক্ত আসতেছে। আর মনে মনে বলতাছে আল্লাহ আমাদের কি কখনো ভালো সময় আসবে না …?🥲 তার কিছু সময় পর স্কুল থেকে খবর আসে তাদের মা কে স্কুলে যাওয়ার জন্য। তারপর তিনি স্কুল এ চলে যায়। বাসায় ছিলো সে আর তাদের ছোট ভাই৷
আপনাদের শুরুতে বলা হইছিলো বাচ্চা গুলো ২জন একটা ছেলে আরেকটা মেয়ে। তাদের এই বাচ্চা টা আবার কে আবার প্রথম থেকে তাদের ভাই বলতাছি। তাহলে এই বাচ্চা কে। এ হলো এদের সৎ ভাই। কিন্তু বাচ্চা গুলো কখনো তাকে সৎ ভাই এর চোখে দেখে নি। সব সময় আপন ভাই এর মতো আদর করতো। বাচ্চারে নিজেদের কোলে রেখে ঘুম পাড়াইতো। বাচ্চার জন্য যাবতীয় সব কিছু তারা করতো। দরতে গেলে বাচ্চাটারে তারাই পালে।
ব্যাপার টা কেমন না ২ টা বাচ্চা আরেলটা বাচ্চারে দেখে শুনে সব কিছু করে। …...
মেয়ে টা স্কুল এ গিয়েছিলো স্কুল থেকে খোজ আসে তাদের মা কে যাওয়ার জন্য । তারপর তিনি চলে যান স্কুলে। কিন্তু মেয়ে টাকে তার সাথে আসতে দেয় না। কারন ~~
এর আগেই একটা ম্যাম মেয়ে টা থেকে তাদের সাথে ঘটে যাওয়া দীর্ঘদিন এর কাহিনি গুলো বলেন। ম্যাম সহ পুরো স্কুল সেই ঘএনা টি শুনে। তখন তাদের বাবাকে অফিস থেকে কল করে আনা হয়। আর আবারো তাদের মা কে ডাকা হয় স্কুলে।
এতো সময় বাচ্চা গুলোর "মা"-" মা"-"মা" বলতেছি একজনকে ৷ আসলে ইনি তাদের মা না তিনি ছিলেন সৎ মা। তিনিই এই গল্পের ভিলেন। যিনি বাচ্চাদের উপর অত্যাচার আর শাস্তি দিতেন কারনে - অকারনে।
তারপর এই মহিলা স্কুলে যায়। এলাকায় ছড়ে যায় এই ঘটনা। এলাকায় অন্য রকম চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। সকলের ভিতরের মানুষ টা আবার সজাগ হয়। সকলে প্রতিবাদ করে। পুরো এলাকায় জানা জানি হয়ে যায় উনি যে বাচ্চা গুলোর সৎ মা। আর এটাও ছড়ে যায় বাচ্চা গুলোর উপর ঘটে যাওয়া অত্যাচার। তখন কেউ একজন ৯৯৯ এ কল করে পুলিশ আসার জন্য। তখনো ছেলেটি কিছু জানে না। কারন সে বাসয় ছিলো। মনের ভিতর কেমন যানি করতেছে । কি হলো এখনে তার বোন আসছে না। তারপর হঠাৎ তাদের বাসা ওয়ালার নাম্বারে কল আসে ছেলেটাকে যাওয়ার জন্য। ছেলেটা কোনো রকম একটা গেন্জি পরে চলে যায় ছোট বাচ্চাটারে কোলে নিয়ে স্কুলে। ওই খানে গিয়ে সে যা দেখে এতে সে কষ্ট পাওয়ার বদলে মনে হয় তাদের চোখে একটা অন্য রকম শান্তি দেখা যাচ্ছে। আর তখনো সে বুঝতে পারে নি কি হতে চলেছে। কিন্তু মনে একটা অন্য রকম অনুভূতি আসতেছে। কিন্তু মনে একটা অন্য রকম অনুভূতি আসতেছে। মনে হচ্ছে তাদের জীবন এ হয়তো কোনো এক পরিবর্তন হতে চলতেছে। তখন পুলিশ এসে তাদের নিয়ে যেতে। তখন রাস্তায় সেই মহিলার উপর গণপিটুনির শিকার হতে নেয়। সকল এলাকা বাসি ক্ষিপ্ত হয়ে যায় সেই মানুষ রূপী জানো*য়ার এর উপর। তখন পুলিশ সেই ডাইনি আর বাচ্চা গুলো আর তাদের বাবা কে নিয়ে মডেল থানায় চলে যায়। আর বাচ্চা গুলো গ্রামের বাড়িতে কল করা হয়। গ্রাম থেকে তাদের কলে আসে বাচ্চা গুলোর জেঠা,জেঠি, ফুফো আর চাচাতো ভাই।
পুলিশ ওই ডাইনিকে হাজতে ভরে দেয়। আর তখনো বাচ্চা গুলো এই ডাইনির জন্য কান্না করে পুলিশ কে বলে। তিনি নিরঅপরাধ। উনার কোনো দুশ নেই। সব দুশ আমাদের আমরা কথা শুনি নি তাই শাসন করছে। তাদের বাবা তখনো সেই ডাইনির জন্য বাচ্চা গুলোকে গালিগালাজ করে।
একজন বাবা হচ্ছে একটা সন্তানের সবচেয়ে ভরসার জায়গা। যেখানে সন্তান সবচেয়ে বেশি নিরাপদ থাকে। কিন্তু এই কেমন বাবা যার সামনে সন্তান কে অত্যাচার করা হতো কিন্তু কোনো প্রতিবাদ হতো না। উল্টো তিনি বাচ্চা গুলোকে কথা শুনাইতো। তারা তাদের বাবার ভয়ে এই মহিলার পক্ষে কথা বলে। তারপর মহিলার নামে সরকার বাদি হয়ে শিশু নির্যাতন এর মামলা হয়। যার জন্য ২ দিন জেল খটতে হয়। তারপর ছেলে মেয়ে গুলোকে দিয়ে দেওয়া হয় তাদের জেঠা-জেঠির সাথে গ্রামের বাড়িতে। জীবনে এতো কষ্টের পর অনেক টা শান্তি অনুভব করতে পারে। তাদের কাছে তখন বাবা ছিলো না কিন্তু বট গাছের মতো একটা জেঠা আছে যে তাদের দেখাশুনার দায়ভার নেয়। ততাদের কাছে মা ছিলো না কিন্তু মা এর সমতুল্য জেঠী-মা ছিলো।
জীবন এর মানে টা তখন বদলে যায়। শহরের মতো গ্রামেও ছড়িয়ে পরে তাদের সাথে হওয়া এই অত্যাচার এর ঘটনা। এলাকার সকলের চোখে পানি বাচ্চা গুলোর গল্প শুনে। বাচ্চা গুলোর আত্ননাধ এর কথা শুনে। একটা মানুষ কখনো পাষাণ হলে এরকম কাজ করতে পারে …? আর তাদের কি দুশ ছিলো …? কেনো করা হলো তাদের অত্যাচার…? আমাদের সমাজে এমন হাজারো বাচ্চা আছে যারা প্রতিনিয়ত এমন অত্যাচারের শিকার হয়। যাদের আত্ননাধ কেউ শুনে না। কিন্তু আল্লাহর ইচ্ছে আর বাচ্চাটার শেষ চেষ্টার কারনে হয়তো আজ তারা কষ্টের জীবন ত্যাগ করে শুখের দেখা পেলো। বাচ্চা গুলো একটা সুস্থ ও সুন্দর পরিবার পেলো যেখানে সবাই আছে নেই শুধু তাদের বাবা -মা।.....
আত্ননাধের আগুনে পুড়ে যায় মন,
নিজেকে বুঝতে না পেরে হারায় জন।
📙🖋️ জাহিদুল ইসলাম বিজয় 📙
[ ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা ]
120
View
Comments
-
Forid Miha 2 months ago
Apner golpo ta onek emotional 🥹🥹 onek Valo hoice
-
Jahidul Islam 2 months ago
সবাই কমেন্ট করে জানাবেন কেমন হলো।