২৪ বছর বয়সী সুলতান মুহাম্মাদ। আক্রমণ করেছেন খ্রীস্টান-বিশ্বের দম্ভ বাইজেন্টাইন রাজধানী কনস্টাইনটিনোপল। হাদিসে উল্লেখিত ভবিষ্যতবাণী পূর্ন করতে তার ভীষন তাড়া।
সেনাবাহিনী পূর্নোদ্দমে সর্বোতভাবে যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু তার নৌবাহিনীর জাহাজগুলো গোল্ডেন হর্ন ভেদ করে কনস্টাইনটিনোপল শহরের সীমানার কাছাকাছি যেতে পারছে না। পানির নিচ থেকে শিকলের আঘাত আর গ্রিক ফায়ারে হতভম্ভ তার বাহিনী। ব্যাপক প্রাণহানি হল। কয়েকদিন কেটে গেল। সবাই সুলতানকে নৌ-হামলার আশা ত্যাগ করতে বলছিল । কিন্তু সুলতান ভাবলেন– তিনি অসম্ভবের সীমা দেখে ছাড়বেন। কোনো কিছু প্রকৃতপক্ষেই অজেয়, অসম্ভব কি না– তা তার জানার ইচ্ছা । তিনি উপায় ভাবতে লাগলেন । এক পর্যায়ে পেয়ে গেলেন। কিন্তু বড় বড় সালার, সেনাপতি, আমির, উযির কেউই তার এই মতে সাঁয় দিলেন না। কিন্তু তিনি সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করলেন। সেনাদের আদেশ দিলেন, সারারাত গাছ কেটে সমুদ্রের পাশের পাহাড়ি উপত্যকায় ফেলতে এবং সেগুলোর উপর যত বেশি সম্ভব চর্বি-তেল ঢেলে দিতে। এরপর ৮০ টি জাহাজ সমুদ্র তীরে এনে সেই তেলচর্বিময় গাছগুলোর উপর উঠানো হলো, হাজার হাজার সেনা টানতে লাগল জাহাজ– সুলতানের নির্দেশ । বাইজেন্টাইনরা সারারাত শুধু দেখছিল পাহাড়ি পথে আলোর ছোটাছুটি। ফলাফল পরিস্কার হলো পরের সকালে। সূর্যের আলো ফুটতেই বাইজেন্টাইনরা দেখল শহরের খুব কাছেই সমুদ্রে ভুতুরে রূপ নিয়ে উসমানীদের ৮০ টি যুদ্ধ জাহাজ দাঁড়িয়ে। কোন দিক দিয়ে এলো জাহাজ?! কেউ ভাবতেই পারছে না– সমুদ্র পথের বেষ্টনী এড়িয়ে পাহাড়ী উপত্যকা পারি দিয়ে এসেছে গোলা-বারুদপূর্ণ ৮০ টি উসমানী জাহাজ! দেখতে না দেখতেই তারা ব্যাপক হামলার মুখে পড়ে গেল। খুব অল্প সময়েই এবার ধ্বংস হয়ে গেল বাইজেন্টাইনদের নৌশক্ত। হাজার বছর ধরে কেউ যেটা ভাবে নি, তরুন সুলতান তাই করে দেখিয়েছিলেন সেদিন। ডাঙ্গায় জাহাজ চালিয়েছিলেন তিনি।