তুমি এসেছো হেসে, ভোরের মতো কম্পমান,
আলোর অর্ধেক রেখে গেছো — আরেক অর্ধেককে আমি আঁকড়ে নিই।
তোমার হাতে আমার ছায়া আছে—হৃদয়ের বইয়ে ভাঁজ হয়ে রাখা,
কিন্তু তোমার ছোঁয়া যেন নিজেকে হারিয়ে দেয় অন্য কোনো আঙিনায়।
তুমি আমার ছিলে—সূর্যের কাঁধে বসা এক ফোঁটা আঁচ,
তবু সেই আঁচ কখনোই পুড়ে আমার নাম বললো না।
রবীন্দ্রসোনার সকালে তুমি ছিলে কণ্ঠের মধ্যে, গান হয়ে,
রাতের শ্বাসে তুমি জেগে থাকা একটা অদৃশ্য কাঁপন হয়ে রইলে—
আমি চেয়েছি তোমাকে পাতায় চিহ্ন করে রাখতে, বুকে গাছের মতো,
কিন্তু তুমি বাগানের পাখি হয়ে ওড়ো, বাসা নয়—সুন্দর পালক ছাড়া।
তুমি আমার হয়েই কাছে ছিলে—তবু আমার হলে না,
যেনো নদীর ধারে দাঁড়িয়ে দেখতে পাচ্ছি তোমার প্রতিফল,
হাত বাড়াইলে পানিই পায়, তোমার মুঠোটা ধরতে পারে না।
তুমি আমার ছিলে—কিন্তু অন্য কেউয়েই তুমি হাসলে, তোমার হাসি খেয়ে নিল অন্য আকাশ।
আমি রেখে দিলাম তোমার জন্য সব ছোট ছোট জায়গা—চেয়ারের কোণ, কফির কাপ,
যেসব জায়গায় তুমি হেসে বসলে, আমার শব্দগুলো জমে গিয়েছিল বন্ধ করে রাখা খামে।
এখনও মাঝে মাঝে তোমার খোঁজে বাজে সেই পুরোনো ঘণ্টা,
তবু জানি—ঘড়ি কাঁটা ফিরে আসে না, তুমি আমার হলে না।
কিন্তু দুঃখটা মিষ্টি—তেরোশ রাতে আমি তোমায় বলি,
তুমি ঘুমাও বা উড়ো, তোমার নাম আমার রক্তে গোপন এক ফুল।