ডাকসু ও জাকসুর ল্যান্ডস্লাইড ফলাফল দেখে জামায়াত মেবি দেশের রাজনৈতিক ট্রেন্ড মানে চলতি হাওয়াই চেঞ্জ করে দিতে চাচ্ছে। তারা পরিকল্পনা করছে পূর্বসূরীদের একাত্তরের বিপরীতার্থক ভূমিকার জন্য এই জেনারেশন ক্ষমা চাইবে। এর পূর্বরাগ হিসেবেই ভিপি সাদিক কায়েম ও তার সভাসদেরা রায়েরবাজার বধ্যভূমিতে গিয়ে প্রার্থনা করেছে। দেশের গেল ৫৪ বছরের ইতিহাসে যা প্রথম।
ইতোমধ্যে বিভিন্ন ফোরামে তারা বলেছে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের ভিত্তিতে বাংলাদেশ নামের যে চুক্তি বলবৎ আছে এর অনুবর্তী থেকেই ওরা রাজনীতি করছে। বাকি রইল জাতীয়তাবাদী রাইটিস্ট ধর্মভিত্তিক শাসনব্যবস্থা। ক্ষমতায় গিয়ে যদি ইউএই ও কাতারের মতো শাসনব্যবস্থা জারি করে বসে তাহলে জামায়াতের অপোনেন্টদের সেক্যুলার, লেফটিস্ট, মডারেট ও সেন্ট্রিস্ট রাজনীতি বিরাট হোচট খাবে। তবে আ'ফগানিস্তান বানাতে চাইলে সম্পূর্ণ ভিন্ন ফল ফলতে পারে।
জামায়াতের বড় লিডারদের সন্তানেরা দেশের প্রচলিত ধারার মাদ্রাসায় পড়ে না। তারা বেশিরভাগই পশ্চিমা শিক্ষায় শিক্ষিত। এবং দেশের বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল ও মেডিকেল কলেজের শীর্ষ শিক্ষার্থীরা এখন শিবিরে অনুরক্ত। Mawdudism has always been subservient to America.
শুনছি জামায়াত দেশব্যাপী হিন্দু সদস্যদেরও রিক্রুট করছে। এরমধ্যে জামায়াত যদি যাকে তাকে না'স্তিক ট্যাগ না দেয়, মোরাল পুলিশিং শুরু না করে, নারীদের পোশাক নিয়ে কড়াকড়ি আরোপ বাদ দেয়, দেশে হাজার বছর ধরে প্রচলিত শিল্প-সংস্কৃতি ও ভাস্কর্যের মূলোৎপাটন করতে প্রয়াসী না হয়, প্রাইমারি এডুকেশনে আর্ট, মিউজিক ও ড্যান্স লার্নিং এর বিরোধিতা না করে, কেবলমাত্র ধর্মচর্চা না করে বিজ্ঞানচর্চা ও গবেষণাকে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়-তাহলে অন্যদের রাজনীতি করা টাফ হয়ে যাবে।
রাজনীতি মানে নব নব ন্যারেটিভ তৈরি করা।
ঔদার্য ও সহনশীলতা রপ্ত করে জামায়াত যদি আধুনিকতার পথে হাঁটে -তবে ওদের বিরুদ্ধে নবতর রাজনৈতিক ন্যারেটিভ হাজির করবার জায়গা কমে যাবে। এর অন্যথা হলে ধারণা করি বছর না ঘুরতেই পুনর্বার জুলাই বিপ্লবের মুখোমুখি হতে হবে। বিএনপি মোটেও ছেড়ে কথা বলবে না। এতে আর কারো কিছু না হোক -ছবিতে দেখানো খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের ভোগান্তি ভীষণভাবেই বাড়বে। যাদের কাছে ধর্ম মানে পেটে দু মুঠো অন্ন জোগাতে সুস্থির কাজের নিশ্চয়তা।
লেখক: সংবাদিক
১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫