
অজস্র চোখ দেখে—ঘুম ভেঙে যায়,
অজস্র চোখের মাঝে—আড়ষ্ট চেতনায়!
ঐসব চোখ—পলক ফেলে না, ক্লান্ত হয় না
ঐসব চোখ—অশ্রু চেনে না, হাসতে জানে না
নক্ষত্র নিভে যায়, হাজার বছর জ্বলে জ্বলে
পৃথিবী ভুলে যায়, কেন সে বেঁচে আছে
তবু ওরা জেগে থাকে, রাত্রিদিন অফুরান—
সদা সতর্ক পাহারায়, ক্ষমাহীন দৃঢ়তায়
ওরা লিখে রাখে—
আমার চোখের তারায় নিদারুণ শূন্যতায়
ভেসে ওঠা—অনুচ্চারিত প্রতিটি শব্দের নাম
(ওরা লিখে রাখে—)
আমার ম্রিয়মান অস্তিত্বের অপার আকাঙ্ক্ষায়
বেড়ে ওঠা—গোপন দীর্ঘশ্বাসের নিঃশব্দ গান
ওরা লিখে রাখে—সব!
ভোর হবার আগেই এইসব লেখা, শিকারের বীভৎস ছবি
ওরা সেঁটে দেয়—
নাগরিক দেয়ালে দেয়ালে, হলুদ-পত্রিকার প্রথম পাতায়
ছুঁড়ে ফেলে—
ভার্চুয়াল ভাগাড়ে ভাগাড়ে, ক্ষুধাক্রান্ত দানবের নৃশংস মেলায়
আরো আরো চোখ, অসংখ্য-অজস্র চোখ—তাকিয়ে থাকে
আমাকে চিরে ফেলে; যেন আহত হরিণ কোনো,
আমাকে ছিঁড়ে ফেলে; যেন নিষিদ্ধ বই কোনো,
ওরা দেখে ফেলে—আমার রক্ত-মাংসের রং
ওরা শুনে ফেলে—আমার হৃদয়ের গহীনতম স্পন্দন
ওরা জেনে যায়—আমার রন্ধ্রে রন্ধ্রে বয়ে চলা, নিজস্ব নদীর ঠিকানা
ওরা জেনে যায়—সব!
নক্ষত্র নিভে যায়, হাজার বছর জ্বলে জ্বলে
পৃথিবী ভুলে যায়, কেন সে বেঁচে আছে
তবু ওরা জেগে থাকে, রাত্রিদিন অফুরান—
সদা সতর্ক পাহারায়, ক্ষমাহীন দৃঢ়তায়…….
যা দেখা যায়, যা দেখা যায় না, ওরা দেখে সব!
যা জানা যায়, যা জানা যায় না, ওরা জানে সব!
আর আমি—দেখি শুধু চোখ,
আমি জানি শুধু অজস্র-অগনিত অপলক চোখ
সেইসব অযাচিত অনির্বান দৃষ্টির ভিড়—
আমার শিরদাঁড়া বেয়ে নামে, যেন আদিম ঘৃণার স্রোত
আমার স্নায়ুতে আঘাত হানে, যেন আশাহীন ঝড়ের রাত
অতঃপর—আমার অবাধ্য হাত;
তার বিষণ্ণ আঙুল দেয় গেঁথে—আমারই বিরান দুটি চোখে!