যেকালে আমি জানতামই না
মানুষে-মানুষ আলাদা করে জুড়তে হয়।
মেঘের থেকে কণা এনে বললে তখন-
চ্ তাহলে বন্ধু পাতাই, জল বিনিময়।
কিবা প্রথম নতুন নতুন করতে হয় বলতে পারো,
বন্ধু হলে মানুষগুলো সব কী করে।
তখন সময় সকাল বিকেল স্কুলে আর গরুরপালে,
ওরাই সাথী আমায় সদা থাকতো ঘিরে,
সেই যে আমার ছাগল ছানা,
আবু ভাইয়ের ডাংগুলি কিংবা খাঁজার দোকান।
বন্ধুতো নয় তারা, সাক্ষী রেখে
অন্তত কেউ দেয়নি কোন বিনিময়ের দান।
ধুর বোকা, বন্ধু হলো জানা-শোনা;
ঐ যে যেমন আমার কথা শুনবি তুই,
তোর কী গল্প, হাসি-কান্না সুখ-অসুখ
জানবো আমি যা আছে সব অনুভূতিই।
আমার কোন গল্প তো নেই,
যেমন থাকে রাজার প্রজার দৈত দানব ভূতের
আমার দুপুর বিল ঝাঁপিয়ে
বিকেল সন্ধে বদন কোটে, গল্প তবে কিসের!
সকাল বেলা স্কুল পালানো কিংবা ধরো
রাত্রি হলেই লুকিয়ে পড়া আউট বই
খুব সাধারন দশটি ছেলে যা যা করে
দিন পেরুলে এ সবেতে গল্প থাকে কই?
মেঘের মেয়ে সেই যে গেলো ছোটবেলায় ফেলে,
দিন চলে যায় দিনের মত
আমি শুধু সেই রয়ে যাই আগেরমত
স্থির অবিচল, অবিবেচক অবিরত।
যেকালে আমি জানতে শিখি
মানুষগুলো আপন বড়, ভিন্নতা শুধুই আবরণ।
হাতের মুঠোয় শিউলি দিয়ে বললে তখন-
সবার আগে নিজেকে চেনা খুব প্রয়োজন-
এখন বল্ কী কী প্রিয়, কী হতে চাস্
কী বলবি যখন কেউ প্রশ্নগুলো করে
কোন ফুলটা পছন্দ খুব, পেটের ক্ষুধায়
মাথার ভেতর কোন খাবারটা ঘোরে
রংয়ের ভেতর কোনটা প্রিয় কিংবা প্রিয় স্থান
নাম শুনলেই মনের নাচন পারলে ছুটে যাবি,
যখন কাউকে চিনতে যাবি মনে রাখিস
জানলে পরে ভালোলাগা তখন তাবে চিনতে পাবি।
তোমার হয়তো শিউলি প্রিয় আর আমার
নাম নাজানা বুনো ফুলেও বিস্ময় অপার,
কোন ফুলে গন্ধ ভালো কোনটার কেমন বাহার
কোন কিছুই নাইতো জানা আমার।
মাঝে মাঝে ভাবনা আসে
আমি বোধহয় মানুষ নই, মানুষ হলে স্বপ্ন থাকে
মানুষ হলে মাথার ভেতর চিন্তা থাকে,
ছুটে যাবার প্রিয় কোন যায়গা থাকে।
মানুষরা সব অপমানে লজ্জা পায়,
গভীর কোন অনুরাগে মানুষ কাঁদে,
মানুষ হলে গোপন কথা-ব্যাথা থাকে,
মানুষরা সব মানুষ পেলে মায়ায় বাঁধে।
কিন্তু আমার কিছুইতো নেই,
দুঃখ সুখ রাগ অভিমান আদর সোহাগ
এখন এসে বলবে কি- চল তাহলে মানুষ পড়ি,
সূর্য জলে আকাশ যখন থাকে ভরা।
মানুষ মানে বিশাল পুস্তক, পড়ে চলছি সে আদি গ্রন্থ, এখন সময় বিশ্বাস করা।