ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও সাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
ল্যাবএইড হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা চৌধুরী মেহের-ই-খোদা গণমাধ্যমে জানান, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বিকেল ৫টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
তিনি আরও জানান, ৩ অক্টোবর হৃদরোগে আক্রান্ত হলে অধ্যাপক মনজুরুল ইসলামকে ল্যাবএইডে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার হৃৎপিণ্ডে দুটি রিং পরানো হয়েছিল। কিন্তু ৫ অক্টোবর সন্ধ্যায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে প্রথমে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস ব্যবস্থায় (ভেন্টিলেশন) এবং পরে জীবনরক্ষাকারী ব্যবস্থায় (লাইফ সাপোর্ট) রাখা হয়।
এদিকে সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের মরদেহ বারডেম হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়েছে। শনিবার (১১ অক্টোবর) সকাল ১১টায় সর্বসাধারণের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। জোহরের নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা শেষে তাকে মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ১৯৫১ সালের ১৮ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর করার পর কানাডার কুইন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে দীর্ঘকাল শিক্ষকতা করার পর তিনি ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে মনোনীত হন।
তিনি একাধারে প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক ও সমালোচক ছিলেন। তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে 'থাকা না থাকার গল্প', 'কাঁচ ভাঙ্গা রাতের গল্প', 'অন্ধকার ও আলো দেখার গল্প', 'আধখানা মানুষ', 'দিনরাত্রিগুলি', 'আজগুবি রাত', 'তিন পর্বের জীবন', এবং 'নন্দনতত্ত্ব'। বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৯৬ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং ২০১৮ সালে একুশে পদক লাভ করেন।