পোস্টস

চিন্তা

নগরে সাধু :: এই ইনারাই আমাদের আশেপাশে থাকা নন এনিমি!

৩ জুন ২০২৪

নীলসাধু

বন্ধু পাওয়া যায় সেই ছেলেবেলায়, স্কুল কলেজেই। প্রাণের বন্ধু। তারপর আর না।

সারা জীবনে আর না। জীবন জুড়ে যারা থাকে তারা কেউ কারো বন্ধু নয়। তারা দু'রকমের। এনিমি আর নন এনিমি। বাকি জীবন এই নন এনিমিদের কে বন্ধু বলে ধরে নিতে হয়।

কথাগুলো শিবরাম চক্রবর্তীর।

বিচিত্র জীবন ছিল তার। তিনি রাজনীতি করেছেন, জেল খেটেছেন, রাস্তায় কাগজ ফেরি করেছেন, ফুটপাথে রাত্রিবাস করেছেন, সাংবাদিকতা করেছেন, আজীবন মেস-জীবন যাপন করেছেন।

 

ফেসবুকসহ- সামাজিক মাধ্যমে আমাদের বন্ধু তালিকায় থাকা, কাজে কর্মে পরিচিত হওয়া, এর মাধ্যমে তাঁর মাধ্যমে পরিচিত হওয়াদের কেউই আসলে আমাদের বন্ধু নয়, এরা আমাদের ক্ষতি করে না, বা করতে পারে না (পারলে ক্ষতিও করে অনেকে)। 

এরাই সেই নন এনিমি যাদের আমরা বন্ধু ভাবি!

 

আমার একটা পর্যবেক্ষন বলি- ঢাকায় যারা শিল্প সাহিত্য চলচ্চিত্র নাটক বই নিয়ে নানা সৃজনশীল কাজ করেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগই ছোট মন-মানসিকতার। তারা উদার নন একেকবারেই। খেয়াল করলে দেখবেন বছর-জুড়ে এরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে একে অন্যের পেছনে লেগে থাকায় আনন্দ পায়। দেখে মনে হয় এদের কেউই চায় না আরেকজন সফল হোক। এদের কেউই চায় না আরেকজন ভালো কিছু করুক। সব সে নিজেই করবে, সেই নিজেই হবে রাজার রাজা। ভাব দেখে মনে হয় যেন জগতের সকল প্রতিভা শুধু তার একারই আছে!! 

ছোট থেকে বড়, মাঝারি থেকে বাহারি কম তো দেখলাম না। এরা ভালো মানুষ, অতি প্রগতিশীলতার মুখোশ পরে কাটিয়ে দিচ্ছে এক জীবন। 

অদ্ভুত। 

এই এরাই আবার কতো কতো ভালো আলাপ জানে তা শুনলে আপনার দিল ঠাণ্ডা হয়ে যাবে কিন্তু কাজে নামলেই বুঝবেন এরা আসলে নিরেট স্বার্থান্ধ। 

নিজের স্বার্থ ছাড়া এরা হাসেও না, মুখ কঠিন করে বসে থাকে।

 তারা সবাই আবার কথায় কথায় দোষ দেয় তাদের পূর্ববর্তী জেনারেশনের কবি সাহিত্যিক শিল্পীদের। অথচ তারা নিজেরাই মন খুলে কারো সাথে মিশতে পারে না, ভালো কিছু এপ্রিশিয়েট করতে পারে না। নতুনদের জন্য উৎসাহ অনুপ্রেরণা জাতীয় কিছু করা তো আরও অনেক পরের কথা। 

নিজের আখের গোছানোর বাইরে এরা কেউ এক পা ফেলে না।

 

এই ইনারাই হবেন আমাদের আগামী দিনের পলায়নপর বুদ্ধিজীবী। এই ইনারাই আমাদের আশেপাশে থাকা নন এনিমি! 

এই ইনারাই আসলে আমাদের এই শহরের ময়লা, দুর্গন্ধ।

 

নীলসাধু