দক্ষিণ কোরিয়ার বেস্টসেলিং লেখক বেক সে-হি মাত্র ৩৫ বছর বয়সে মারা গেছেন। নিউইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। তবে তার মৃত্যুর কোনো কারণ জানানো হয়নি।
বেক সে-হি দীর্ঘদিন ধরে মানসিক অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করেছেন। তিনি তার একাধিক বইয়ে এই বিষয়ে লিখেছেন। তার প্রথম বই ‘আই ওয়ান্ট টু ডাই বাট আই ওয়ান্ট টু ইট তেওকবোক্কি’। এই স্মৃতিকথাটি ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয়। বইটি ২০২২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত হয়। কোরিয়ান ভাষা থেকে এটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন অ্যান্টন হুর।
এই বইতে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে তার বিষণ্নতা সম্পর্কে কথপোকথন সংকলন করা হয়েছে। বইটি মানসিক অসুস্থতার বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক কথপোকথনকে স্বাভাবিক করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার এই লেখক বেশ প্রশংসা পান।
ইংরেজিতে অনূদিত হওয়ার পর বইটি আন্তর্জাতিকভাবে বেস্টসেলার হয়ে ওঠে। বিশ্বব্যাপী এটি দশ লাখের বেশি বিক্রি হয়েছে এবং ২৫টি দেশে অনুবাদ হয়েছে।গত বছর এই বইয়ের সিক্যুয়েল ‘আই ওয়ান্ট টু ডাই বাট আই স্টিল ওয়ান্ট টু ইট তেওকবোক্কি’ প্রকাশিত হয়। এটিও প্রথম বইয়ের মত একই ফরম্যাটে লেখা হয়েছে।
এদিকে ২০২০ সালে কে-বুক ট্রেন্ডস এর কাছে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেক বলেছেন, ‘আমি চেয়েছিলাম, যারা আমার মতো মানসিক অসুস্থতার সঙ্গে লড়াই করছেন এবং বেঁচে আছেন তারা যেন বইটি পড়ে স্বস্তি পান যে তারা একা নন। আমি আশা করেছিলাম, যারা আমার মতো তারা যেন তাদের ভেতরের অন্ধকার এবং আবেগের বিষয়গুলো নিয়ে লজ্জিত না হন বা উপেক্ষা না করেন। এটা তুচ্ছ মনে হতে পারে কিন্তু জীবন সবার জন্য কঠিন এবং শেষ পর্যন্ত আপনাকেই নিজের যত্ন নিতে হবে।’
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) কোরিয়ান অঙ্গ দান সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বেক তার হৃদপিণ্ড, কিডনি, লিভার ইত্যাদি দান করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি ৫ জনের জীবন বাঁচিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বেক সে-হি ১৯৯০ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি সৃজনশীল লেখালেখিতে পড়াশোনা করেছেন এবং পাঁচ বছর ধরে একটি প্রকাশনীতে কাজ করেছেন। তিনি এক দশক ধরে ডিসথাইমিয়া রোগের চিকিৎসা নিয়েছেন। এটি দীর্ঘস্থায়ী ডিপ্রেসনের একটি ধরন। এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাধারণ মানুষের তুলনায় আত্মহত্যার ঝুঁকি বেশি থাকে।