Posts

গল্প

বড় মামার বিয়ে।

October 20, 2025

Shafin pro

165
View

(__বড় মামার বিয়ে প্রথম খন্ড।---------)বাবা এখনো আসতেছে না। মা রাগে ফায়ার আমরা ভাই বোন মিলে আবার রাস্তায় গেলাম বাবা আসতেছি কিনা। কিছুক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থেকে তারপর চেয়ে দেখলাম বাবা আসতেছে না। ঘরের ভিতরে ঢুকতে দুস করে একটি প্লেটের শব্দ। বোনটি বলল ভাইয়া তুই যাস নি তোর মাথায় ভরবে। আমি বোনটি কে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে। মা রেগে প্লেট ভেঙ্গে ফেলেছে। তারপরও সাহস নিয়ে ঘরের ভিতরে ঢুকলাম।মা বেশি বকাবকি করতেছে তার ভাই বোনের বিয়ে হলে সকালে রেডি হয়ে থাকতো। তখন বলতো আজকে আর কোর্টে যাওয়ার দরকার নেই। কি দেখিস তাড়াতাড়ি যা লঞ্চের সময় হয়ে গিয়েছে আমাকে বলল। আমি ভয়ে ঘর থেকে এক দৌড়ে  রাস্তা দিয়ে গিযে সরাসরি কোটের দিকে চোখ উঠলাম কোটে চলে গেল। গিয়ে নিজেই বার লাইব্রেরী যে  ঢুকলাম। দেখি বাবার চেয়ে আর খালি পড়ে রয়েছে। আমি পাশে উকিল সাহেবকে জিজ্ঞেস করলাম। সে বলল তোমার বাবা তো কিছুদিন আগে রিকশা নিয়ে বাসায় চলে গেছে। আমি আবার দৌড়ে বাসার দিকে চলে আসতে ছিলাম। গিয়ে দেখি সবাই রিক্সা করে কাপড়চোপড় ব্যাগ ব্যান্ডেজ নিয়ে সবাই লঞ্চের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছি। প্রথম ভাবলাম আমি মনে হয় মাইর খাব। আসতেই বাবায় ধমক দিয়ে বললেন। তুই আবার কোথায় গিয়েছিলি। আমি বললাম তোমাকে খুঁজতে গিয়েছিলাম লাইব্রেরীতে। সে বলল ইডিয়েট কোথাকার। এতদূর দৌড়ে গিয়েছিস আবার দৌড়ে আসছিস কষ্ট হয় নাই। আমি বললাম মা আমাকে পাঠিয়েছিল। রাগের মুহূর্তে। এ বলে বাবা  বাসার ভিতরে চলে গেল। আমি আমার বোনটিক জিজ্ঞেস করলাম মা কোথায়। বোনটি বলল মা বোরকা পরতেছে। এর ভিতরে দেখলাম বাবা-মা দুজনে একসাথে বের হয়ে আসলো। আমরা রিকশায় উঠে গেলাম বড় ভাই মেজো ভাই থেকে গেল। আমরা এবার অনেকদিন নানা বাড়িতে থাকব যেহেতু বড় মামার বিয়ে। আমার দুইটি বোন আগেই ওরা মামার সাথে চলে গেছে। আমরা সবাই রিক্সয় উঠে গেলাম। লঞ্চ ঘাটের উদ্দেশ্য। লঞ্চঘাটে দাঁড়াতে কুলি মজুমদাররা বাবার সামনে রিকশা এসে হাজির। বাবাকে কুলীন সরদার মোচুওযলা আগে থেকেই বাবাকে চিনতো কারণ আমরা যখন বাড়ি থেকে ধান পাট নিয়ে আসতাম। তখন বাবার সাথেমাক্সিমাম সময় দর কষাকুশি নিয়ে তর্ক লগদোহলো। মাচুয়ালা কাকু লোকটি দেখতে খুবই সুন্দর ছিল। আমি তখন ক্লাস ফাইভে পড়তাম। কিন্তু ফাইভে পড়ল আমি এদিকে রুটঘাট ম্যাক্সিম চিনি। মোচুওয়ালা সরদার কাকু সব সময় সে উর্দু তে কথা বলতো। এখন কচু ওয়ালা আর সাঙ্গু পাঙ্গু ডাক দিল। ভর উকিল সাহেবের ব্যাগ পত্র লঞ্চ উঠিয়ে দে। বাবা সব সময় তেরি লোক ছিল। ভালোই ভালোই খারাপের সাথে খারাপ। সে বলল না উঠানো লাগবেনা পরে। আগে লাগবে সেটা বল। তবে লঞ্চ ঘাটের কুলিরা সব সময় চালাকি চালাতো এরা প্রথমে অনুনয়-বি নির্ণয় করে ওঠায় পরে একটা মোটা অংক দাবি করে। যেহেতু আমার বাবা ইয়ার ফোর্স এ চাকরি করে পরে উকিল হয়েছে। তাইদের কান্ড কারখানা সবই ভালো করে জানে আমার বাবা। তারপরও বলে না যে এতদিন। তারা বলে উকিল সাহেব আপনার ভালো মনে হয় তাই দিয়েন। তখন বাবা একটি দর ঠিক করে দাওয়াতে সেই দরই সবাই করে মালামাল গুলো লঞ্চে উঠিয়ে দিল লঞ্চের কেবিনের ভিতরে। আমরা সবাই হেঁটে হেটে বাবার পিছনে পিছনে যাচ্ছিলাম। আমার ছোট বোনটি বলল । বাবা। বাবা অমনি দাঁড়িয়ে গেলে। নিজের কাছে তখন যে কি যে মজা লাগছিল। কারণ লঞ্চে ফ্রিতে নামার আগে  দুই পাশ দিয়ে বিভিন্ন রকমের দোকানের ভর পুর। কোন দোকানে ফল কোন দোকানে রুটি কোন দোকানে মিষ্টি কোন দোকানে খেজুর কোন দোকানে জুস কোন দোকানে পানি এগুলো কিনে নিতে আমার যে কি ভালো লাগতো। বাবা যখন ঢাকা থেকে বাসায় ফিরতো তখন সব সময় এগুলো কিনে নিয়ে বাসায় যেত। আর আমরা ভাই বোন সবাই মিলেই সকালবেলা ফজরের পরপরই সব আমরা হাগু করে ছিড়ে ফেলে ছিঁড়ে খেতে শুরু করতাম। এখন বাবায় সব দোকান থেকে কিছু কিছু নেওয়া শুরু করলো। নিতে নিতে দুই ব্যাগ ভরে গেল। আমরা দুই ভাই বোন খুবই খুশি। লঞ্চে এসে লাঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে দেখি সেটা খুব উচু করে সিঁড়িতে উঠেন। আমি কেশ পরা ছিলাম বিধায় দ্রুত উঠে গেলাম। বোনটি আমার উঠতে পারতেছে না। ও বলল ভাইয়া। আমি আবার দৌড়ে নেমে গেলাম। এর ভিতরে বাবা ওকে ধরে উঠিয়ে নিল। মাও সাথে সাথে উঠে গেল। আমার পকেটে অনেকগুলো টাকা ছিল খুলছা টাকাগুলো মামায় দিয়ে গিয়েছিল। আমি লঞ্চে উঠে একটু চানাচুর ভাজা কিনলাম। দুজনেই খেলাম। লঞ্চ ছাড়তে শুরু করলো। আমরা লঞ্চের সামনের  রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছি। প্রথমে লঞ্চের সিঁড়ি কি উঠালো। তারপর বড় বড় মোটা দড়ি যাকে বলে কাটি গুলো লঞ্চের ভিতরে টেনে টেনে উঠে ফেলল। এদিকে লঞ্চের সাইরেন বাজদেছে। লঞ্চটি আস্তে আস্তে ধীরে ধীরে পিছনের দিকে চলে যাচ্ছে। এখন লসটি নদীর মাঝখানে। কিছুক্ষণ পরেই দেখলাম কিছু লোক আবার নৌকো দিয়ে তাড়াহুড়া করে লঞ্চের দিকে আসছে। নৌকাওয়ালা খুব তাড়াতাড়ি লঞ্চ টির  দিকে  চালিয়ে আসতেছে। এখন নৌকা দিয়ে সবাই লাঞ্চ উঠে গেল। এদিকে আবার লঞ্চের ভিতর যে রুটি ওয়ালা ছিল চানাচুরওয়ালা ছিল আইসক্রিম আলা ছিল  বাদামওয়ালা ছিল। সবাই এখন লাফিয়ে লাফিয়ে নৌকাতে নেমে গেল। লঞ্চটি তার স্পিড আস্তে আস্তে বেড়ে চলল। লঞ্চের দুইপাশ থেকে ধীরে ধীরে পানি ফুফাত করে ধীরে ধীরে ফুলে উঠতে শুরু করল। সদা সাবান পানির ফেনার মত। লঞ্চটি একের পর এক ঘাট দিতে শুরু করল বিভিন্ন গ্রামে। লঞ্চটি পাঁচটি ঘাট দেওয়ার পর। মামা বাড়ির ঘাটে লঞ্চ টি ঘাট দেয়।( এখানে খন্ড প্রথম শেষ করে ফেলছি।)

Comments

    Please login to post comment. Login

  • Shafin pro 1 month ago

    সবাইকে এক সময় মামা বাড়ি যাওয়ার জন্য খুবই আকুতি মিনতি করতো