চিঠিটা আজও ভিজে আছে
মাহিন আজ অনেক বছর পর নিজের গ্রামের বাড়িতে ফিরে এসেছে।
দশ বছর ধরে বিদেশে ছিল — শহরের ব্যস্ততা, কাজের চাপ আর একাকিত্বে সে ভুলেই গিয়েছিল এই বাড়িটা এখনও তার নামে আছে।
পুরোনো কাঠের দরজাটা ঠেলে ঢুকতেই ধুলো আর স্যাঁতস্যাঁতে গন্ধে মনে হলো, সময় এখানে থেমে আছে।
হঠাৎ চোখে পড়ল তার পুরোনো টেবিলটা— ঠিক আগের জায়গাতেই।
টেবিলের ড্রয়ার খুলতেই পেল একখানা পুরোনো খাম।
খামের ওপর লেখা—
> “মাহিন, তুমি একদিন ফিরে আসবেই…”
মাহিনের বুকটা হঠাৎ কেঁপে উঠল।
লেখাটা ঠিক সেই হাতের লেখা— মীমের।
যে মীম, পাঁচ বছর আগে নদীতে ডুবে মারা গিয়েছিল!
কাঁপা হাতে খামটা খুলল সে। ভেতরে একটি কাগজ, এখনো ভেজা, যেন এখনই কেউ লিখে রেখে গেছে।
চিঠিতে শুধু কয়েকটি লাইন—
> “তুমি ফিরে আসবে জানতাম… কিন্তু আমি আর থাকব না।
আমি অপেক্ষা করব, ঠিক নদীর ধারে…
যেদিন বৃষ্টি পড়বে, আমায় খুঁজে পাবে।”
চিঠির নিচে শুকিয়ে যাওয়া ফুলের পাপড়ি।
হঠাৎ ঘরের জানালায় বজ্রপাতের আলো পড়ল—
আর সেই আলোয় মাহিন দেখল… জানালার ওপারে কেউ দাঁড়িয়ে আছে।
সেই মুখটা মীমের মতোই।
ভেজা চুলে, হাসছে।
তারপরেই ঘরে হাওয়ার ঝাপটা— চিঠিটা উড়ে জানালা দিয়ে বাইরে চলে গেল,
আর মাহিন শুনল এক ফিসফিস আওয়াজ—
> “তুমি দেরি করে ফেলেছ…”