" আপাদমস্তক বিলীন হয়ে অস্তিত্বখান অদৃশ্য হচ্ছে অবলীলায় , হেসে হেসে মরে যাই প্রতিক্ষণ অথচ নিজ মস্তিষ্কও কনফিউজড ! শীত , গ্রীষ্ম , বর্ষা হতে হেমন্ত-শরৎ; মাসের পর মাস গত হয় , আম-জাম পাঁকে শেষে ধোঁয়া ওঠা ভাপা পিঠার সময় আসে তবুও নির্জীব আমি নিষ্প্রাণ হয়ে চেয়ে চেয়ে দেখি । রাত-দিন ভুলে গেছি কবেই সেখানে বছর-মাস তো বিলাসিতা কেবল । পিছু হটে পিচ্ছিল খেয়ে আকস্মিক মৃত্যু হয়েছে বহুবার । না , না - অমৃত পান করি নি আর পানের ইচ্ছেও নেই । এ মৃত্যু - মৃত্যুর পূর্বে মৃত্যু ! ভয়াবহ যন্ত্রণাদায়ক !
আমি মরে গিয়ে বাঁচতে চাই , আমি কোটি পাপে লাঞ্ছিত ! আর পাপ না চাই , আমি শান্তি চাই । বারবার নিত্যদিন না হারিয়ে আমি চিরতরে হারাতে চাই । বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টির রহস্য উদ্ঘাটন করো অথচ বোকারা আদম সৃষ্টির রহস্যই জানো নাই । আমি ও তথাকথিত সেই সৃষ্টির সেরা জীবের দলেই , তবে আমি বোকা নই । "
একজন বোকা নিজেকে চালাক বলে দাবি করার পূর্বে যে সমস্ত গুনগাণ করা প্রয়োজন তার সম্পূর্ণ বিপরীত টা করেও তিনি চালাক বনে যাচ্ছেন । যে ব্যক্তি পাপ করার পরে মোছন এর সময়টুকু প্রার্থনা না করে মৃত্যু চায় তাও আবার দীর্ঘায়ুতে পাপ করবে বা করতে পারে এই ভয়ে তিনি আর যাই হোক সুস্থ হতে পারেন না । লোকে বলে নিজের ভালো পাগলেও বোঝে তবে এ কোন দলের ?
বটতলায় জাহিদ মিয়ার সাময়িক চা দোকানের রঙ চা আমার ভীষণ প্রিয় । বাড়ির পাশে দোকানের সুবাধে কাজের ছুটিতে বাড়িতে আসলেই প্রতি বিকেলে ছুটে যাই সে আন্ডাররেটেড পুদিনা পাতা , এলাচ ,দারচিনি , অথেন্টিক সিলেট এর ক্যামিক্যাল মুক্ত পাতা দিয়ে তৈরি চা এর স্বাদ নিতে । উপরোক্ত যাবতীয় কথোপকথন বিড়বিড় করছিলেন রোকন চাচা যা আমি ২ কাপ চা এর বিনিময়ে মনোযোগের সাথেই গ্রহণ করেছি । বাড়ির পাশেই বাড়ি । কি সব অদ্ভুত জিনিস বিড়বিড় করতেই থাকেন সারাক্ষণ । গাংচড়ের বাড়ি সমেত পুরো পরিবার হারানো রোকন চাচা এক কালে ছিলেন নামীদামী ধর্ম বিসারদ । শুনেছি, শত শত গ্রামবাসী গৃহপালিত পশু-পাখির বিনিময়ে তার কাছে তালিমও গ্রহণ করেছেন । গ্রহণকারীরা কারা বা উনারা কেমন আছেন জানা নাই তবে এ সর্বেসর্বা হারানো এই মানুষটা ভালো নেই । আমাকে চিনেন কিনা বলতে পারছি না কিন্তু মানসিক ভারসাম্যহীন রোকন চাচা আমাকে দেখলেই কেমন অদ্ভুত আচরণ শুরু করে , মুখভঙ্গিমা বদলে যায় । একবার তো তেড়েই এসেছিলেন বটের শিকড় দিয়ে আমাকে ফাঁসিতে ঝুলাবে বলে । কি অদ্ভুত !
To be continued……..