উইলিয়াম শেক্সপিয়ার ছিলেন একজন ইংরেজ নাট্যকার, কবি এবং অভিনেতা।তাকে ইংরেজি ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ লেখক এবং বিশ্বের সেরা নাট্যকার হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি ইংল্যান্ডের জাতীয় কবি। তাকে ‘বার্ড অব অ্যাভন’ বা ‘অ্যাভনের চারণকবি' বলা হয়। মৃত্যুর ৪শ বছর পরেও মহান এই সাহিত্যিক নারী না পুরুষ ছিলেন তা নিয়ে রয়ে গেছে নানা প্রশ্ন।
২০১৯ সালে এলিজাবেথ উইঙ্কলার নামের ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের একজন তরুণ সাংবাদিক এবং সাহিত্য সমালোচক ‘ওয়াজ শেক্সপিয়ার অ্যা ওম্যান?’ শিরোনামে আটলান্টিক ম্যাগাজিনে একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেছিলেন।সেখানে তিনি বিভিন্ন তথ্য উপাত্তের মাধ্যমে পরীক্ষা করে দেখাতে চেয়েছিলেন, শেক্সপিয়ার আসলেই নারী ছিলেন কি না।
ধারণা করা হয়, ষোড়শ শতাব্দীতে জন্মগ্রহণকারী এমিলিয়া বাসানো ল্যানিয়ার নামের ইতালিয় বংশোদ্ভূত একজন ইংরেজ কবিই মূলত শেক্সপিয়ার ছদ্মনামে বিখ্যাতসব সাহিত্য রচনা করেছিলেন। আর এলিজাবেথ উইঙ্কলার তার প্রবন্ধে এই বিষয়টি তুলে ধরতে চেয়েছিলেন।
২০১৮ সালে লন্ডনের গ্লোব থিয়েটারে নাট্যকার মর্গান লয়েড ম্যালকমের নাটক ‘এমিলিয়া’ মঞ্চস্থ হয়েছিল।ওই নাটকেও দাবি করা হয়, মূলত এমিলিয়া বাসানোই শেক্সপিয়ার ছদ্মনামে লেখালেখি করেছিলেন।
তবে আটলান্টিক ম্যাগাজিনে ওই প্রবন্ধ প্রকাশের ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ট্রোলের শিকার হন এলিজাবেথ উইঙ্কলার।শিক্ষাবিদ এবং সমালোচকরা তাকে একজন ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিক বলে অভিহিত করেছেন। তাকে হলোকাস্ট অস্বীকারকারীদের সঙ্গেও তুলনা করা হয়েছে।
উইঙ্কলার ভাবতে লাগলেন, শেক্সপিয়ারের ব্যাপারে কেন তারা এত আবেগপ্রবণ? এর ফলে শেক্সপিয়ার আসলেই একজন পুরুষের আড়ালে নারী সাহিত্যিক কিনা তাআরও বিশদভাবে অনুসন্ধান করার সিদ্ধান্ত নেন তরুণ এই সাহিত্য সমালোচক। অবশেষে তিনি এই বিষয়ে একটি বই লেখার সিদ্ধান্ত নেন। বইটির নাম রাখা হয় ‘শেক্সপিয়ার ওয়াজ অ্যা ওম্যান এন্ড আদার হেরেসিস’। এটি ২০২৩ সালের মে মাসে প্রকাশিত হয়।
এলিজাবেথ উইঙ্কলার শেক্সপিয়ারের জীবনের বিভিন্ন ঘটনা বর্ণনা করে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন, আসলেই অ্যাভনের চারণকবি নারী ছিলেন কি না।তিনি জানার চেষ্টা করেছেন সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত একজন মানুষ কীভাবে আদালতের আচার-
ব্যবহার, রাজনীতি, ইউরোপীয় ভাষা, আইনি প্রক্রিয়া এবং ইতালীয় ভূগোল সম্পর্কে এত গভীর জ্ঞান অর্জন করল? তিনি শেক্সপিয়ার শিল্পের উৎসের সন্ধান করেছেন এবং সমসাময়িক রেফারেন্সগুলোর একটি সম্পূর্ণ তালিকা বিশ্লেষণ করেছেন।এই বিষয়গুলো শেক্সপিয়ারের আসল পরিচয়ের ইঙ্গিত দিতে পারে, আবার নাও পারে।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান